৩ ঘন্টার অভিযানে আটক নাই, আত্নংক ছড়িয়েছে পুলিশ।

আভা ডেস্ক: রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকাসহ আশপাশে ৩ ঘণ্টাব্যাপী ‘ব্লক রেইড’ চালিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় এ অভিযান শুরু হয়ে শেষ হয় রাত সাড়ে ১১টার দিকে। হঠাৎ বিপুলসংখ্যক পুলিশ দেখে স্থানীয়দের মাঝেআতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।

সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে ডিএমপির বিভিন্ন অপরাধ বিভাগ, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ও রিজার্ভ পুলিশের প্রায় দুই হাজার সদস্য কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় জড়ো হন। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, অতিরিক্ত-কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন, যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম, গুলশান বিভাগের উপকমিশনার মুশতাক আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আসেন। তারা পুলিশ সদস্যদের ব্রিফ করেন। পরে পুলিশ সদস্যরা ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে অভিযান শুরু করেন। অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলে আনা হয় পুলিশের মোবাইল কমান্ড সেন্টার (বিশেষ গাড়ি)। ওই গাড়িতে বসে ডিএমপি কমিশনারসহ পুলিশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা পুরো অভিযান মনিটরিং করেন।

পুলিশ জানায়, এ এলাকায় তিনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়সহ নানা ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ এলাকায় মেস ভাড়া করে থাকেন। তাদের মধ্যে ছদ্মবেশে কিছু দুর্বৃত্ত দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছে বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। বিভিন্ন ইস্যুতে তারা রাজপথে নেমে ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলা করে। সর্বশেষ সোমবার নিরাপদ সড়কের দাবিতে নামা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই সব দুর্বৃত্ত সড়কে নেমে ব্যাপক ভাংচুর ও পুলিশের ওপর হামলা করে। এ কারণে অভিযান চালানোর সিদ্ধান্ত হয় বলে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।

অভিযান শুরুর আগে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রোববার ও সোমবার বসুন্ধরা আবাসিকসহ আশপাশ এলাকায় সন্দেহভাজন অনেকেই আন্দোলনের নামে রাস্তায় নেমে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। হামলা চালায় পুলিশের ওপর।

তিনি আরও বলেন, গোয়েন্দা তথ্যে এ এলাকায় জামায়াত-শিবিরসহ বিভিন্ন উগ্রবাদী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তারা ভবিষ্যতে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

অভিযান শেষে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, এ অভিযান নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে চলমান কাজের অংশ। পুলিশের কাজ হল জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়া। এ লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি করি। যাতে বাইরে থেকে কোনো জঙ্গিগোষ্ঠী এসে নাশকতার উদ্দেশ্যে লুকিয়ে থাকতে না পারে।

তিনি বলেন, আজ আমরা বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, নর্দা-কালাচাঁদপুর এবং নতুন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়েছি। আপনারা দেখেছেন, হলি আর্টিজানের হামলাকারীরা এ এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অবস্থান করে ছিল। আমাদের কাছে বিভিন্ন সময় নানা ধরনের গোয়েন্দা তথ্য আসে। তাই প্রিভেনটিভ ব্যবস্থা হিসেবে এ ধরনের অভিযান চালাই। এ ধরনের অভিযানকে আমরা ‘ব্লক রেইড’ বলে থাকি। আজ যে অভিযান চালিয়েছি তা এখানেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। যেখানেই নাশকতাকারীদের অবস্থানের তথ্য পাওয়া যাবে সেখানেই আমাদের অভিযান চলবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিএমপি কমিশনার জানান, চলমান ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে এ অভিযানের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ছাত্র আন্দোলনে যারা নাশকতা করেছে, নাশকতার পরিকল্পনা করেছে, যারা উসকানি দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযানের ফলাফলের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার জানান, এ বিষয়ে গুলশানের উপকমিশনার পরে ব্রিফ করবেন।

জানতে চাইলে গুলশানের উপকমিশনার মুশতাক আহমেদ বলেন, ‘অভিযানে উল্লেখ করার মতো কিছু পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে ব্রিফ করারও কিছুই নেই।’

অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া একাধিক টিম লিডার বলেন, আজকের অভিযানের পর দুস্কৃতকারীরা যে কোনো অপতৎপরতা চালাতে ভয় পাবে। তাদের মনে এ বার্তা পৌঁছে যাবে যে, এ এলাকাও পুলিশের অভিযানের আওতার বাইরে নয়।

অভিযান চলার সময় আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নুরুজ্জামন বলেন, ‘কী জন্য পুলিশ রাতে অভিযান চালাচ্ছে তা আমরা এখনও বুঝতে পারছি না। তবে আমাদের কাছে মনে হচ্ছে, গত কয়েক দিনের গ্যাঞ্জামের কারণে এ অভিযান।’

তিনি আরও জানান, অভিযান শুরুর আগে পুলিশ যদি ঘটনাস্থলের পাশে ২-৩ ঘণ্টা ধরে প্রস্তুতি নেয়, তাহলে সুফল না মেলাটাই স্বাভাবিক। যতক্ষণে পুলিশ প্রস্তুতি নিয়েছে ততক্ষণে পুরো এলাকায় অভিযানের সংবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণে অপরাধীরা পালিয়ে যায়।

আভিযানিক টিমের সঙ্গে গিয়ে দেখা যায়, তাদের টার্গেট ছিল ওই এলাকায় থাকা ছাত্ররা। প্রত্যেকটি টিমের সঙ্গে স্থানীয় থানা পুলিশের একজন করে সদস্য ছিলেন। তারা আগে থেকেই গোটা এলাকা রেকি করেন। যেসব বাসা-বাড়িতে ছাত্ররা থাকেন সেইসব বাড়িগুলো চিহ্নিত করা ছিল। যুগান্তর

Next Post

র‍্যাবের সাবেক কর্মকর্তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ।

বৃহস্পতি আগস্ট ৯ , ২০১৮
আভা ডেস্ক: সাবেক র‌্যাব কর্মকর্তা হাসিনুর রহমানকে ডিবি পরিচয়ে তার পল্লবীর বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে এঅভিযোগেবুধবার রাত ১টায় পল্লবী থানায় জিডি করা হয়েছে। পল্লবী থানার ডিউটি অফিসার এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, নিখোঁজ র‌্যাব সদস্যের পরিবারের লোকজন থানায় এসেছেন। তারা এ ঘটনায় জিডি করেন। […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links