আভা ডেস্কঃ ধর্মের ভিত্তিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সোমবার বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সমালোচকরা বলছেন, উগ্রহিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার গোষ্ঠীগত এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে ভারতকে সংঘাতের দিকে ঢেলে দিচ্ছেন। যদিও একটি ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র হিসেবে দেশটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
রোববার রাতে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের বর্বরতার খবর মোদির হিন্দুত্ববাদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে।
বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি না নিয়েই পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে। এসময় সংঘাতে শতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
লাইব্রেরিতে পড়াশুনারত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। ছাত্রীদের ওপর পুলিশ যৌন নির্যাতন চালিয়েছে বলেও খবরে জানা গেছে।
উত্তরপ্রদেশের আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়েও একই দৃশ্য তৈরি হয়েছে। ক্যাম্পাসটিতে পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘাতে ৩০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীদের আটক ও তাদের ওপর নৃশংসতার প্রতিবাদে নয়াদিল্লির পুলিশ কার্যালয়ের সামনে শত শত লোক জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
গত কয়েকদিনে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা ঘটেছে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসামে। সেখানে লোকজন ভবন ও ট্রেন স্টেশনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, এই আইনে বাংলাদেশ থেকে আসা হাজার হাজার অভিবাসী নাগরিকত্ব পাবেন।
এখন পর্যন্ত সংঘাতে ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে পাস হওয়া ওই আইনটিতে প্রতিবেশী বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া অমুসলিম ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগিরকত্ব দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
আইনটিতে মুসলমানদের বাদ দেয়ায় ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে বলে সমালোচকরা দাবি করছেন।
মুম্বাইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সে রাতভর বিক্ষোভ হয়েছে। বারাণসী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। সোমবার বোম্বে বিশ্ববিদ্যালয় ও বেঙ্গালুরুতেও বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, দিল্লিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সহপাঠীদের ওপর চালানোর নির্মমতার প্রতিবাদে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ড. রাজা বলেন, দেশটা এখন জ্বলছে। সরকার আমাদের সংবিধানের সঙ্গে তামাশা করছে।
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশি বর্বরতার নিন্দা জানিয়েছেন অভিনেতা কঙ্গনা সেন শর্মা, পরিচালক মহেশ ভাট ও অনুভাব সিংহ। টুইটারে দেয়া পোস্টে তার সবাইকে প্রতিবাদী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
কঙ্গনা সেন শর্মা বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রয়েছি।
রোববার এক সমাবেশে মোদি বলেন, পার্লামেন্টে আইনটি পাশ করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পিছুহটার সুযোগ নেই। সিদ্ধান্তটি একহাজার শতাংশ সত্যিই।