আভা ডেস্কঃ রাজধানীর মালিবাগের প্রশান্তি হাসপাতালে টাকার জন্য মৃত ব্যক্তির হাত বেঁধে রাখার ঘটনা তদন্ত করার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে এই ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগ এজাহার হিসাবে নিতে শাহজাহানপুর থানাকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ জুলাই) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় যুগান্তরকে আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভেকেট জহির উদ্দিন লিমন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট কামাল উদ্দিন আহমেদ ও খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ‘করোনায় মৃত, মালিবাগে টাকার জন্য বেঁধে রাখা হলো লাশের হাত’ শীর্ষক একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন সংযুক্ত করে এই রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে স্বাস্থ্য ও স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) প্রেসিডেন্ট, পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজি), হাসপাতলের ব্যবস্থাপন পরিচালকসহ ১১ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নোয়াখালীর সুবর্ণচরের সাগরিকা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন কর্মকর্তা ডা. মহিন উদ্দীন পারভেজ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে ওই রোগীকে ‘কথিত’ আইসিইউতে নেয়া হয়। এরপর ক্রমাগত টাকার চাপ দেয়া হয় রোগীর পরিবারকে। রোগী মারা যান, মৃত্যুর পরেও বেডের সঙ্গে মৃতের হাত বাঁধা ছিল। এমনই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর মালিবাগের প্রশান্তি হাসপাতালে।
জানা যায়, এক পর্যায়ে ডা. মহিন উদ্দীন পারভেজ গত ১৮ জুন মারা যান।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, অনেকটা সুস্থ থাকার পরও ১৪ জুন ভর্তি হওয়ার পরই তাকে প্রায় জোর করেই আইসিইউতে পাঠিয়ে দেন আইসিইউ কনসালটেন্ট ডা. এস এম আলীম। স্বজনদের কাছে ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকার বিল ধরিয়ে দেওয়া হয়। এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় রোগীর স্বজন রুবেলের মোবাইল কেড়ে নেন ডা. আলীমের ম্যানেজার সাইফুল। তাকে এক রুমে আটকে রাখা হয়। বলা হয়, টাকা না দিলে তাকে র্যাবে দেওয়া হবে। তার ভাইয়ের লাশ আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে ‘বেওয়ারিশ’ হিসাবে দিয়ে দেওয়া হবে। পরে রুবেল তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা হাসপাতাল খরচ ও প্রায় ৬০ হাজার টাকা ওষুধের দাম দিয়ে লাশ নিয়ে ওইদিন সন্ধ্যায় ছাড়া পান।