নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী পশ্চিমাঞ্চলের অফিসার্স রেস্টহাউজ এখন মাদক সেবন ও বহিরাগতদের নিয়ে আড্ডা এবং পতিতাদের বিচারণশীল স্থানে পরিনত হয়েছে । অস্থায়ী কর্মচারীদের আউটরুমে মাদক সেবনের আলামতসহ মাদক উদ্ধার করেছে আরএনবির সদস্যরা । গত ১৬ জুলাই সন্ধ্যায় এজিএম পশ্চিমের কাছে এরকম একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে আরএনবির চীফকে বিষয়টি দেখতে বলা হয় । এরপর আরএনবির ইন্সেপেক্টর হাবিবকে দায়িত্ব দেন চীফ কমান্ডেন্ট । সেই দিন সদ্ধ্যা অভিযানে যায় আরএনবি চোকির সদস্যরা । সেখানে গিয়ে মাদক সেবনসহ অনেক অপকর্মের প্রমাণ পায় আরএনবির সদস্যরা । সে বিষয়ে দোষীদের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে আরএনবির ইন্সেপেক্টর হাবিব ।
ঘটনার বরাতে জানা যায়, পশ্চিম রেলওয়ে অফিসার্স মেস বা রেস্টহাউজে দীর্ঘদিন থেকে কিছু বহিরাগতদের নিয়ে অস্থায়ী কর্মচারী বেয়ারার সামিউল আউট হাউজ রুমে গাঁজা, ইয়াবা সেবন করে আসছে । এটি করতে সহযোগীতা করছে অতিরিক্ত এফএনসিও এর ড্রাইভার তপু রানা ঘোষ ।আউট হাউজের তিন রুমে মাঝের রুমটির চাবি ছিল তপু রানা ঘোষের কাছে । মুলত সেই এই মাদক সেবনের মুলহোতা । স্থায়ী কর্মচারীরা বাহিরের হওয়ায় অস্থায়ী কর্মচারী সামিউল প্রভাব বিস্তার করে নানা অনিয়ম কে নিয়মে পরিনত করেছে । স্থায়ী বেয়ারার ময়নুল ও রেলওয়ে লোকসেড অফিসের ফিটার মিলেই মুলত এই অপকর্মের পর্দা ফাঁস করেছে । তাই তাদের দেখে নেওয়ারও হুমকি দিচ্ছে সামিউল ।
এ ঘটনায় রেস্টহাউজের স্থায়ি বেয়ারা ময়নুল ইসলাম গত বৃহস্পতিবার রাজশাহী পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ের চীফ কমান্ডার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর থেকে হুমকির মুখে পড়েছে রেস্টহাউজ বেয়ারার ময়নুল ও রেলওয়ের লোক অফিসের ফিটার আতাউর।
ঘটনা সূত্রে জানান গেছে, রাজশাহী পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ে অফিসার্স রেস্টহাউজের স্থায়ী কর্মচারি বেয়ারার মো এমনাজের পরিবর্তে গত ৬ মাস যাবত অবৈধ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন নগরীর বিজিবি ক্যাম্প এলাকার সামিউল ইসলাম। সামিউল স্থানীয় হওয়ার কারনে নিজের প্রভাব খাটিয়ে বহিরাগতদের নিয়ে আড্ডাবাজি ও মাদক সেবনের আখড়ায় পরিনত করেছে রেলওয়ের অফিসার্স রেস্টহাউজ।
অস্থায়ী রেস্টহাউজ বেয়ারার সামিউল ও পশ্চিম অঞ্চল রেলওয়ের এফএনসিও অফিসের পিয়ন তপু রানা ঘোষ র্দীঘদিন যাবত ওই রেস্টহাউজে এসব অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সামিউল স্থানীয় হওয়ার কারনে তাদের এসব কর্মকান্ডে রেস্টহাউজের অন্যান্য কর্মচারিরা কেউ প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও শামীম নামের এক অস্থায়ী রেস্টহাউজের কেয়ার টেকার কে মাস খানেক আগে নারী নিয়ে ফুর্তি করার সময় রেস্টহাউজের বাবুর্চি মোজাহার ও আরএনবি কর্মী বিনয় নারীসহ কেয়ার টেকার শামীমকে হাতে নাতে আটক করে। নারীসহ কেয়ার টেকার শামীমকে হাতে নাতে আটক করা হলেও সে জিএম অফিসের কর্মকর্তার নিকট আত্নিয় হওয়ার কারনে সে রেস্টহাউজের কেয়ার টেকার হিসাবে এখনও বহাল রয়েছে। তার বাড়ি কলোনিতে হওয়ার কারনে ক্ষমতার দাপটে এখনও রেস্টহাউজে কেয়ার টেকারের দায়িত্ব পালন করছে। সেই সুবাদে রেস্টহাউজে বহিরাগতদের নিয়ে আড্ডাবাজি করে। রেস্টহাউজে সামিউল, শামীম ও তপুর এসব অবৈধ কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করলে স্থায়ী রেস্টহাউজের কর্মচারিদের হুমকি ও ভয়ভিতি দেখিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়।
এ বিষয়ে আরএনবির ইন্সেপেক্টর হাবিব বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে । তিনি বলেন ঘটনার সততা পাওয়া গেছে । দোষীদের ব্যবস্থা গ্রহনে সুপারিশ করাও হয়েছে ।
এ ঘটনায় রাজশাহী রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের জিএম মিহির কান্তি গুহ বলেন, রেস্টহাউজের দায়িত্বে আছেন এজিএম আমিনুল ইসলাম। তাকে এ বিষয় তদন্ত করে একটি প্রতিবেদন দিতে বলেছি। তদন্ত প্রতিবেদন আমার কাছে জমা দিলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে রাজশাহী রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের এজিএম আমিনুল ইসলামকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ করেনি।