এ বিষয়ে নিজের ভেরিফায়েড পেজে ১১টি পদক্ষেপের কথা তুলে পোস্ট দেন তথ্য সরকারের আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো হলো- নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে ও দুর্ঘটনা রোধে রমিজ উদ্দিন স্কুল সংলগ্ন বিমানবন্দর সড়কে আন্ডার পাস নির্মাণ, দেশের প্রতিটি স্কুল সংলগ্ন রাস্তায় স্পিড ব্রেকার বসানো এবং শুধু স্কুলের জন্য প্ল্যাকার্ড সম্বলিত বিশেষ ট্রাফিক পুলিশ নিয়োগ দেয়ার কথাও ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়াও দুর্ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত জাবালে নূরের ২টি বাসের রুট পারমিট বাতিল করা হয়েছে।
জাবালে নূর পরিবহন বাস মালিকদের একজন মো. শাহাদাৎ হোসেন এবং গাড়ির চালক মো. মাসুম বিল্লাহ সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক ও ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন অবৈধ গাড়ি চালকদের বিরুদ্ধে এবং বিমানবন্দর সড়কে ০২ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথিরিটি (বিআরটিএ) এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কে নির্দেশ দেন।
রোববার (২৯ জুলাই) দুই বাসের রেষারেষির সময় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে কুর্মিটোলা উড়াল সেতুর ঢালে অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের ওপর জাবালে নূর বাস তুলে দিলে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই জন শিক্ষার্থী মারা যান এবং আরো প্রায় ১২ জন আহত হন। নিহতরা হলেন শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থী আবদুল করিম এবং দিয়া খানম মিম। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত কয়েকদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করছে শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার পর মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) পরিবহন সংশ্লিষ্টদের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে ডেকে এনে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার নেয়ার পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফেরাতে কঠোর নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (০২ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহত দুই শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যদের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে নিয়ে এসে তাদের সান্ত্বনা দেন, সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা নেই। আমি এক রাতে সবাইকে হারিয়েছি। স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি।
প্রধানমন্ত্রী নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে মোট ৪০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র দেন।
এদিকে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা ও দ্রুত মামলা শেষ করার বিধান রেখে বিদ্যমান আইন সংশোধন করে কঠোর ট্রাফিক আইন দ্রুত পাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এ বিষয়ে বুধবার (০১ আগস্ট) সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ট্রাফিক আইনের খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয় থেকে ভেটিং করতে (সংবিধান বা চলমান কোনো আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কি-না যাচাই-বাছাই করে) সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
আগামী সোমবার (০৬ আগস্ট) আইনটি মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, আগামী মন্ত্রিসভায় আইনটি অনুমোদন হতে পারে। মন্ত্রিসভায় আইনটি অনুমোদন হলে আগামী সংসদ অধিবেশনে এটিকে পাশ করা হবে।
মঙ্গলবার (৩১ জুলাই) বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সড়ক দূর্ঘটনা রোধে গণপরিবহনের ফিটনেস যাচাইয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ১৫ সদস্যের কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন যান চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন।
যুগান্তর