ফুলপুর(ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ ছোট বেলা থেকে শুনছি, শিক্ষক নাকি জাতি গড়ার কারিগর আর শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড । আর সেই শিক্ষক, ছাত্র/ছাত্রীকে যা শিক্ষা দিবে তাই শিখবে ! ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ছাত্রীর সাথে অসামাজিক কাজে জড়িত অবস্থায় মাসুদ রানা (৪৫) নামে এক লম্পট শিক্ষককে আটক করেন এলাকাবাসী । পরে তাকে পুলিশে দেয় এলাকাবাসী । এই ধরণের লম্পট শিক্ষককের কারনে পুরো শিক্ষক জাতির বদনাম । এ লজ্জা যেন গোটা শিক্ষকজাতিকে করেছে মাথানিচু ।
৯৯৯ নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে গত ২৪ জানুয়ারী রোজ শুক্রবার রাতে পৌর আমুয়াকান্দা বাজারের ভাড়া বাসা থেকে ছাত্রীসহ পুলিশ তাকে আটক করে। মাসুদ ফুলপুর থানা রোডস্থ মেধা বিকাশ কোচিং সেন্টারের শিক্ষক ও পয়ারী গোকুল চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন (নতুন তৈরী) “ঢাকা আইডিয়াল স্কুল” এর পরিচালক। সে ঢাকা মুগদা এলাকার মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে। দীর্ঘদিন ধরে আমুয়াকান্দা এলাকায় ভাড়ায় থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং ও প্রাইভেট পড়াতেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাত ৮টার দিকে এক ছাত্রী তার বাসায় প্রাইভেট পড়তে আসলে তার সাথে অসামাজিক কাজে জড়িত হয় মাসুদ । এসময় স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তাদের আটক করে গণধোলাই দেয় এবং ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানায় । পরে ৯৯৯ নাম্বার থেকে ফোন পেয়ে ফুলপুর থানা পুলিশ ভিকটিমসহ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো জানা যায় একই অপরাধে ১ থেকে দেড় বছর আগে কোচিং সেন্টারের এক ছাত্রীর সাথে এরকম ঘটনা ঘটলে এলাকাবাসী তাকে ওই মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়ে দেওয়ার কথায় মিমাংসা হয়। তারপর কিছুদিন গেলে সেই ঘটনা ধামাচাপা হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, লম্পট শিক্ষকের নামে আরও নানান অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগও রয়েছে বলেও জানান এলাকাবাসী।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, তার নেতৃত্বে পরিচালিত “ঢাকা আইডিয়াল স্কুলে” মোট ৫জন শিক্ষকের মধ্যে সে ছাড়া বাকিরা সবাই মহিলা। এমনকি ভর্তির ক্ষেত্রে ছাত্রীদেরকেই বেশি প্রাধান্য দেয় সে।
এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক এক ছাত্র বলেন, তিনি তার ঢাকার গ্রামের বাড়ি থেকেও এসব অসামাজিক কার্যকলাপের কারণে এলাকার মানুষ তাকে বের করে দেয়। তারপর সে এখানে এসে স্থান নেন।
এ ঘটনায় ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকরা বলেন, দেশের আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠা প্রাইভেট কোচিং সেন্টার গুলোতে অসংখ্য মাসুদ শিক্ষকের ছদ্মবেশে ঘাপটি মেরে আছে অসংখ্য লম্পট শিক্ষক । এ ধরনের শিক্ষকের নিকট আমাদের ছেলেমেয়েরা নিরাপদ নয় । আমরা এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এই ভন্ড শিক্ষকদের ফাঁসি দেওয়া উচিৎ। এদের মত শিক্ষকের ফাঁসিতে বেচে যেতে পারে হাজারো মেধাবী ছাত্রী।
এ ব্যাপারে ফুলপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই মেহেদী হাসান সুমন এর কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকার অভিযোগে মাসুদ নামের এক শিক্ষককে স্থানীয় লোকজন আটক করে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানায়। পরে তাকে আটক করে ২৫জানুয়ারী রোজ শনিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং ছাত্রীকে নিজ পরিবারের কাছে হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।