বিএনপি রাজশাহীতে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে-লিটন

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যাহত ও বিএনপি’র দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগ। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে রাজশাহী নগরীর কুমারপাড়াস্থ দলীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন লিখিত বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, বিএনপি আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে সমাবেশ করবে। এই সমাবেশকে ঘিরে তারা ইতিমধ্যেই সরকারের বিরুদ্ধে নানা রকম ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, যখনই বাংলাদেশে নির্বাচন এগিয়ে আসে ঠিক তখনই বিএনপি নামক সংগঠনটি সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

বিএনপি ইতিপূর্বে রাজশাহীর মাদ্রাসা মাঠে সমাবেশ করেছিলো। সেই সমাবেশ থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করেন। এই হুমকির প্রতিবাদে আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর রাজনৈতিক ভাবে প্রতিবাদ কর্মসূচী গ্রহন করি এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দায়ের করি, যা বর্তমানে চলমান।

মেয়র আরো বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, বিএনপি এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ড গুলোতে কর্মী সভার নামে সরকারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও অসত্য তথ্য উপস্থাপনসহ প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে অশোভন বক্তব্য প্রদান করে রাজশাহীর শান্তিপূর্ণ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে চায়। তাদের বিভিন্ন উস্কানী মূলক বক্তব্য রাজশাহীর স্বাভাবিক আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করে তারা হীন রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়।

এরই ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ্য করলাম যে, গত ২৯ নভেম্বর ১৬ নং ওয়ার্ডের এক কর্মী সভায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু যে উস্কানী মূলক বক্তব্য প্রদান করে কাল্পনিক হত্যাকান্ডের তথ্য উপস্থাপন করেছেন তার মাধ্যমে মৌলবাদী ও জঙ্গীবাদী গোষ্ঠিকে উস্কে দিয়ে তারা আবারো রাজশাহীতে জঙ্গীবাদ কায়েম করতে চায়, জনাব মিনু’র বক্তব্যে তা সুস্পষ্ট ভাবে ফুটে উঠেছে।

মেয়র লিটন তার বক্তেব্যে আরো বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি’র সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি’র নেতাদের বক্তব্য শুনে মনে হচ্ছে দেশে কোন সরকার নেই। তারা বক্তব্য দিয়ে বলছে রাজশাহীতে সেমিফাইনাল খেলা এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় ফাইনাল খেলা হবে। তাদের এহেন দূরভিসন্ধি মূলক বক্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে যে, তারা রাজপথের আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত ও নাশকতার রাজনীতি বেছে নিয়েছে। তারা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এর ধারাবাহিকতায় আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করলাম তারা রাজশাহীর বিভিন্ন ছাত্রবাস গুলোতে বিএনপি-জামায়াতের চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের সমাবেশ ঘটাচ্ছে। বিএনপি’র সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত ২২ নভেম্বর তানোর ডাক বাংলো মাঠে বোমা মজুদ করার সময় ককটেল বোমা বিস্ফোরন হয় এবং সেখান থেকে অনেকগুলো ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়।

তিনি বলেনৈ, আমরা বিএনপি’র সমাবেশ গুলোতে তাদের মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে বক্তব্য প্রদান করেছেন তাতে দেশকে অস্থিতিশীল করার একটি ইঙ্গিত বহন করে। বিএনপি মহাসচিবের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার হয়েছে যে, তারা দেশে কোন গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিত রাজনৈতিক স্বাভাবিক সরকার ক্ষমতায় থাকুক তারা তা চায় না। এর মধ্যে দিয়ে প্রমান হয়েছে যে, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় তারা অগণতান্ত্রিক পন্থায় ও প্রভু শক্তির সহায়তায় দেশের ক্ষমতা দখল করে আবারো দেশকে জঙ্গীবাদী রাষ্ট্রে কায়েম করতে চায়।

বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকার গণতন্ত্রের চর্চায় বিশ্বাস করে এবং বিশ্বাস করে বলেই বিরোধী দলের সমাবেশে কোন প্রকার বাধা প্রদান না করে বিএনপিকে সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি এই সমাবেশ গুলোকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতারা নানাবিধ কাল্পনিক অভিযোগ উত্থাপন করছে যে, তাদের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

ইউক্রেন যুদ্ধে যখন গোটা বিশ্বের অর্থনীতি হুমকির মুখে তখনও আমাদের বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে, ঠিক তখনই ৭১এর পরাজিত শক্তিরা, ৭৫এর কুশীলবরা তথা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মূল পরিকল্পনাকারী তারেক রহমান লন্ডনে বসে প্রভু শক্তিদের খুশী করার জন্য বাংলাদেশে একটি অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি করার পাঁয়তারা করছে।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে রাজশাহী সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের অভয়ারণ্যে পরিনত হয়েছিলো, তাদের আমলে বাংলা ভাই এর নেতৃত্বে জেএমবি সৃষ্টি করে রাজশাহীর বাগমারা, রানীনগর, আত্রাই সহ বৃহত্তর রাজশাহীতে জঙ্গীবাদের রাজত্ব কায়েম করেছিলো। এদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন রাজশাহী তৎকালীন মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, সাবেক মন্ত্রী ব্যারিষ্টার আমিনুল হক, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নাদিম মোস্তফা, আলমগীর কবির গং, এরাই আবার আন্দোলনের নামে বোমা মেরে পুলিশ কর্মী সিদ্ধার্থকে হত্যা করেছিলো।

আজকে এই সকল সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের মদদ দাতাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা শুনে আমরা বিস্মিত হই, আমরা গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সকল কর্মসূচীতে বিশ্বাসী। সকল রাজনৈতিক দল তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচী মিছিল, সমাবেশ করবে- এটাই রাজনৈতিক চর্চা। রাজশাহীতে বিএনপি সমাবেশ করবে এতে আমাদের কোন বাধা থাকবে না, তবে রাজনৈতিক কর্মসূচী ও সমাবেশের নামে রাষ্ট্র ও সরকার বিরোধী কোন কর্মকান্ড তথা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে নিয়ে কোন অশোভন মন্তব্য এবং রাজশাহীর জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর তা বরদাশত করবে না। রাজশাহীর সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি যদি এইরূপ কোন অশুভ তৎপরতা ও অপরাজনীতি করতে চায়, তাহলে রাজপথে থেকে রাজনৈতিকভাবে এর সমুচিত জবাব দিবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগর।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য বেগম আকতার জাহান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ্ আলী কামাল, সহ-সভাপতি ও রাজশাহী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মীর ইকবাল, সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইশতিয়াক আহমেদ লিমনসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

Next Post

মোহনপুরে হেরোইন সেবনের অপরাধে যুবকের জেল

বৃহস্পতি ডিসে. ১ , ২০২২
মোহনপুর প্রতিনিধিঃ  রাজশাহীর মোহনপুরে হেরোইন সেবন করার অপরাধে রনি আহমেদ (২২) নামে এক যুবককে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে মোহনপুর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির অফিসের সামনে হেরোইন সেবনের সময় তাকে আটক করে মোহনপুর থানা পুলিশ। সাজাপ্রাপ্ত রনি বাকশিমইল গ্রামের মোঃ আব্দুল হান্নান এর ছেলে। […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links