জীবনের ২য় ইনিংস শুরু করলাম, মানসিকভাবে আমি সবল আছি, কাদের।

আভা ডেস্কঃ সিঙ্গাপুরে দুই মাস ১০ দিন চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করার কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেই ইনিংসের চ্যালেঞ্জ কী, লক্ষ্য কী- তাও জানিয়েছেন তিনি।

দুই মাস ১৬ দিন পর রোববার সকালে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রথম ইনিংস শেষ করেছি। ইনশাল্লাহ, এবার দ্বিতীয় ইনিংস খেলব। দ্বিতীয় ইনিংসের বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে- সড়কে ও পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে সম্পন্ন করায়। আশা করি সবার সহায়তায় সেটি পারব।

অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে দুই মাস ১৬ দিন আগে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তারপর দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলাম। হয়তো সারাজীবনের জন্যই অনুপস্থিত ছিলাম! কিন্তু দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের অশেষ দোয়া ও প্রধানমন্ত্রীর সবিশেষ চেষ্টায় আমি ফিরে এসেছি।

নিজ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতেও আপনারা কাজে কোনো ঘাটতি তৈরি করেননি। এটা আমি সিঙ্গাপুরে থাকাবস্থায়ই প্রধানমন্ত্রীর কাছে শুনেছি। তিনি আমায় বলেছেন, তোমার মন্ত্রণালয় ঠিকঠাক মতো চলেছে।

নিজের চিকিৎসার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ১৬ জুলাই চেকআপ করাতে যাব। ভারী কাজ করতে চিকিৎসকরা নিষেধ করেছেন। দুই মাস পরপর চেকআপ করাতে হবে।

ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আগের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে রোদ-বৃষ্টি একাকার করে কাজ করতে হয়তো পারব না। তবে ধীরে ধীরে ২-৪ মাস পর আগের মতো সুস্থ হয়ে উঠব, ইনশাল্লাহ।

সাংবাদিকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মানসিকভাবে আমি সবল আছি। আরও কিছু দিন ধীরেসুস্থে কাজ করতে হবে। আশা করছি, দেড় মাস পর পুরোপুরিভাবে কাজে মনোযোগ দিতে পারব।

আওয়ামী লীগের আগামী জাতীয় সম্মেলন নির্ধারিত সময়েই হবে জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক বলেন, কাউন্সিল যথাসময়েই হবে। তিন বছর পর সম্মেলন অক্টোবরে কাউন্সিল ধরে নিয়েই দলের যাবতীয় কার্যক্রম এগিয়ে যাচ্ছে।

আগামীকাল সোমবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যাবেন জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, দলের বিষয়ে পার্টি অফিসের কথা বলব।

‘জীবনের দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলাম। যানজটমুক্ত দেশ ও নগর গড়া এখন আমার মূল কাজ হবে। নতুন জীবন পেয়ে সরকারে ও দলে সক্রিয় হতে পেরে ভালো লাগছে’-যোগ করেন সেতুমন্ত্রী।

সড়কের অবস্থা তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, ঈদ সামনে রেখে এবারকার প্রস্তুতি অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো। আমাদের সবচেয়ে বড় সংকটের জায়গা দুটি রুট। একটি হচ্ছে- ঢাকা-গাজীপুর-টাঙ্গাইল উত্তরাঞ্চলের। এখানে সংকট তৈরি হয়, এখানে যানজট হয়। মানুষের দুর্ভোগ হয়। ঘরমুখী যাত্রীরা সীমাহীন কষ্টের মধ্যে বাড়ি যান।

তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রামেও সমস্যা হয় মূলত তিনটি ব্রিজের কারণে। আমার অনুপস্থিতিতে কাঁচপুর ব্রিজের শুভ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২৫ মে মেঘনা-গোমতী সেতু উদ্বোধন হবে। এর পর ঢাকা-চট্টগ্রাম ঈদের সময় যে দুর্ভোগ-ভোগান্তি এসব কমে যাবে। সম্পূর্ণ সহনীয় মাত্রায় থাকবে- এটি আমরা বলতে পারি। আমাদের গাজীপুর থেকে টাঙ্গাইল অংশে এখানেও ভোগান্তি কম হবে।

তিনি বলেন, শরীরের কথা ভেবে আমি প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয় না হলেও কাজের অগ্রগতি থেমে থাকবে না। আমার এখানে একটা টিমওয়ার্ক আছে। আমার পার্টিতেও একটা টিমওয়ার্ক আছে।

চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর প্রথমবারের মতো সচিবালয়ে নিজ দফতরে যান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ রোববার সকাল ১০টার কিছু সময় পর পর তিনি দফতরে যান। অসুস্থ হওয়ার ২ মাস ১৬ দিন পর আজই প্রথম অফিস করলেন তিনি।

কার্যালয়ে গিয়ে প্রথমেই রুটিন ফাইল ওয়ার্ক করেন সেতুমন্ত্রী। পরে পৌনে ১১টায় নিজ কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন চলমান উন্নয়ন প্রকল্পবিষয়ক সভায় যোগ দেন ওবায়দুল কাদের।

পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি। এ সময় মতবিনিময়কালে কাদের বলেন, আল্লাহর রহমতে ও দেশবাসীর দোয়ায় আমি বেঁচে আছি। আমার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয়ে ছিলেন অনেকেই।

চিকিৎসার সার্বিক তত্ত্বাবধান করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা মাতৃস্নেহে আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়েছেন, সার্বিক খোঁজখবর নিয়েছেন। আমি তার প্রতি কৃতজ্ঞ।

সবার সহযোগিতা কামনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আপনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমি নতুন করে পথ চলতে চাই। বাকি জীবনটা দেশের ও মানুষের সেবায় কাটিয়ে দিতে চাই।

দীর্ঘ দুই মাস ১০ দিন সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা শেষে গত বুধবার দেশে ফেরেন ওবায়দুল কাদের। এদিন দলীয় নেতাকর্মীরা ওবায়দুল কাদেরকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান।

শুক্রবার দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে এদিন নেতাদের সঙ্গে নিয়ে দলীয় প্রধানকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, এখন সীমিত পরিসরে কাজ করবেন ওবায়দুল কাদের। দলে এবং মন্ত্রণালয়েও সাধ্যমতো সময় দেবেন।

প্রসঙ্গত গত ৩ মার্চ সকালে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি হন ওবায়দুল কাদের। সেখানে এনজিওগ্রাম করার পর তার করোনারি ধমনিতে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। সেদিন তাকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পরে উপমহাদেশের বিখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. দেবী শেঠির পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য ৪ মার্চ তাকে সিঙ্গাপুর নেয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ দুই মাস তার চিকিৎসা চলে। বুধবার তিনি দেশে ফিরে আসেন।

ওই দিন বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের বিজি ০৮৫ ফ্লাইটে করে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। দেশে ফিরেই সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে স্ত্রীকে নিয়ে গণভবনে যান ওবায়দুল কাদের।

সূত্র: যুগান্তর

Next Post

রাজশাহীতে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠার অংগিকার করলেন, প্রতিষ্ঠানটির মহা পরিচালক।

রবি মে ১৯ , ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটনের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)’র মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রাশীদুল হাসান। আজ রোববার দুপুরে নগরভবনের মেয়র দপ্তরে মেয়রের সাথে সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় করেন তিনি। মতবিনিময়কালে রাজশাহীতে বিকেএসপি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে মেয়রের সহযোগিতা কামনা করেন বিকেএসপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links