পদ্মায় রেল প্রকল্পে সময় ও ব্যয় দুটোই বাড়ছে

আভা ডেস্কঃ মাঝ পথে এসে আবারও সময় ও ব্যয় বাড়ছে সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়া পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে। বিষয়টি নিয়ে এরই মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

সম্প্রতি প্রকল্পটির বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভায়ও এর কারণ এবং যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। বাড়তি দেড় বছর সময় ও ১ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর কথা বলা হয় সভায়। এজন্য দ্বিতীয় সংশোধনী প্রস্তাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

নভেম্বরের মাঝামাঝিতে রেল ভবনে অনুষ্ঠিত পিআইসি সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার।

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রেলপথে রাজধানীর যোগাযোগের এ প্রকল্পের কাজ অর্ধেক শেষ হয়েছে। ২০১৬ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্পের ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। এতে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। ২০১৮ সালে প্রথম সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পটির ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। নতুন করে সংশোধনী আনা হলে প্রকল্পের ব্যয় ৪০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

এ ছাড়া একই দিনে পদ্মার ওপর সড়ক সেতু ও রেল সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করায়ও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রকল্পটির কাজ ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন তা শেষ করতে বাড়তি সময় প্রয়োজন বলে মনে করে রেলওয়ে। এজন্য আরও দেড় বছর বা ২০২৬ পর্যন্ত সময় চাইবে সংস্থাটি।

তবে রেলওয়ে জানিয়েছে, প্রকল্প সংশোধনী প্রস্তাবের কাজ মাত্র শুরু হয়েছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি প্রস্তাব। সময় ও ব্যয় কম বা বেশি হতে পারে। প্রথমে প্রস্তাব রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে, তারপরই চূড়ান্তভাবে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে।

পরিকল্পনা কমিশন জানিয়েছে, এই প্রকল্পের বিষয়ে তাদের কাছে এখনও কোনো প্রস্তাব বা তথ্য আসেনি। কমিশন জানিয়েছে, প্রকল্পটিতে গত নভেম্বর পর্যন্ত আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৫১.৮২ শতাংশ। এ পর্যন্ত প্রকল্পটিতে খরচ হয়েছে ২০ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ৪৮ শতাংশ।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য মামুন-অর-রশিদ  বলেন, ‘এ প্রকল্পের বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব এখনও আমাদের হাতে আসেনি। এমনকি এই বিষয়ে কোনো চিঠিও আমরা পাইনি। প্রস্তাব পেলে সময় ও ব্যয় বিষয়ে কমিশন যাচাই-বাছাই করে মতামত দেবে।’

পিআইসি সভায় প্রকল্পের বেশ কিছু জটিলতার কথা তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, মাঝপথে এলো প্রকল্পটি ভূমি অধিগ্রহণে এখনও সমস্যা রয়ে গেছে। প্রকল্পের আওতায় নতুন করে ১৫২ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে।

এখন পর্যন্ত ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল ও যশোরের জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে জমি পাওয়া যায়নি। তাই তা ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেয়া যায়নি। জমি পেতে বিলম্ব হওয়ায় এরই মধ্যে ঠিকাদার অভিযোগ দিয়েছেন। বাড়তি জমির প্রয়োজন এর কারণ হিসেবে বলা হয়, মৌজা ম্যাপের সঙ্গে প্রকল্প অধিগ্রহণ পরিকল্পনার অসামঞ্জস্যতা, জিও রেফারেন্সিং সমস্যা, নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধি, স্টেশন নির্মাণকাজের পরিমাণ বৃদ্ধি, স্টেশন এক্সেস রোডের জন্য বাড়তি জমি লাগবে।

তা ছাড়া প্রকল্প এলাকায় ইউটিলিটি শিফটিং (বিভিন্ন সংস্থার সেবা অন্যত্র সরিয়ে নেয়া) কাজেও সমস্যা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তন হওয়ায় ব্যয় পরিশোধ করা যাচ্ছে না। বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতির জন্য পাঠানো হয়েছে।

এই প্রকল্পে পরামর্শক সেবাসংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে। পরামর্শকের সঙ্গে বর্তমান চুক্তি রয়েছে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও পরামর্শকের মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। তাই পরামর্শক্রমে আত্মগর্ব মেয়াদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বানানো প্রয়োজন। একই প্রকল্প এলাকায় কাজের ধরন বৃদ্ধি এবং সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত পালনের জন্য নতুন করে পরামর্শকের পদ সৃষ্টি করতে হবে বলে সভায় আলোচনা হয়। তবে দ্বিতীয় সংশোধনীতে পরামর্শ ব্যয় আরও যৌক্তিক করার বিষয়ে বলা হয়।

প্রকল্প সংশোধনীর কারণ হিসেবে বলা হয়, ঢাকা থেকে গেণ্ডারিয়া তৃতীয় ডুয়েলগেজ লাইন, ভাঙ্গা জংশনে ওভারহেড স্টেশন, কমলাপুরের টিটিপাড়াতে আন্ডারপাস, নড়াইলের তুলারামপুরে নতুন আন্ডারপাস, ভায়াডাক্টের পিয়ারের (সেতু কর্তৃপক্ষ বা বিবিএর চাহিদা মোতাবেক) নকশা পরিবর্তন, ১০০টি বিজি কোচের ডিজাইন পরিবর্তন, মাওয়া-পদ্মবিলা-কাশিয়ানি-রুপদিয়া স্টেশনগুলোতে অপারেশনাল ফ্যাসিলিটি বৃদ্ধি, নদীর নেভিগেশন ক্লিয়ারেন্স বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় ১৩৮.৫৮ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ১৭৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে।

আবার নির্মাণকাজের চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়নকাল ডিসেম্বর ২০২২ এবং ডিফেক্ট লায়াবিলিটি পিরিয়ড বিবেচনায় ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত। ঠিকাদার কর্তৃক দাখিলকৃত সর্বশেষ ওয়ার্ক প্রোগ্রাম (এফ) অনুযায়ী বাস্তবায়নকাল জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত। ভূমি অধিগ্রহণ, ইউটিলিটি শিফটিং, ভেরিয়েশন, বর্ষাকাল, করোনা প্রকোপ ইত্যাদি কারণে ঠিকাদার কর্তৃক প্রায় ১.৫ বছর প্রকল্প বাস্তবায়নকাল বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাব করা হয়েছে।

আগামী বছরের জন্য চালু হবে পদ্মা সেতু। সেতুর ওপরে বাসসহ অন্যান্য যানবাহন এবং নিচে রেল চলবে। তবে ওপরে যানবাহন চলার কারণে সৃষ্ট কম্পন বা ভাইব্রেশনে নিচে রেলসেতুতে স্থাপনসহ অন্যান্য যন্ত্রাংশ স্থাপনে কোনো সমস্যায় পড়তে হবে কি না, তা জানতে প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরামর্শক দলের বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে বলে সভায় মত দেয়া হয়।

জাতির বীর সন্তানদের শ্রদ্ধা জানাতে আসা সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী লাবনী আক্তার বলেন, ‘আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে এসেছি। এই দিনে পাকিস্তানিরা তাদের হত্যা করেছে। তাদের স্মরণ করতে আমাদের শিক্ষকরা আমাদের নিয়ে এসেছেন।’

মোহাম্মদপুর গার্লস হাই স্কুলের শিক্ষার্থী লামিয়া লাবিবা বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এ বছরেও এসেছি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে। আমাদের শিক্ষদের সঙ্গে এসেছি এখানে।’

রাজধানীর চাঁদ উদ্যান গার্লস অ্যান্ড বয়েজ হাই স্কুলের শিক্ষক মুক্তা আফরোজ সিন্থিয়া বলেন, ‘বাচ্চাদের নিয়ে এসেছি এই দিনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে। এই দেশের নতুন প্রজন্ম হিসেবে তাদের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এই শিশু-কিশোররাই আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়বে।

‘শুধু বই পড়ে শিক্ষার্থীরা এই দিন সম্পর্কে জানতে পারবে না। তাই ইতিহাস জানার সঙ্গে সঙ্গে স্থানটাও কাছ থেকে দেখাতে তাদের নিয়ে এসেছি। তাহলেই তারা অনুভব করতে পারবে।’

Next Post

মুরাদ এমপি থাকবেন কি না সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার: হাইকোর্ট

মঙ্গল ডিসে. ১৪ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ নারীর প্রতি অবমাননাকর বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করা ডা. মুরাদ হাসানের এমপি পদ থাকবে কীনা সে সিদ্ধান্ত নেবেন স্পিকার। বিচারপতি এম ইনায়তেুর রহিম ও বিচারপতি মো মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links