বার্তা বিভাগঃ রিক্সায়ালার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে হুমকি দিয়ে ৭০ হাজার টাকা নিলেন রাজপাড়া থানার এএসআই বেলাল গ্রেফতার হয়রানির পাশাপাশি মারধরের অভিযোগসহ গত মাসেই রাজশাহী রাজপাড়া থানার খোদ পুলিশের বিরুদ্ধে যখন চাঁদাবাজির অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে ঠিক তখনই রাজশাহী মহানগর রাজপাড়া থানা পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে অসন্তোষ দেখা গেছে জনমনে ।
যে থানা কিছুদিন আগেই অত্যন্ত নিরলস সফলতা দেখিয়ে অস্ত্র গোলা-বারুদসহ মাদক ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল হয়তোবা পালটে গেছে রাজশাহী রাজপাড়া থানার পুলিশের দৃশ্যপট। কিন্তু কথায় আছে “চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী” ।
গত ১৬/০৬/২০১৯ ইং তাং রবিবার ভোর আনু: ৬ টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানা এলাকার জনৈক রিকশা চালক সুজনকে রাস্তায় পথ রোধ করে রাজপাড়া থানা এএসআই বেলাল ও টার সঙ্গীয় ফোর্স। এ সময় তাঁর কাছে থেকে ৪ গ্রাম হিরোইন পাওয়া গেছে দাবি করে পুলিশ কিন্তু নামাজে যাওয়া মুসল্লিদের সামনে তা দেখতে ব্যর্থ হয়েছেন এএসআই বেলাল। তারপর যথারীতি রিকশাঅলা সুজনকে নিয়ে যাওয়া হয় থানায় । সেই সাথে উপুর্যপরি মারধরও করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই রিক্সাওয়ালার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পিংকি বেগম। এই ঘটনা রীতিমত ভাইরাল হয়ে উঠেছে ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে।
পিংকি বেগম জানান – আমার স্বামী ভোর ৬ টায় গ্রেফতার হওয়ার পর আমার স্বামীর ফোন থেকে এএসআই বেলাল ৫/৭ বার রিং দিয়ে আমাকে থানায় ডেকে ১ লক্ষ টাকা দাবি করে।এ সময় আমি টাকা দিতে না চাইলে সে আমাকেও আমার স্বামীর সাথে মামলা দিয়ে জেলখানায় আমার গর্ভপাত করাবে বলে হুমকি দেয়। এ সময় এএসআই বেলাল আমাকে পুলিশ সোর্স হিরুর হাতে টাকা দিতে বলেন এবং হিরুর ফোন নং ০১৭৮১৮৩৭৮৩৫ আমাকে প্রদান করেন । সে সাথে দুপুর ১২ টার ভেতরে আমাকে টাকা পৌঁছানোরও হুমকি দেন। তা না হলে আমার স্বামীকে ৫০০ গ্রাম হিরোইন দিয়ে কোর্টে চালান দেয়ার কথা বলেন ।
পরবর্তীতে পিংকি বেগম ধার-কর্জ করে ৭০ হাজার টাকা ও পুলিশ সোর্স হিরুকে সাথে নিয়ে রাজপাড়ার থানার একটু পাশে চন্ডিপুর মোড়ে রাজপাড়া থানার আরেক এসআই হায়দার আলী খান ( বিপি নং – ) এর উপস্থিতিতে এএসআই বেলালকে ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন।কিন্তু তারপরও তাঁর স্বামীকে কেন ৪ গ্রাম হিরোইন দিয়ে চালান দিলো এই প্রশ্ন এখন ওই রিক্সাওয়ালার ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পিংকি বেগমের। ও নিয়ে রীতিমত সমালোচনার ঝড় বইছে পুলিশ প্রশাসনে
রিক্সাওয়ালা কে এই সুজন ..?
সুজন আলী ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত হঠাৎ করে মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হন,পরবর্তীতে মাদক মামলা হওয়ার পর ছেড়ে দেন মাদক ব্যবসা কিন্তু মাদক সেবনের দায়ে তাকে আবার গ্রেফতার করা হয় যথাক্রমে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে কিন্তু । এ সময় সে সাধারণ জীবন যাপন করতে চাইলে তৎকালীন রাসিকের ১ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এর সহযোগিতায় তাকে রিকশা কিনে দেয়া হলে বিগত ৪ বছরে তাকে পড়তে হয়নি কোন ধরণের মাদক মামলায় ।
অত্র এলাকার এলাকাবাসী সহ স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ জানান – এক সময় সুজন আলী মাদক সেবন ও বিক্রি করতো কিন্তু প্রায় ৫ বছর ধরে এখন সে রিকশা চালিয়ে ও শাক-সবজ্বির কাঁচা মালের ব্যবসা করে স্বাচ্ছন্দেই জীবন-যাপন করছে । সে কোন ভাবেই এই ব্যবসার সাথে জড়িত নয়।
তবে অত্র এলাকার স্থানীয় এলাকাবাসীর দাবি – রাজপাড়া থানার এএসআই বেলালের দেয়া মামলার তদন্ত করা হোক তাহলেই সঠিক তথ্য বের হয়ে আসবে বলে আমরা আশাবাদী সেই সাথে বের হয়ে আসবে এএসআই বেলালের ঘুষ কেলেঙ্কারি সহ নানান অত্যাচারের অপ্রকাশিত ঘটনা ।
এদিকে কাউন্সিলর রজব আলী জানিয়েছেন – এক সময় সে মাদক সেবন সহ বিভিন্ন চক্রের সাথে জড়িত ছিল কিন্তু বর্তমানে সে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছিল । তবে এলাকাবাসীর কাছে আমি শুনেছি সুজন আলীর কাছে মাদক না পেয়েও পুলিশ তাকে মামলা দিয়েছে। বিষয়টি অত্তান্ত দু:খজনক । কেউ ভাল হতে চাইলে তাকে সুযোগ দেয়া তো আমাদেরই কর্তব্য।
অফিসার ইনচার্জ রাজপাড়া থানার ওসি হাফিজুর রহমান হাফিজ এর সাথে কথা বলার জন্য যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানে না বলে জানান।
তবে এ বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস মুঠোফোনে বলেন,এএসআই বেলাল যদি এ সকল কর্মকান্ডে জড়িত থাকেন তবে অবশ্যই শাস্তির আওতায় াণ হবে কেননা একজন পুলিশ সদস্যের কারণে পুলিশ সমালোচিত হোক এটা আমাদের কাম্য নয় ।
তবে উল্লেখ্যঃ যে, উক্ত বিষয়টি সাথে সাথে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দিয়ে পুলিশ সিকিউরিটি সেলে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে সে সাথে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ ।
ইউপিএন