বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

নিজস্ব প্রতিবেদক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল খ.ম সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিন ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। পৈশাচিক নির্যাতনে ৩ ছাত্রী গুরুতর আহত হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিভবকরা। এ ঘটনায় নাচোলে অভিভাবকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় বইছে।

ওই স্কুলের ৯ম শ্রেণীর আহত ছাত্রীদের অভিভাবক সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার নাচোল খ.ম সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ৯ম ও ১০ম শ্রেণীর বেশ ক’জন ছাত্রী ল্যাট্রিন থেকে ক্লাশে ফিরলে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম ওই ছাত্রীদেরকে শ্রেণীকক্ষে একেএকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীর পিতা বিপ্লব জানান, প্রধান শিক্ষক তার মেয়েকে নির্যাতনের সময় হাই বেঞ্চের সাথে গলা চেপে ধরে পিটাতে থাকেন। শারিরীক নির্যাতনে আহত হলে তার মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করান। একইসময় উপজেলার ভোলা মোড়ের জামাল উদ্দিনের ৯ম শ্রেণীর ছাত্রীকে শারিরীক নির্যাতনের ফলে গুরুতর আহত হয়ে পড়ে।

অপরদিকে একই শ্রেণীর ছাত্রী সূর্যপুর গ্রামের শ্রী হরেনের মেয়েকেও একই কায়দায় নির্যাতন করেন বলে শ্রী হরেন অভিযোগ করেন। এসময় নির্যাতন দেখে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে চিৎকার করতে থাকে।

জানা গেছে, আহত ওই তিন ছাত্রীর মধ্যে চাপে পড়ে মাত্র একজন পরদিন (বুধবার) স্কুলে উপস্থিত হয়। ইতিপূর্বে ওই প্রধান শিক্ষক নাচোল মোমিন পাড়ার জনৈক ছাত্রীর কানে চড় মেরে কানের পর্দা ফাটিয়ে দেন। এছাড়া ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক(ইংরেজি) আব্দুর রউফ ও আমিনুল ইসলাম (বিএসসি)’র বিরুদ্ধেও একই কায়দায় ছাত্রীদের নির্যাতনের অভিযোগ আছে।

আহত এক ছাত্রীর মা নাসিমা বেগম জানান, গত ৭দিন পূবে ইংরেজির শিক্ষক আব্দুর রউফ তার মেয়ের হাতের দু’বাহুতে বেত দিয়ে বেদম প্রহর করে জখম করে। প্রায় দেড় বছর পূর্বে আব্দুর রউফ নাচোল মধ্য বাজারের জনৈক সাহাবুলের মেয়ে আলোকে প্রচন্ড প্রহার করলে ছাত্রীর পিতা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে স্কুলের অফিসে বসে বিষয়টি মিমাংশা করেন। এছাড়া গনিতের শিক্ষক আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নাচোল চেয়ারম্যান পাড়ার জনৈক ছাত্রীকে শারিরীক নির্যাতনের অভিযোগে ওই শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে রাখলে সেটিও গোপনে মিমাংশা করা হয়।

এদিকে ছাত্রীদেরকে জিম্মি করে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাবারও অভিযোগ আছে ওই স্কুলের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় বেশী নম্বর পাইয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে এবং সরকারী নিয়ম-নীতিকে তোয়াক্কা না করে গনিতের শিক্ষক নাচোল মাষ্টার পাড়ার ভাড়া বাসাতে মোটা অংকের মাসিক ফিতে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন।

অন্যদিকে সরকারী নির্দেশনায় গাইড বই নিষিদ্ধ থাকলেও প্রধান শিক্ষক তার ভাই এর “বিসমিল্লাহ লাইব্রেরী” থেকে গাইড বই কিনতে ছাত্রীদের বাধ্য করার অভিযোগ আছে। আহত ছাত্রীদের অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের ওই স্কুলে পড়াতে গিয়ে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে কেউ আইনগত ব্যবস্থা নিতে পাছেন না।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলামের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ছাত্রী নির্যাতনের অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) দুলাল উদ্দিন খান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিভাবকদেরকে স্কুল পরিচালনা কমিটির কাছে অভিযোগ করতে বলেন।

এ ব্যাপারে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল লতিফ এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একজন সরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক এধরনের অচরণ করতে পারেন না। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Next Post

সেনাশক্তিতে হোক আর কপালজোরেই হোক- জয়ের মালা উঠছে ইমরান খানের গলাতেই।

বৃহস্পতি জুলাই ২৬ , ২০১৮
ava desk : শাবাশ, খান সাহেব! খেলার মাঠ থেকে রাজনীতির মাঠে এসেও ছক্কা হাঁকালেন। যৌবনে ক্রিকেটের বাইশ গজে কাঁপিয়েছেন। আর পড়ন্ত বেলায় পুরো পাকিস্তান! একেবারে জাত ‘কাপ্তান’ যাকে বলে। এক সময় দেশের হয়ে দল চালিয়েছেন। এখন প্রধানমন্ত্রী হয়ে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন পুরো দেশ। গুজব-কানকথাই শেষপর্যন্ত সত্য হল। সেনাশক্তিতে হোক আর […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links