নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী মহানগরীতে মাদ্রাসার শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার দুপুরে চন্দ্রিমা থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাঝহারুল ইসলাম (৩৫)।
তার বাড়ি সৈয়দপুর জেলায়। তিনি নগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন শিরোইল কলোনি ৪ নং গলির শেষ মাথার মোড়ে অবস্থিত মাদ্রাসাতুল মদিনা দাওয়াতে ইসলাম মাদ্রাসায় শিক্ষকের দায়িত্ব পালন কালে এ বালাৎকারের ঘটনা ঘটান।
এ ঘটনায় ওই এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েটে। স্থানীয়রা হন্যে হয়ে খুঁজছে পাপি মাঝহারুল ইসলাম নামের শিক্ষককে। তিনি ওই মাদ্রাসায় দীর্ঘ দিন যাবত চাকুরী করে আসছেন। মাদ্রাসার জাকাতের টাকা আদায়সহ যাবতীয় দেখাশোনার দায়িত্বে পালন করতেন তিনি। যদিও এই মাদ্রাসার পরিচালক শামিম নামের একজন হাফেজ। এছাড়াও কাওমি মাদ্রাসার স্বীকৃতি বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য বলেও একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, গত সোমবার দুপুরে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ১২ বছরের এক ছাত্রকে বালাৎকারের দায়ে। শিশুটির মা থানায় এসে বলাৎকারের অভিযোগ করেন। তিনি নগরীর শিরোইল কলোনি হাজরাপুকুর মাছুয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা । গত ৮ রমজান দুপুরে মাদ্রাসায় শিক্ষক তার নিজের চেম্বারের ওই ছাত্রকে বলাৎকার করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। কয়জনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওসি জানান, মামলার তদন্তের স্বাথ্যে আপাতত নাম গুলি গোপন রাখা হচ্ছে। তবে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।
বলাৎকারের শিকার ওই ছাত্র জানায়, সে মাদ্রাসার একজন নিয়মিত ছাত্র। মাঝহারুল হুজুর তার চেম্বারে আমাকে প্রায় ডাকত এবং তার গাঁ হাত মালিস করতে বলত, এরই এক পর্যায়ে আমার গায়ের কাপড় খুলে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে দুইবার বালাৎকার করে। এ সময় বিষয়টি কাউকে বললে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেওয়ার হুমকিসহ হত্যার হুমকি দিতেন।
পরে তার অত্যাচার সহ্য করতে না পেড়ে মাদ্রাসার পরিচালক শামিম হুজুর বিষয়টি জানায় ওই ছাত্র। তিনিও বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য বলেন। কিন্তু মাঝহারুল হুজুরের বিচার না করে তিনি কৌশলে তাকে মাদ্রাসা থেকে সরিয়ে দেন।
এ বিষয়ে রাসিক ১৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনিরুজ্জামান শরিফ (মনির) তিনি বলেন, ভূক্তভোগী ওই ছাত্রের মা আমার বাসায় কাজ করে, তারা খুব গরিব তার বাবা একজন রিক্সা চালক ছেলেটির কথা শুনে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি তিনি বালাৎকারের মতো ঘৃনিত পাপের বিচার দাবি করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন, অনেক ছাত্রের সঙ্গে মাদ্রাসার শিক্ষক এ ধরনের আচরণ করেছেন। তারা লজ্জায় বিষয়টি প্রকাশ করেন নি।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার পরিচালক শামীম হুজুরের নিকট জানতে চাইলে, তিনি আমাদের খোলা কাগজকে বলেন, ছাত্র (১২) ও তার মা-বাবা আমার নিকট বালাৎকারের বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তৎক্ষনিক শিক্ষক মাঝহারুকে মাদ্রসা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন গত চার মাস পূর্বে আমি ওই মাদ্রাসার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছি। বর্তমানে চট্রগামের নাইম নামের এক হুজুর দায়িত্ব পালন করছেন। পুলিশে না দিয়ে মাঝহারুকে তাড়িয়ে দেয়ার কারন জানতে চাইলে তিনি প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।
এ দিকে স্থানীয়রা অভিযোগ তুলেছে পরিচালক শামীম ও বালাৎকারী মাঝহারুল সৈয়দপুর জেলার একই গ্রামের বাসিন্দা হওয়ার সুবাধে তাকে বাঁচাতেই কৌশলে তাকে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন পরিচালক শামীম হুজুর।
এছাড়াও ২৬ রমজান মাদ্রাসায় জাকাতের টাকা অত্মসাত নিয়ে বৈঠক বসলেও বালাৎকারের বিষয়টি ওই বৈঠকে স্থান পায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে।