র‍্যাব পরিচয়ে ক্রসফায়ার এর ভয় দেখিয়ে চাঁদাদাবি।

ভোরের আভা ডেস্ক: বুধবার রাত আটটার দিকে হাতিরঝিল দিয়ে রামপুরায় যাচ্ছিলেন নাফিজুর রহমান (২২)। হঠাৎ ১০ থেকে ১২ যুবক নাফিজের পথরোধ করেন। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যান যুবকেরা। রাত ১০টার দিকে নাফিজের মা রেহানা আক্তারকে ফোন করে একজন বলেন, ‘আমরা র‍্যাব-১ উত্তরা থেকে বলছি। আপনার ছেলেকে ১০০টি ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পর ওকে ক্রসফায়ারে দেব। ছেলেকে বাঁচাতে চাইলে ১০ লাখ টাকা বিকাশ করো।’

বুধবার রাজধানীর রমনা থানা এলাকার মীরবাগের এ ঘটনায় আজ রোববার নাফিজের মা রেহানা আকতার মামলা করেন রমনা থানায়। মামলার এজাহারে তিনি এসব কথা বলেছেন।

অবশ্য নানা নাটকীয়তার পর নাফিজের মায়ের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করার পর ঘটনার দিন গভীর রাতে নাফিজকে ছেড়ে দেয় দুষ্কৃতকারীরা। আর পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ছয় যুবককে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আবেদন করে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত আজ রোববার ওই ছয় যুবককে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন।

নাফিজ ১৯ দিন আগে জাপান থেকে ঢাকায় ফেরেন। জাপানে লেখাপড়া করা নাফিজ এখন রামপুরায় মা-বাবার সঙ্গে থাকছেন। নাফিজের মা রেহানা আক্তার বলেন, বুধবার রাত ১০টার দিকে নাফিজের ফোন থেকে কল পান তিনি। অপর প্রান্ত থেকে বলা হয়, তাঁরা র‍্যাব-১-এর সদস্য। নাফিজ ১০০ পিস ইয়াবাসহ ধরা পড়েছেন। ছেলেকে যদি বাঁচাতে হয়, তাহলে ১০ লাখ টাকা দিতে হবে। তা না হলে নাফিজকে ক্রসফায়ারে দেবেন তাঁরা। এ সময় তাঁরা একটি বিকাশ নম্বর পাঠান।

রেহানা বলছেন, যখন ফোন দেওয়া হয় তখন বিকাশের দোকানগুলো সব বন্ধ হয়ে যায়। তখন দুষ্কৃতকারীরা তাঁকে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠাতে বলে। একপর্যায়ে যখন তাঁদের বলেন, এত রাতে এভাবে টাকা পাঠানো সম্ভব নয়, তখন তারা (অপহরণকারী) সরাসরি টাকা নিয়ে দেখা করতে বলে। তখন স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে রাত একটার পর অপহরণকারীদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ী রমনার মীরবাগের একটি নির্মাণাধীন ভবন এলাকায় যান রেহানা। রেহানা বলেন, মীরবাগে যাওয়ার পর অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাঁদের অন্ধকার একটি গলির দিকে নিয়ে যান। দুজন যুবক এসে বলেন, স্যারেরা তাঁর ছেলেকে চড়-থাপ্পড় মেরেছেন। আর কিছুই করা হয়নি। তখন এক লাখ টাকা দেওয়ার পর নাফিজকে কয়েকজন যুবক ধরাধরি করে তাঁদের সামনে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে নাফিজকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।

নাফিজের মা বলেন, ‘আমার ছেলেকে ওরা ফেরত দিয়েছে সত্যি, কিন্তু মারধর করে মারাত্মক আহত করেছে। নাফিজ যাতে ওদের চিনতে না পারে, সে জন্য চোখে বালু দেওয়া হয়েছে। দুই চোখ মারাত্মক জখম হয়েছে।’
রেহানার ভাষ্য, এ ঘটনা তিনি শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। পরে রেহানা আর নাফিজকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থল মীরবাগে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় ছয় যুবককে। তাঁদের মধ্যে সন্দেহভাজন প্রধান আসামি আক্তার (৩২) ও শামীম শিকদার (২০)। তাঁরা থাকেন রামপুরায়। আর মোহন হোসেন (২৬), সুজন মিয়া (২৫), চুন্নু শেখ (৩৯) থাকেন মধুবাগে। চুন্নু মিয়া (৩৫) রমনার মীরবাগ এলাকায় থাকেন।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার ছয় আসামি র‍্যাব পরিচয়ে নাফিজকে অপহরণ করে ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করেছে। এ ঘটনার পুরো রহস্য উদ্‌ঘাটনের জন্য আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদ কো হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, নাফিজের পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া এক লাখ টাকা এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। মামলার এজাহারে বলা হয়, অপহরণ করে নেওয়ার পর দুর্বৃত্তরা নাফিজের সামনে ১০০টি ইয়াবা সামনে রেখে ছবি তোলে। নাফিজের কাছে থাকা ৫০০ মার্কিন ডলার এবং তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়।

আদালতকেও পুলিশ এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, আসামিরা নাফিজকে পিস্তল দিয়ে হত্যার ভয় দেখায় এবং রড দিয়ে নির্যাতন করে। র‍্যাব-১ পরিচয়ে তাঁকে (নাফিজকে) ক্রসফায়ারে দেওয়ার হুমকি দেয়।
নাফিজের মা রেহানা আক্তার বলেন, ‘আমার নির্দোষ ছেলেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে। র‍্যাব পরিচয়ে আমার কাছ থেকে টাকা আদায় করেছে। আমি তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
প্রথম আলো

Next Post

আপনারা গুন্ডা হলে আমি মহাগুন্ডা, যুবলীগ চেয়ারম্যান।

রবি জুন ৩ , ২০১৮
ভোরের আভা ডেস্ক: আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ইফতার নিয়ে বিশৃঙ্খলা ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশৃংখকারীদের উদ্দেশে সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, ‘এটা কি মগের মুল্লুক? নিজেদের গুন্ডা মনে করেন? আমার চাইতে বড় গুন্ডা কিন্তু আপনারা নন। আপনারা গুণ্ডা হলে আমি মহাগুণ্ডা। এ সময় তিনি বিশৃঙ্খলাকারীদের ঘর থেকে তুলে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links