দক্ষিণ কলকাতার গলফ গ্রিন এলাকায় গোলাম মহম্মদ শাহ রোডের নিজ বাসার তিনতলার ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছেন চিন্ময় রায়। ভারতের বাংলা ছবির এই কিংবদন্তি অভিনেতাকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় ওই ভবনের নিচ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর প্রতিবেশীরা তাঁকে দ্রুত মুকুন্দপুরে বাইপাসের পাশে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। তাঁকে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে চিকিৎসা দিচ্ছেন। আজ তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার হওয়ার কথা আছে।
আজ রোববার সকালে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চিন্ময় রায়ের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল আছে। গতকালের তুলনায় আজ তিনি ভালো আছেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়া হয়। আজ সকালে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তিনি স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন। তাঁর পা আর হাতের হাড় ভেঙে গেছে। মাথায় আঘাত পেয়েছেন, তবে তাঁর মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত লেগেছে। আজ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করা হচ্ছে। এরপর চিকিৎসকেরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আজ যেকোনো সময় তাঁর দেহে অস্ত্রোপচার করা হবে। শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও তাঁর আশঙ্কা এখনো কাটেনি—এ অভিনেতার পরিবারের মানুষজনকে তেমনটাই জানানো হয়েছে হাসপাতাল থেকে। চিন্ময় রায়ের বয়স ৭৭।
চিন্ময় রায়চিন্ময় রায়বাসার ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পর অনেক প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে যাদবপুর থানার পুলিশ। এরপর সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, এটি আত্মহত্যার চেষ্টা নাকি দুর্ঘটনা, এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। চিকিৎসকেরা অনুমতি দিলে চিন্ময় রায়ের সঙ্গেও কথা বলবে পুলিশ।
এরই মধ্যে পুলিশের সামনে কিছু প্রশ্ন এসেছে। তিনতলার ওপরে ছাদের চারদিকে দেয়াল দেওয়া রয়েছে। এই দেয়ালের উচ্চতা আড়াই ফুট। এর ওপর দিয়ে চিন্ময় রায় কীভাবে নিচে পড়ে গেলেন!
তবে বরেণ্য এ অভিনেতার পরিবারের পক্ষ থেকে তাঁর ছেলে বলেন, ‘বাবা বিকেলে ছাদে একা একা হাঁটতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে পায়চারি করার সময় হোঁচট খেয়ে নিচে পড়ে যান। তা ছাড়া তিনি চোখেও কম দেখেন।’
‘চার মূর্তি’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘ননীগোপালের বিয়ে’র মতো অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।