ডা.আব্দুল্লাহ আল ওয়াদুদ মহাদেবপুর প্রতিনিধি :- কলার দাম বেশী হওয়ায় ঝুঁকে পড়েছেন মহাদেবপুরের কলা চাষীরা। সারি সারি বাগান থেকে কলা বিক্রি করে প্রচুর টাকার মুখ দেখছেন চাষীরা। বাজারে উচ্চমূল্য এবং ব্যাপক চাহিদার কারণে বাগানের কলা নিয়ে সামান্যতম দুশ্চিন্তাও করতে হয়না কৃষকদের। বাগানে চাষ আবার বাগানে বসেই বিক্রি। ক্রেতারা বাগানে বাগানে ঘুরে কলা ক্রয় করে নিয়ে আসেন। অনেক ক্রেতা আবার বাগানের সমুদয় কলা আগাম ক্রয় করে রাখেন। এ ফসল চাষ করে যেখানে বাজারমূল্য ও বিক্রি নিয়ে নেই কোন দুশ্চিন্তা সেখানে কৃষকদের ঝুঁকে পড়াটাই স্বাভাবিক। কোন দুশ্চিন্তা ছাড়াই স্বল্প খরচ ও নামমাত্র পরিশ্রমে বেশী লাভের দেখা পাওয়ায় উপজেলার সহস্রাধিক কৃষক তাদের তুলনামূলক উঁচু জমিগুলোকে পরিকল্পিতভাবে তৈরী করে কলাচাষের ক্ষেত বানিয়েছেন। এ ক্ষেত থেকে কৃষক প্রতিদিনই বিক্রি করছেন ক্যানে ক্যানে কলা আর পকেটে ভরছেন বাড়তি টাকা। এভাবে কলাচাষী পরিবারগুলোতে বিরাজ করছে স্বচ্ছল অবস্থা। তাদের দেখাদেখী অন্যান্য কৃষকরাও প্রস্তুতি নিচ্ছেন কলাচাষের। কলার বাজারমূল্য এবং চাহিদা এরকমই থাকলে শস্যভান্ডারখ্যাত এ জেলায় নিকট ভবিষ্যতে কলাচাষেও বিপ্লব ঘটতে পারে বলে ধারণা করছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ব্যাপক সফলতার মুখ দেখা এনায়েতপুরের কৃষক সরদার খায়রুল আলম,হাফিজুর রহমান, ইন্দাইয়ের আঃ সালাম, শেরপুরের শামীম, কার্লনার মোস্তাফিজুর রহমান, বুজরকান্তপুরের আঃ কুদ্দুস ও মহিনগরের হারুন জানান, প্রতিবিঘা জমিতে কলাচাষ করতে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার খরচ হয়। ওই জমির কলা বিক্রি করে খরচ বাদে লাভের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা। তারা জানান, কলা বিক্রির জন্য হাটবাজারেও যেতে হয়না। ক্রেতারা বাগান থেকেই ক্রয় করে নিয়ে যান।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আঃ মোমিন জানান, প্রতিবিঘা জমিতে সারিবদ্ধভাবে ৩৯০ থেকে ৪২০টি কলাগাছ রোপন করা যায়। রোপনের পর থেকে কৃষক ওই বাগান থেকে এক নাগাড়ে ২ থেকে ৩ বছর পর্যন্ত কলা বিক্রি করতে পারেন। রোপনকালীন ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচের পর থেকে পরবর্তী বছরগুলোতে বাগানের যত্ন ছাড়া কৃষকের আর তেমন খরচ হয়না। বাগানের কলা বিক্রির পাশাপাশি একই বাগান থেকে কৃষক কলার চারাগাছ বিক্রি করেও ভাল আয় করেন বলে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আঃ মোমিন জানান। বাগানের প্রতিটি চারাগাছ ১০ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হয়। উপজেলা কৃষি অফিসার কুষিবীদ বাবু অরুণ চন্দ্র রায় জানান, এবার উপজেলায় ১শ ৫০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ করা হয়েছে। তবে ক্রমেই কলাবাগানের সংখ্যা বাড়ছে বলেও তিনি জানান।