রাজশাহী জেলার সর্বত্র চলাচলের রেল পথ কতটা ঝুঁকিপুর্ণ?

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাঘা আড়ানী সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আব্দুলপুর পযর্ন্ত রেল সেতুতে লোহার ক্লিপের পরিবর্তে কাঠের গুজ ও বাঁশের বাতা দিয়ে স্লিপার আটকিয়ে রাখা হয়েছে।

ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সেতুগুলো দীর্ঘদিন ধরে নড়বড়ে অবস্থায় থাকলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ১৩টি ট্রেন দু’বার করে চলাচল করছে,  উক্ত সেতুগুলোর উপর দিয়ে  ।

শুক্রবার দুপুর ২ টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখা সেতুর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ণ আড়ানী সেতু,, আর সেতুতে ওপর স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর জন্য স্লিপারের দুই পাশে আটটি করে পিন দেয়ার কথা থাকলেও রয়েছে কোনোটিতে দুটি, আবার কোনোটিতে তিনটি, আবার কোনোটিতে একটিও নেই। এছাড়া কোনো স্থানে নাট-বল্টু, ক্লিপ, হুক কিছুই নেই।

দুই লাইনের গোড়ায় ফিসপ্লেটে চারটি নাট-বল্টু থাকার কথা। কিন্তু স্লিপারে তা নেই। স্লিপারগুলোও বহু যুগের পুরাতন। বেশির ভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানোর কিছু পিন খোলা, সেগুলো হাত দিয়ে বের করা যায়। আবার লোহার পিনের জায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে কিছু কাঠের গুজ। স্লিপারের লোহার মোটা পাতের পরিবর্তে ব্যবহার করা হয়েছে পাতলা প্লেন সিট ও স্লিপার আটকানোর জন্য ব্যবহার করা হয়েছে বাঁশের বাতা।

জানা গেছে, সেতুটিতে ২৬২টি স্লিপার রয়েছে। এতে দুই হাজার ৯৮টি ক্লিপ থাকার কথা। কিন্তু সেখানে রয়েছে মাত্র ৯২৮টি। এর কিছু অংশে কাঠের গুজ এবং অন্য জায়গায় ফাঁকা রয়েছে। স্লিপারগুলোর মধ্যে ৬০টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সেতুটির পূর্ব দিক থেকে দুটি পিলারের পর তিন নম্বর পিলারটির নিচে কয়েক বছর আগে গোড়ায় পাথর ফেলা হয়। সেই পাথরগুলো পিলার থেকে দূরে সরে গেছে। সেখানকার পিলারের গোড়ায় পাথর-মাটি কিছুই নেই। ফলে পিলারের উত্তর দিকের নিচে ফাঁকা হয়ে গেছে। ফলে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।

এ বিষয়ে আড়ানী স্থায়ীরা বলেন, প্রতিনিয়ত সেতু দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় তিন নম্বর পিলারটি বারবার কেঁপে ওঠে।

পি-ডব্লিউ আই-এর ওয়েম্যানের প্রধান ইয়াকুব আলী বলেন, আড়ানীর ১৪ নম্বর রেল সেতুর ২৩৫ নম্বর থেকে কালাবিপাড়া ২৪১/০ নম্বর পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রেললাইন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছি। এ এলাকার রেলের সমস্যা ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। কাঠের গুজ ও বাঁশের বাতা ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে পি-ডব্লিউ আই-এর ভবেশ চন্দ্র রাজবংশী বলেন, পিন বরাদ্দ না থাকায় ট্রেন চলাচলের সময়ে স্লিপার যাতে না নড়ে সেজন্য কাঠের গুজ ও বাঁশের বাতা ব্যবহার করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই ১০০টি পিন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেগুলো সেতুসহ রেল লাইনের বিভিন্ন স্থানে লাগানো হচ্ছে। ৬০টি স্লিপারের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। সেগুলো পেলে তাৎক্ষণিক লাগানো হবে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন বলেন, এ অঞ্চলের রেল সেতুগুলো অনেক পুরাতন হলেও এখনও অনেকটা ভালো। এ পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। ট্রেন চলার সময় জাম্পিংয়ে ক্লিপগুলো যাতে সরে বা নড়ে না যায় সেজন্য বাঁশের বাতা ব্যবহার করা হয়েছে। অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে এটা করা হয়েছে।

আড়ানীর স্থায়ীরা আরো বলেন, ব্রিটিশ আমলের সেতুটি বেশ কয়েক বছর আগে একবার সংস্কার করা হয়েছিল। এরপর আর সংস্কার করতে দেখা যায়নি। ফলে ব্যবহৃত সরঞ্জামাদি দুর্বল হয়ে গেছে।

Next Post

সংবাদ প্রকাশের পর, অবশেষে রেল কতৃপক্ষের ব্যবস্থা গ্রহন।

সোম জুলাই ১ , ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ অবশেষে রেল কতৃপক্ষের উদ্দোগ্যে বাঘা আড়ানী সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আব্দুলপুর পযর্ন্ত রেল সেতুতে লোহার ক্লিপের পরিবর্তে কাঠের গুজ ও বাঁশের বাতা দিয়ে স্লিপার আটকিয়ে রাখা হয়েছে, তা অপসারন করেছে রেলওয়ে কতৃপক্ষ পশ্চিম। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও ভাবে সংবাদ প্রকাশ হয়, রাজশাহী জেলার চলাচল রেল ব্যবস্থাপনার ঝুঁকিপুর্ণ লাইন ও সেতু […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links