নিজস্ব প্রতিবেদক:
নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে অঘোষিত ‘পরিবহন ধর্মঘটে’ তৃতীয় দিনেও চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজশাহীর সাধারণ মানুষ। রোববার সকাল থেকে বিভাগীয় শহর রাজশাহী থেকে আন্তঃজেলা বা দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। শুধু বিআরটিসি বাস চলাচল স্বাভাবিক অাছে।
পর্যাপ্ত বাস না থাকায় আশপাশের জেলার সঙ্গে সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে অচল হয়ে পড়েছে রাজশাহী। স্বাভাবিক কাজকর্মে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এদিকে জরুরি কাজে গন্তব্যে স্থানে পৌছানোর জন্য যানবাহন না পেয়ে মানুষজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন।
ভুক্তভোগী পরশ জানান, জরুরী কাজে নওগাঁ সদরে নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য সকালে রওনা হয়েছিলেন তিনি। কাউন্টারে এসে শোনেন বাস বন্ধ। অবশেষে সিএনজি নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করেন তিনি।
আরেকজন ভুক্তভোগী শামিম হোসেন বলেন, তিনি তার স্ত্রীকে একটি বেসরকারী সংস্থায় চাকুরীর ইন্টারভিউ দিতে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে জানতে পারেন বাস বন্ধ। এখন তার স্ত্রীর চাকরীটা আর হবেনা বলে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।
ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, পরিবহন না থাকায় তারা পণ্য বিক্রি করতে পারছেন না। এতে তারা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
রাজশাহী সড়ক পরিবহন গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মনজুর রহমান পিটার বলেন, শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। তবে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে উচ্ছৃঙ্খল একটি গোষ্ঠী। মূলত তারাই বাসে ভাঙচুর চালাচ্ছে। তাই নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যাত্রীদের হয়রানির কথা ভেবে দু’দিন সন্ধ্যা ৬টা থেকে সব রুটে বাস চালানো হয়। কিন্তু পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্তে রোববার থেকে রাতেও বাস চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
এদিকে, দূরের গন্তব্যের জন্যও যাত্রীরা রিকশা-অটোরিকশায় উঠছেন। তবে এর জন্য তাদের দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া গুণতে হচ্ছে। রাজশাহী স্টেশন এলাকা থেকে দেখা গেছে বিভিন্ন অটোরিক্সা চালক চাঁপাই-কানসাট বলে হাক দিতে। তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়া নিয়ে যাত্রী নিয়ে যাচ্ছেন।
রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটের বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট কর্পোরেশনের (বিআরটিসি) বাসগুলো শুরুর দিন থেকেই সিডিউল অনুযায়ী চলাচল করছে। ফলে রাজশাহী থেকে বর্তমানে রংপুর, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে সব সময় বিআরটিসি’র বাস না থাকায় এবং বাস কম থাকায় দুর্ভোগ কাটছে না।
