রাজশাহীতে ভয়ংকর কিছু নারী প্রতারক, প্রতারণার জালে প্রভাবশালীরা ।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে ভয়ংকর কিছু নারী প্রতারকের শিকার হয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন অনেক পরিবার । দীর্ঘ অনুসদ্ধানে উঠে এসেছে এমন কিছু ভয়ংকর চিত্র । নারী নির্যাতন মামলাকে হাতিয়ার করে ফাঁসানো হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । এই কাজগুলো করছে বহু বিবাহিত কতিপয় সুন্দরী নারীচক্র । এই সকল প্রতারক নারী চক্রের ফাঁদে পড়েও মুখ খুলতে নারাজ ভুক্তভুগিরা । সমাজে তাদের আছে মানসম্মান ও গ্রহনযোগ্যতা, বিধান প্রতারণার শিকার হয়েও মুখ খুলতে পারছেন না বা আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন না তারা ।

অনুসন্ধান সূত্রে জানা গেছে, প্রথমে সুন্দরী নারী দিয়ে তৈরি করা হয় ফাঁদ। সেই ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারাতে হয় ভুক্তভোগীদের। নারীরা নিজেদের বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেয়। আবার কখনো ব্যবসায়ী-শিল্পপতির মেয়ে-ভাগ্নি বা অন্য কিছু পরিচয় দিয়ে থাকেন এরা। চলাফেরাও করে দামি গাড়িতে। পোশাকে, চলনে থাকে আভিজাত্যের ছাপ। তাদের টার্গেট বিত্তশালীরা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা প্রথমে সখ্যতা গড়ে তোলে। মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে উত্তেজক কথা বলে। বশে আনার জন্য নানা কৌশল অবলম্বন করে। লোভ দেখানো হয় একান্ত আপন করে পাবার। আয়োজন করা হয় ঘরোয়া পার্টির। আমন্ত্রণ জানানো হয় টার্গেট করা ব্যক্তিদের। সেখানে ইয়াবা, মদের আসর বসানো হয়। টার্গেট করা ব্যক্তিকে নেশার জালে ফেলে তারা তাদের প্রকৃত পরিচয় দেয়।

মূলত তারা প্রতারক চক্র। একজন নয় একাধিক নারী-পুরুষ এসব প্রতারক চক্রে কাজ করে। নেশায় মত্ত থাকা পুরুষদের বিবস্ত্র করে ছবি তোলে। এমনকি চক্রের নারী সদস্যরাও বিবস্ত্র হয়। বিছানায় নিয়ে আপত্তিকর অবস্থায় ভিডিও ধারণ করে। অনেক সময় গোপন ক্যামেরায় দৃশ্য ধারণ করা হয়। ধারণ করা এসব ভিডিও, ছবি দেখিয়ে পরে ভুক্তভোগীর সঙ্গে করা হয় নানা প্রতারণা। এসব দৃশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে হাতিয়ে নেয়া হয় বিপুল পরিমাণ অর্থ।

প্রতিনিয়তই এমন অপরাধ ঘটলেও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভুগিরা । বরং তারাই একের পর এক হয়রানির শিকার হয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে হেনস্থ হচ্ছেন ।

ইতিপূর্বে এই প্রতারক চক্রে ফেঁসেছেন অনেক সরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারী । যা পরবর্তীতে সংবাদ মাধ্যমেও উঠে এসেছে। রাজশাহীতে রেলওয়ে এক প্রকৌশলীকে প্রতারনা করে বিয়ে করেন প্রতারক চক্রের এক নারী । পরে সেই নারী তাকে নানাভাবে ব্লাকমেইল করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ডিভোর্স দেন সেই প্রকৌশলী। কিন্তু ডিভোর্স দিয়েও ভাল থাকতে পারেনি সেই প্রকৌশলী । কারণ নারী নির্যাতন মামলায় তাকে আদালতে আসতে হয়েছে ।

এরুপ হাজারও অজানা নির্যাতনে ভুগছেন অনেক পুরুষ । নিরব কান্নায় কেঁদে যাচ্ছেন প্রতিনয়তই ।

নাম না প্রকাশ করা শর্তে রেলওয়ে এক চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী জানান, এক মেয়ের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় শেষে বন্ধু হয়। অতপর তার দাওয়াতে তার বাসায় গেলে জোর পূর্বক বিয়ে ও চেক বই সহ অনেক কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে ব্লাকমেইল করতে থাকেন সেই নারী । পরে সেই কর্মচারী জানতে পারে তারা নারী প্রতারক হিসাবে বহু বার জেলও খেটেছে । মুলত তাদের কাজই বিয়ে করে মোটা অংকের অর্থ হাসিলের চেষ্টায় মামলা করা ও নিষ্পত্তির নামে সমঝোতা করা । পরে ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে সেই ঘটনায় রক্ষা পায় সেই রেল কর্মচারী ।

অন্য একটি ঘটনায় একজন শিক্ষক জানায়, আমিও এমন প্রতারনার শিকার হয়েছি । পরিবার পরিজন ও সামাজিক সম্মানের ভয়ে আইনের আশ্রয়ে যেতে পারিনি । সেই ঘটনায় ৪০ লক্ষ টাকা তার খোয়া গেছে ।

বর্তমান এক প্রতারক নারী সামাজিক মাধ্যমে প্রতারণার শিকার একজন সম্মানিত ব্যাক্তির সম্মান নিয়ে ছিনিমি খেলছেন । সেই প্রতারক নারী নাম লিজা যে কিনা ২০০৮ সালে কলগার্ল হিসাবে দুই খদ্দের সহ আটক হয়েছিলেন পুলিশের হাতে । (সূত্রঃ স্থায়ী সংবাদ পত্র)

ঘটনার বরাতে জানা যায়, নগরীর রামচন্দ্রপুর একটি বাড়িতে অসামাজিক কাজে লিপ্ত অবস্থায় দুই খদ্দেরসহ আটক হন লিজা । লিজা সিপাইপাড়া এলাকার চাঁদ মিয়ার মেয়ে । সেই সময় থেকে এখন অবধি তার অপরাধ থেকে নেই । তার এই অপরাধের সাথে আছে কিছু প্রভাবশালী ও প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা । সেই সময় লিজার উশৃংখল জীবনের সামাজিক অবক্ষয়ে এলাকাবাসীর চাপে অন্যত্র যেতে হয়েছে।

লিজার পাহাড় পরিমান অপকর্ম লিখে শেষ করা যাবে না। তার অপকর্মের সিড়ি সাহেব বাজার লেডিস টেইলার্স নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে । সেখান থেকে সুন্দরী নারী দিয়ে সরকারী ও বেসরকারী অফিস আদালতের অর্থশালী মানুষজনকে জিম্মি করে অর্থ আদায় শুরু । এরপর আর থাকে পিছে ফিরে দেখতে হয়নি । এনজিও প্রতিষ্ঠান খুলে প্রতারনার আরেক ধাপে উন্নতি করেন লিজা । উচ্চ সুদে দাদন ব্যবসায় নেমে পরেন তিনি । প্রথম জীবনে একজন হিন্দু যুবকে ফাসিয়ে তার পরিবারের নিকট মোটা অংকের টাকা নিয়ে সমঝোতা করেন । তারপর সিটি কলেজ এলাকার মাছ বিক্রেতার বিবাহিত ছেলেকে ফাঁসিয়ে অর্থ আদায় করেন লিজা । তার কথার ভিন্নতর হলেই নেমে আসত নির্যাতন, মামলা হামলা সহ নানা ভাবে হয়রানি করতো লিজা জানা গেছে অনুসন্ধানে । আর এসকল লিজার মত নারীদের পিছনের হাতিয়ার মানবাধিকার কর্মী নামে মহিলা এনজিও চালানো কিছু ভুয়া প্রতিষ্ঠান । লিজার ছিল বস্তির মেয়ে একেবারে অসহায় দিন আনে দিন খায় পরিবারের একটি মেয়ে । এখন সে প্রায় ২ কোটি টাকা মালিক । শুধু লিজা নয় এরুপ হাজারো লিজা ঘুরছে নগরজুড়ে যাদের মুল হাতিয়ার সুন্দর চেহারা, আর প্রতারনা করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া । নগরজুড়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশ পাওয়া নারী প্রতারক ও ব্লাকমেইলারা হলেন, হিরা, ঐশী, লিমা, সোভা, ফাইমা ।

সামাজিকভাবে এখনই এদের দমন করা না গেলে ভয়ংকর রুপে এরা নেমে আসতে পারে সমাজের সামাজিক অবক্ষয়ে বলে জানিয়েছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা । বিশেষজ্ঞরা বলছেন এটা দমনে প্রশাসনের নজরদারি দরকার, অন্যথায় অনেক নিরিহ পরিবার তাদের জালে বা ফাঁদে শেষ হয়ে যাবে । এটা এমন এক অপরাধ যেখানে সম্মানের ভয় ভিষণভাবে কাজ করে সাথে অর্থ খোয়ার বিষয়তো থাকেই ।

এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মিডিয়া মূখ্যপাত্র অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, ভুক্তভুগি পরিবাররা যদি অভিযোগ দেয় তাহলে অভিযোগ আমলে নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে । অভিযোগ আসে না বলেই আমরা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারি না । তবে এ ধরনের ঘটনা যেন না ঘটে, সে বিষয়ে পুলিশ তৎপর আছে

Next Post

চট্টগ্রামে করোনায় এসআইসহ ২ জনের মৃত্যু

রবি জুন ৭ , ২০২০
এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে করোনা ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে পুলিশের ১ এসআই সহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহত পুলিশ পরিদর্শকের নাম একরাম হোসেন(৪৫), তিনি সীতাকুণ্ড থানায় উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ৬ জুন,শনিবার সকালে সীতাকুণ্ড উপজেলা সদরের উত্তরবাজার এলাকার বাসায় পুলিশ কর্মকর্তা একরাম হোসেনের মৃত্যু হয় বলে জানা […]

এই রকম আরও খবর

শিরোনাম

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links