আভা ডেস্কঃ লকডাউনে ঢাকা রাজারবাগ থেকে আসা পুলিশ বিভাগের লোগোযুক্ত নম্বরবিহীন সরকারি গাড়ি দিয়ে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছিল। পুলিশ টেলিকমের ২৬ সিটের কোষ্টারটিতে যাত্রী ছিল ৪০ জন। যাত্রী ও মালামালে পা ফেলবার জায়গা ছিল না কোষ্টারটিতে। চাঁপাই নবাবগঞ্জের নাচোল থেকে ঢাকা জনপ্রতি দুই হাজার টাকা ভাড়ায় যাত্রী পরিবহণ করছিল চালক রানা। বুধবার (৪ আগস্ট) রাত ১ টায় নাটোর শহরের চকরামপুর অতিক্রম করার সময় পাথরবোঝাই ট্রাকের সাথে লেগে পুলিশ টেলিকমের কোষ্টারটির লুকিং গ্লাস ভেঙে যায়।
গ্লাস ভাঙাকে কেন্দ্র করে ট্রাকচালক তোরাব আলী ও হেলপার কাসেমকে মারপিট করে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে চালক রানা। ঘটনাটি দেখে স্থানীয় এক তরুণ জরুরী সেবা ৯৯৯ ফোন দিয়ে বিষয়টি জানালে নাটোর থানা পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয় এবং গাড়িটি আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ সময় গাড়িচালক ফিরোজ হাসান পুলিশকে জানায়, মঙ্গলবার ঢাকার রাজারবাগ থেকে সাতজন পুলিশ অফিসারকে সরকারি কোষ্টার চাঁপাই নবাবগঞ্জে নামিয়ে দেন। ফেরার পথে পুলিশ টেলিকম এন্ড ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বরত ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের নির্দেশে চাঁপাই নবাবগঞ্জ শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে নাচোল থেকে ৪০ জন গার্মেন্টস কর্মী যাত্রী নিয়ে ঢাকার পথে রওনা হয়। কত টাকা ভাড়া মিটিয়েছে তা ওসি স্যার জানে। স¤পূর্ণ অনিয়ম হলেও রেজাউল স্যার সরকারি গাড়িতে লোক তুলে আনতে বলেছে। স্যারের হকুমে এই কাজটি করেছে। তবে গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। এটি ঢাকায় সরকারি কাজে ব্যবহার হয়।এদিকে কোষ্টারটিতে থাকা ৪০ যাত্রী তাদের কে ওই রাত্রেই নিজ দায়িত্বে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তারা সবাই যে যার মত করে চলে গেছে।
গাড়ীতে থাকা যাত্রী হোসেন আলী, আমেনা বেগম এবং রুনা বেগম জানান, নাচোল শ্যামলী কাউন্টারের মাষ্টার জনপ্রতি দুই হাজার টাকা ভাড়া নিয়ে এ গাড়িতে তুলে দিয়েছে। আমাদের সামনে মাষ্টার উনাদের স্যারের কথা বলেছে। পুলিশের গাড়ি রাস্তায় আটকাবে না বলে বেশি ভাড়া আদায় করে গাদাগাদি করে লোক তুলেছে।
প্রত্যক্ষদশীর্রা জানান, কঠোর লকডাউনের ১৩ কম দিনে পুলিশের সঙ্গে প্রতারণা করে সরকারি গাড়ি দিয়ে যাত্রী পরিবহন করার চেষ্টা করেছে।
গাড়ি চালকের কথা মতো ওসি টান্সপোর্ট রেজাউল করিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়িটি পুলিশ বিভাগের সরকারি গাড়ি। তবে লকডাউন হওয়ার কারণে সাতজন পুলিশ অফিসারকে ঢাকা থেকে চাঁপাই নবাবগঞ্জে নামিয়ে দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়েছে। ড্রাইভার যাত্রী ভাড়া তুলেছে নিজেই বাঁচার জন্য আমার কথা বলেছে। এটি অনিয়ম হয়েছে। এ রকম ভুল আর হবে না বলে তিনি সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করেন। গাড়িটি ছেড়ে দেয়ার জন্য পরে তিনি দায়িত্বরত এস আইকে এবং ও মডেল থানার পুলিশকে মুঠোফোনে অনুরোধ করেন।
এ ব্যাপারে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার শাহা বলেন, যারা যাত্রি ছিল, তাদের নামিয়ে রেখে প্রতেকের টিকিটের টাকা ফিরত দিয়া হয়েছে এবং তারা নিজ দায়িত্বমত যার যার গন্তব্যে গেছে। অপরদিকে আটক পুলিশ টেলিকমের কোষ্টারটি ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও লকডাউনের মধ্যে যারা সরকারের নির্দেশ অমান্য করে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করছে তাদের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এর ব্যবস্থা নিবেন।- সোনার দেশ