আভা ডেস্কঃ মরদেহ উদ্ধারের পর খুলনার ফুলতলায় ধর্ষণের পর গলা কেটে হত্যা করা ২১ বছর বয়সী মুসলিমার ছিন্ন মাথাও উদ্ধার করেছে র্যাব।
হত্যাকাণ্ডের তিন দিন পর শনিবার দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেয়া তথ্যমতে সেই মাথা উদ্ধার করা হয়। এ সময় মুসলিমার পরনের জামাকাপড়, জুতা এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো বঁটিও উদ্ধার হয়।
র্যাব-৬-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মুহাম্মদ মোসতাক আহমদ ঘটনাস্থলেই অভিযান সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
গ্রেপ্তার দুই যুবক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তারা হলেন ফুলতলা উপজেলার যুগ্নীপাশা পূর্ব পাড়ার মোশারফ খন্দকারের ছেলে রিয়াজ খন্দকার ও একই এলাকার শিলন সরদারের ছেলে সোহেল।
র্যাব অধিনায়ক জানান, গত ২৬ জানুয়ারি সকালে ফুলতলার উত্তরডিহি এলাকার ধানক্ষেত থেকে মুসলিমার মস্তকবিহীন বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধারের পর এ ঘটনায় ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাব।
পরে গোপন তথ্য ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দুজনকে শুক্রবার দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী নিহত মুসলিমার ছিন্ন মাথাসহ অন্যান্য আলামত উদ্ধারের অভিযান চালানো হয়।
অভিযুক্তদের বরাত দিয়ে র্যাব অধিনায়ক আরও জানান, ২৫ জানুয়ারি ঘটনার রাতে ধর্ষণের পর হত্যার পরিকল্পনাকালে মুসলিমা তাদের কাছে মিনতি করেও রক্ষা পায়নি।
মুসলিমা খুনিদের বারবার বলেছিল, ‘আমার বাবা খুব অসুস্থ, হাসপাতালে ভর্তি। ধর্ষণের ঘটনা কাউকে বলব না। আমাকে ছেড়ে দাও।’
কিন্তু তাতেও মন গলেনি খুনিদের।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, ‘তারা মুসলিমাকে পৈশাচিক নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করে। তার দেহ থেকে মাথা আলাদা করে ফেলেছিল খুনিরা।’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন নিহত মুসলিমার বোন আকলিমা খাতুনসহ স্বজনরা। তাদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে আসে। শত শত মানুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড দাবি করেন তারা।
এর আগে মুসলিমার মস্তকবিহীন বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধারের পর তার বোন আকলিমা খাতুন বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা করেছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২৫ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোবাইলে কল পেয়ে মুসলিমা বাসা থেকে বের হয়ে যান। কিন্তু আর ফিরে আসেননি। পরদিন সকালে মস্তকবিহীন মৃতদেহ উদ্ধার হয়।