আভা ডেস্কঃ জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে, পাশে থেকে জনগণের কল্যাণে কাজ করে যেতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্যকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পুলিশের কাছে গেলে যে ন্যায়বিচার বা ন্যায্যতা পাবে, সেই আত্মবিশ্বাসটা মানুষের মাঝে যেন সবসময় থাকে, পুলিশকে সেভাবেই সেবা দিয়ে যেতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকার রাজারবাগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনসে রোববার সকালে দেশের প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় স্থাপিত সার্ভিস ডেস্কের উদ্বোধন এবং গৃহহীনদের জন্য নির্মিত ৪০০টি ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন সরকারপ্রধান।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের ৬৫৯টি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবায় সার্ভিস ডেস্ক স্থাপন করেছে বাংলাদেশে পুলিশ।
দেশের প্রতিটি থানায় একটি আলাদা কক্ষ নিয়ে তৈরি এই সার্ভিস ডেস্ক পরিচালনার দায়িত্ব দেয়া হয় প্রশিক্ষিত নারী পুলিশ সদস্যদের। আর যেসব থানায় পর্যাপ্ত কক্ষ নেই, সেখানে বিশেষ ব্যবস্থায় কক্ষ তৈরি করে সেবাটি দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের বিভিন্ন প্রকল্প থেকে সাশ্রয় হওয়া অর্থ দিয়ে ৫২০টি থানায় ঘরহীন মানুষের জন্য ৫২০টি ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। তার মধ্যে ৪০০টি ঘর নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। সেগুলো গৃহহীনদের মধ্যে হস্তান্তর করেন প্রধানমন্ত্রী।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অনুমোদনে সাশ্রয়ী এবং উন্নত মানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বাড়িগুলো। ভূমিকম্প প্রতিরোধক ও অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা রয়েছে প্রতিটি বাড়িতে; দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন থানা থেকেও যুক্ত ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যরা।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের পুলিশ জনগণের সেবক হবে, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করবে। পুলিশের কাছে গেলে যে ন্যায়বিচার পাবে বা ন্যায্যতা পাবে, সেই আত্মবিশ্বাসটা মানুষের মাঝে যেন সবসময় থাকে। পুলিশকে সেভাবেই সেবা দিয়ে যেতে হবে। কারণ যেকোনো বাহিনী হোক আর যেকোনো ব্যক্তি হোক, তার জীবনের সফলতা তখনই আসে, যখন তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সে যথাযথভাবে পালন করে মানুষের আস্থা, বিশ্বাস এবং ভালোবাসা অর্জন করতে পারে। এটাই হচ্ছে সব থেকে বড় কথা।’
‘এই পুলিশকে জনগণের পুলিশ হতে হবে’- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এই ঐতিহাসিক বার্তাটার কথা পুলিশ সদস্যদের স্মরণ করিয়ে দেন তার কন্যা।
তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, এই হেল্প ডেস্ক নির্মাণের মাধ্যমে নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সেবা দান করা এবং গৃহহীনদের গৃহ দেয়া, এটা জনগণের পুলিশেরই কাজ। আজকের পুলিশ জনগণের পুলিশ হিসেবেই আপনারা আজ মানুষের আস্থা, বিশ্বাস অর্জন করেছেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন, জনগণের পাশে থাকবেন এবং জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবেন, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
দেশের প্রতিটি থানায় নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ সার্ভিস ডেস্ক গঠন করায় বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের নারী সমাজ, শিশু, বয়স্ক যারা, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অন্যায় হলে বলতে পারে না। বিশেষ করে নারীদের ব্যাপারে তো এটা আরও বেশি। তাদের জন্য অন্ততপক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার চাওয়ার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সুযোগটা কিন্তু আপনারা করে দিয়েছেন।’
সার্ভিস ডেস্কে সহযোগিতা প্রার্থীদের আইনি সহায়তা দেয়ার সুযোগ আছে বলেও জানান সরকারপ্রধান।
তিনি বলেন, ‘প্রথম যখন সরকারে আসি, তখন লিগ্যাল এইড গঠন করে দিই। যারা আর্থিক সমস্যায় আছেন, তাদের জন্য আমরা আলাদা ফান্ড দিয়েছি। কাজেই সেদিক থেকেও তাদের কোনো অসুবিধা হবে না। লিগ্যাল এইড থেকে তারা সব ধরনের সহযোগিতা বা বিচার চাইতে পারবে।’
সার্ভিস ডেস্কে যারা সেবা দেবেন, প্রয়োজনে তাদের দেশের বাইরে থেকে প্রশিক্ষণ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হবে বলেও জানান টানা তিন মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এটা একটা মানবিক দিক বা মনস্তাত্ত্বিক বিষয়। সেদিকে অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয়েরও বিষয় আছে। কাজেই সেখানে প্রয়োজনে বিদেশে পাঠিয়েও যদি আমাদের কাউকে ট্রেনিং করিয়ে আনতে হয়, সেটা আমরা করাব এবং তারা এসে অন্যদের ট্রেনিং করাবে।’
উন্নয়নকে রাজধানী বা শহরে আটকে না রেখে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্য নিয়ে তার সরকার কাজ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের একটি মানুষ ভূমিহীন থাকবে না, গৃহহীন থাকবে না, ঠিকানাবিহীন থাকবে না।’
উন্নয়নের সুফলটা সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নটা আরও গতিশীল হবে। প্রতিটা মানুষ যখন একটা থাকার জায়গা পায়, তখন তার একটা কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়। সেটাই তাকে সুযোগ করে দেয় নিজের পায়ে দাঁড়াবার, আত্মকর্মসংস্থান করবার।
‘তার ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস আস্থা সৃষ্টি হয়। মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও দরদও তৈরি হয়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে অনেক আয়োজন, অনেক অনুষ্ঠান আমরা করোনাভাইরাসের জন্য করতে পারিনি, কিন্তু এই যে গৃহহীন মানুষের জন্য ঘর করে, তার একটা ঠিকানা দিয়ে দেয়া, আমার মনে হয় এর থেকে বড় কাজ আর কিছু হতে পারে না। সে কাজটা আপনারা করছেন। আপনাদেরকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’
পুলিশের উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। কাজেই এই স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে মানুষের সেবা করাই আমাদের দায়িত্ব।’
রবি এপ্রিল ১০ , ২০২২
নিখিল বর্মন, সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সীমান্তবর্তী সাপাজার উপজেলা সদর থেকে বিকাশ হ্যাকিং চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলা সদরে অভিযান চালিয়ে ওই দুই হ্যাকার সদস্যকে আটক করা হয়েছে। আটকরা হলেন জেলার পত্নীতলা উপজেলার সারাইডাঙ্গা গ্রামের তায়েব উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে মাসুদ পারভেজ বকুল ও মান্দা উপজেলার […]
এই রকম আরও খবর
-
২৭ জুন, ২০২২, ১০:২৩ অপরাহ্ন
-
-
৮ আগস্ট, ২০২১, ৪:০৮ পূর্বাহ্ন
-
১৭ আগস্ট, ২০২০, ৭:০৮ অপরাহ্ন
-
২ জুন, ২০২০, ২:২৮ অপরাহ্ন
-
২৭ এপ্রিল, ২০২১, ৬:৫৮ অপরাহ্ন