ব্যাংকের এমডি কিংবা মালিকপক্ষ হলেও ছাড় দেয়া হবে না।

আভা ডেস্ক :ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে যারাই বাধা সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ব্যাংকের এমডি কিংবা মালিকপক্ষ হলেও ছাড় দেয়া হবে না। কেননা, দেশে বিনিয়োগের স্বার্থে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

তাই এ সিদ্ধান্ত সবাইকে মেনে নিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ছাড়াও সরকারের বিভিন্ন সংস্থা নিবিড়ভাবে কাজ করছে।

সূত্র জানায়, গত ২ জুলাই ঋণের সুদের হার কমানোর বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করে। ওই বৈঠকে কয়েকটি ব্যাংকের এমডি ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে এখনই নামিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন।

তারা বলেন, ঋণের সুদের হার কমাতে হলে কম সুদে আমানত পেতে হবে। সে বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হয়নি। বাজারে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে কম সুদে আমানত পাওয়া কঠিন হবে। এ কারণে তারা ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ক্ষেত্রে আরও সময় চান।

কয়েকজন এমডির এমন মনোভাবের বিষয় অবহিত হওয়ার পর বিরোধিতাকারীদের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একটি সংস্থা। এরপর এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক মহলকে অবহিত করাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়। তাদেরকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।

এদিকে ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন সংস্থার জোরদার এ মনিটরিং কার্যক্রমকে বিনিয়োগকারী শিল্পপতিরা সাধুবাদ জানিয়েছেন।

তারা মনে করেন, দেশে ভয়াবহ বেকার সমস্যা দূর করতে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ঋণের সুদের হার অনেক আগেই সিঙ্গেল ডিজিটে আনা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বিলম্বে হলেও তারা প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান এবং যে কোনো মূল্যে এর বাস্তবায়ন দেখতে চান। তাদের মতে, ব্যাংকিং সেক্টরে বিরাজমান দুর্নীতি, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাৎ কঠোর হাতে বন্ধ করা সম্ভব হলে সিঙ্গেল ডিজিটে সুদ নিয়েও ব্যাংকগুলো ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবে।

এ বিষয়ে প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যান ডা. এইচ বিএম ইকবাল যুগান্তরকে বলেন, সরকারের উচ্চমহল থেকে ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকও এটি কার্যকরে নির্দেশনা দিয়েছে। এ নির্দেশনা ব্যাংকগুলোকে পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে এনেছি। অন্যদের কথা বলতে পারব না। যারা ব্যাংকের লাইসেন্স দিয়েছে তাদের নির্দেশনা শুনতে হবে। যে এমডি এটি কার্যকরে ব্যর্থ হবেন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএবি।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যুগান্তরকে বলেন, ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা রয়েছে। সেটি নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কাজ করছে। ব্যাংকের এমডিদেরও বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়টি তদারকির পাশাপাশি কোন খাতে কীভাবে কমানো যায় সেটিও বিশ্লেষণ করে ব্যাংকগুলোকে সময়ে সময়ে নির্দেশনা দিচ্ছে।

অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনিস এ খান যুগান্তরকে বলেন, ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার ঘোষণা কিছু ব্যাংক বাস্তবায়ন করেছে। বাকি ব্যাংকগুলোর বাস্তবায়নও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে কিছু ঋণের ক্ষেত্রে একটু সময় লাগবে। সবাই মিলেমিশে কাজ করলে এটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।

প্রসঙ্গত, এর আগে মে মাসে গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর এক সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদকে নির্দেশনা দেন। এ ব্যবসায়ী নেতা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য। পরে তিনি এ বিষয়টি বিএবির বৈঠকে উপস্থাপন করেন।

এর আলোকে ২০ জুন বিএবি সভায় সব ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার ৯ শতাংশে এবং আমানতের সুদহার ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেয়। সুদের এ হার তারা ১ জুলাই থেকে কার্যকর করার কথা জানায়। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়া হয়। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ ব্যাংককে বলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক নানা ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ ও ব্যাংকের এমডিদের সঙ্গে বৈঠক করে এ হার কমানোর সিদ্ধান্তে উপনীত হয়।
যুগান্তর

Next Post

যেটি দেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর নয়।

সোম জুলাই ৯ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : আড়াই মাসেও সঞ্চালন লাইনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারেনি দেশের প্রথম ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল। কখনও পাইপলাইনে ত্রুটি, কখনও সাগরের তীব্র স্রোতের অজুহাত দেখিয়ে সময়ক্ষেপণ করছে মার্কিন কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জি। রোববার সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী পাইপলাইনের ছিদ্র মেরামত সম্পন্ন হলেও এখন পর্যন্ত মূল পাইপলাইনের সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়নি ভাসমান […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links