নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী নগরীতে টাকা আত্মসাৎ এর পরিকল্পনায় ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়েছেন নূরে হাবিব ডুজন(৩৮)। ডুজন চন্দ্রিমা থানা এলাকার মৃত হাবিব উদ্দিনের ছেলে। নাটক সাজিয়ে নুরে হাবিব ডুজন বোয়ালিয়া মডেল থানায় ছয় লাখ টাকা ছিনতাইয়ের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, গতকাল বিকেলে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, আলুপট্টি শাখা, রাজশাহী হতে তার ব্যক্তিগত একাউন্ট থেকে ৬,০০,০০০/-(ছয় লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে একটি শপিং ব্যাগের ভিতরে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় ১৫.১৫ ঘটিকায় রাজশাহী কুমারপাড়াস্থ এস.এ পরিবহণের সামনে দিয়ে ডিজিএফআই অফিসের পার্শ্বে পৌঁছালে রাণীবাজারের দিক থেকে একটি কালো কালারের মোটর সাইকেলে ০২ জন ব্যক্তি মাথায় হেলমেট পরিহিত অবস্থায় এসে মোটর সাইকেলে ধাক্কা দিয়ে তার নিকটে থাকা টাকার ব্যাগটি ছিনিয়ে নিয়ে আলুপট্টির দিকে চলে যায়। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়।
মামলাটি রুজুর পরপরই আরএমপি’র সম্মানিত পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক নির্দেশে ও পরিকল্পনায় অফিসার ইনচার্জ নিবারন চন্দ্র বর্মন পিপিএম এর নেতেৃত্বে তদন্তকারী অফিসার এসআই/মোঃ গোলাম মোস্তফা সহ বোয়ালিয়া মডেল থানার একটি চৌকস পুলিশ টিম ব্যাপক তদন্ত সহ সর্বাত্বক অভিযান শুরু করে। তদন্ত সার্থে বাদী নূরে হাবিব ডুজনকে (৩৮) ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক ও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা সহ প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, আলুপট্টি শাখা, রাজশাহীর সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ও নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) এর একাউন্ট এর স্টেটমেন্ট সংগ্রহপূর্বক পর্যালোচনায় দেখা যায়, বাদীর একাউন্ট-এ মাত্র ৮৩/-(তিরাশি) টাকা আছে এবং সে তার ব্যাংক ১১/০১/২০২১ খ্রিঃ কোন টাকা উত্তোলন করেনি পাশাপাশি সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজেও ব্যাংকে তার অবস্থানের কোন তথ্যচিত্র নাই। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসাবাদে নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) ঘটনার বিষয়ে একেক সময় একেক ধরণের কথাবার্তা বলতে শুরু করে। বিভ্রান্ত মুলক বার্তা দিয়ে পুলিশকে হয়রানি করতে থাকেন।
একপর্যায়ে সে স্বীকার করে এবং লিখিতভাবে জানায় তার বড় ভাই মোঃ রওশন আলী (আমেরিকা প্রবাসী) এর ডিপিএস থেকে ৬,০০,০০০/-(ছয় লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে খরচ করে দিয়েছে। প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড, শ্যামলী শাখা, ঢাকায় তার ডিপিএস ছিল। সে ডিপিএস থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা উত্তোলন করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ৬,০০,০০০/-(ছয় লক্ষ) টাকা কেটে নিয়ে অবশিষ্ট টাকা তাকে প্রদান করে। নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) এর বড় ভাইয়ের টাকা তাকে না জানিয়ে খরচ করে দেয়ায় সে ৬,০০,০০০/-(ছয় লক্ষ) টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনার অবতারণা করেছে। প্রকৃতপক্ষে নূরে হাবিব ডুজন (৩৮) প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেড ব্যাংক হ’তে কোন টাকা উত্তোলন করেনি। মামলাটির তদন্ত শেষে চূড়ান্ত প্রতিবেদনের সংগে বাদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করায় পেনাল কোড ১৮২ ধারায় প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
এভাবে বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষণের মাধ্যমে সম্পূর্ণ ক্লু-লেস ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে।
এ বিষয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নিবার চন্দ্র বর্মন বলেন, নিজের ভাইয়ের টাকা আত্মসাৎ করে ছিনতাইয়ের নাটক সাজান নুরে হাবিব ডুজন। পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে ক্লুলেস মামলার রহস্য উদঘাটন করেন, সেই সাথে বাদির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।