প্রেসবিজ্ঞপ্তিঃ উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব। আজ সোমবার এক শোক বার্তায় এই শোক প্রকাশ করেন বরেন্দ্র প্রেসক্লাব ।
শোক বার্তায় সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বলেন, ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত উপমহাদেশের প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের মৃত্যুতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। তাঁর মৃত্যু দেশ ও জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি তাঁর সাহিত্যকর্মের মাধ্যমে আমাদের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন।’
শোক বার্তায় নন্দিত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাব।
উল্লেখ্য, সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অদূরে বিশ্ববিদ্যালয় হাউজিং সোসাইটিতে (বিহাস) নিজ বাসভবন ‘উজান’- এ তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। তিনি এক ছেলে ও তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
প্রসঙ্গত, ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার হাসান আজিজুল হক ১৯৩৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বর্তমান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার যবগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত এবং একান্নবর্তী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা ভাষার অন্যতম প্রধান কথাসাহিত্যক হিসেবে পরিগণিত। ষাটের দশকে আবির্ভূত এই কথাসাহিত্যিক তার সুঠাম গদ্য এবং মর্মস্পর্শী বর্ণনাভঙ্গির জন্য প্রসিদ্ধ।
জীবনসংগ্রামে লিপ্ত মানুষের কথকতা তার গল্প-উপন্যাসের প্রধানতম অনুষঙ্গ। রাঢ়বঙ্গ তার অনেক গল্পের পটভূমি। আগুনপাখি (২০০৬) হক রচিত প্রথম উপন্যাস। তিনি ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে একুশে পদকে ও ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে। এই অসামান্য গদ্যশিল্পী তার সার্বজৈবনিক সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতি স্বরূপ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ‘সাহিত্যরত্ন’উপাধি লাভ করেন।
জীবনের অধিকাংশ সময় তিনি রাজশাহীতে কাটিয়েছেন। ১৯৭৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত একনাগাড়ে ৩১ বছর অধ্যাপনা করেন। এরপর থেকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে নগরের চৌদ্দপায় এলাকার আবাসিক এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন।