আভা ডেস্কঃ ইয়েমেনি মডেল ইনতিসার আল-হাম্মাদিকে অপহরণের পর ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে তাকে নির্যাতন, নিপীড়ন ও তার সতীত্ব পরীক্ষার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
দেশটিতে হুতি নিয়ন্ত্রিত কারাগারে ওই মডেলকে একটি বিচ্ছিন্ন কক্ষে প্রায় দুই বছর রাখা হয়।
তিনি বলেন, চলতি সপ্তাহে বিদ্রোহী গোষ্ঠীর এক সদস্য উম জায়েদ তার শরীরে বিদ্যুতের তার জড়িয়ে দেন। এ সময় তার মুখ ও শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষতের সৃষ্টি হয়।
ওই তরুণীর মুখে পুরে দেয়া হয়েছিল ‘খাত’ নামের যৌন-উত্তেজক চুইংগাম। প্রায় অচেতন অবস্থায় তাকে কারাগারের প্রাচীরের বাইরে ফেলে দেয় বিদ্রোহীরা।
যৌন নিপীড়ন ও শরীরিক অত্যাচারের নানা দিক নিয়ে এ সময় তিনি কথা বলেন সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের সঙ্গে।
এর আগে গত বছর এই মডেলকে যৌনকর্মী ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০ বছর বয়সী মডেল ইনতিসার আল-হাম্মাদি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি জানান, বিদ্রোহী গোষ্ঠীটির সঙ্গে একযোগে কাজ করার প্রস্তাব নাকচ করে দিলে তার ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতন চালান গোষ্ঠীর সদস্যরা।
এই মডেলকে যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে ফুঁসে ওঠেন আরব দেশ ইয়েমেনের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা, আইনজীবী, সাংবাদিক ও সরকারি কর্মকর্তারা।
ইয়েমেনের তথ্যমন্ত্রী মুয়াম্মার আল-ইরিয়ানি বলেন, ‘হুতি বিদ্রোহীদের হাতে জোরপূর্বকভাবে অপহরণ, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন মডেল ইনতিসার। তাকে অন্যায় ও অন্যায্যভাবে আটকে রেখেছিল বিদ্রোহীরা।’
২০২০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ইয়েমেনের সানা অঞ্চলের একটি রাস্তা থেকে ইনতিসারসহ দুজনকে তুলে নিয়ে যায় বিদ্রোহীরা।
এই মডেলসহ আরও কয়েকজন শুটিংয়ে যাওয়ার সময় সানায় হুতি অধ্যুষিত হাদ্দা অঞ্চলে তাদের বহনকারী গাড়ি থামিয়ে বিদ্রোহীরা অপহরণ করে নিয়ে যায়।
ইয়েমেনি বাবা ও ইথিওপিয়ান মায়ের সন্তান ইনতিসার আল-হাম্মাদি নিজ দেশে রক্ষণশীল সমাজে বেড়ে ওঠেও মডেল হওয়ার সাহস দেখান।
ইয়েমেনের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের পাশাপাশি পশ্চিমা সংস্কৃতির বিভিন্ন পোশাকে বেশ কিছু ছবি প্রকাশ হওয়ার পর ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান তিনি। এ সময় গণমাধ্যমে টক শোতে আন্তর্জাতিক মানের মডেল হওয়ার স্বপ্নের কথা বলেন তিনি।
এদিকে ইনতিসারসহ অপহৃত অভিনেত্রীদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় ড্রেস কোড ভাঙার অভিযোগ আনে হুথি বিদ্রোহীরা।