২৫ কোটি টাকা সাশ্রয়ে প্রধানমন্ত্রীর উচ্ছ্বাস

আভা ডেস্কঃ সময়ের আগেই রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্স নির্মাণ করা ও প্রকল্পে ২৫ কোটি টাকা অর্থ সাশ্রয় করায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্তদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নবনির্মিত রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।

অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন সরকারপ্রধান। এ সময় তিনি বলেন, ‘অন্য প্রকল্পগুলোতেও অর্থ সাশ্রয় হলে ধন্যবাদ পাওয়া যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সবচেয়ে বড় কথা সময়ের আগেই এটার নির্মাণ শেষ হয়েছে এবং টাকাও সাশ্রয় হয়েছে। সাধারণত দেখা যায়, একটি প্রকল্প নিলে টাকা সাশ্রয় হয় না, বরং আরও চায়। কিন্তু এখানে প্রায় ২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে।

‘আমরা তো প্রকল্পে কখনো বাঁচাতে দেখি না, ২৫ কোটি টাকা সেভ করা হয়েছে এ জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করি ভবিষ্যতেও যারা অন্যান্য কমপ্লেক্সগুলো করবে তারাও যেন এটা মাথায় রাখে, একটু কমালে পরে আমাদের একটা ধন্যবাদ পাবে তারা।’

বিভাগীয় কমপ্লেক্সের কার্যকারিতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রংপুর বিভাগ করে দেয়ার পর এটাকে মেট্রোপলিটন করা হয়েছে। সব ধরনের ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। আমরা চেয়েছি এমন একটা জায়গায় এই কমপ্লেক্স ভবনটা করে দেয়া যেন সব জেলাগুলোর একটি সেন্টার পয়েন্ট হয়।

‘সেখানে গিয়ে যেনো সহজে কাজ করতে পারে বা সেবাটা নিতে পারে এটা চিন্তা করেই রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্স আমরা নির্মাণ করেছি। এটা খুব চমৎকারভাবে তৈরি করা হয়েছে। যারা এটা তৈরি করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই এ কারণে যে, ঠিক আধুনিক চিন্তাভাবনা নিয়েই ১০ তলা ভবনটা নির্মাণ করা হয়েছে।’

নৌকায় ভোট দেয়াতেই রংপুরের উন্নয়ন

নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার কারণেই রংপুর অঞ্চল উন্নত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা আর কখনো কেউ থামতে পারবে না। নৌকা মার্কায় ভোট দিয়েই কিন্তু রংপুরবাসী সব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন, এটা ভুললে কিন্তু চলবে না।

‘রংপুরে এই ১৩ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর যত উন্নত হয়েছে। এর আগেও তো রংপুরের লোকই ক্ষমতায় ছিল, কিন্তু কোনো উন্নয়ন হয়নি। তারা নিজেদের ভাগ্য করেছে কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলায়নি। এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন আমাদের লক্ষ্য ছিল সেটা আমরা করতে পেরেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অঞ্চলে শিক্ষার হার কম ছিল, কিন্তু এখানে মেধাবী শিক্ষার্থী ছিল। সে দিকে হিসেব করে আমরা এখন পদক্ষেপ নিয়েছি। কুড়িগ্রামে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, লালমনিরহাটে এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি করে দিচ্ছি। আমরা রংপুরে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান পায়রাবন্দ সেখানে তার নামে একটি কমপ্লেক্স ও ট্রেনিং সেন্টার করা হয়েছে এবং রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় বেগম রোকেয়ার নামেই আমরা করে দিয়েছি কারণ তিনিই তো প্রথম শিক্ষার উদ্যোগ নিয়েছিলেন বলেই আমরা কিছু লেখাপড়ার সুযোগ পেয়েছি।

‘ঠিক একইভাবে এই অঞ্চলের প্রত্যেক জেলা মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। প্রতিটি জেলা হাসপাতালকে আমরা আড়াইশ বেড উন্নীত করেছি। প্রত্যেকটা এলাকায় আমরা উন্নতি করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘নীলফামারিতে প্রথম ইপিজেড আমি করে দিই। সেখানে আমাদের সৈয়দপুর বিমানবন্দর উন্নত করে দেই, এখন এটা আঞ্চলিক বিমানবন্দর হিসেবে উন্নীত করে দিচ্ছি। যোগাযোগ ব্যবস্থায় প্রতিটি জায়গায় ব্রিজ তৈরি করে দিয়েছি। অনেকগুলো কর্মসূচি আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এতে করে হেডকোয়ার্টারের সাথে প্রতিটি উপজেলার যোগাযোগ হবে। প্রতিটি ইউনিয়নের সাথে উপজেলার যোগাযোগ হবে।

‘চিকিৎসা সেবাও আমরা মানুষের দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিচ্ছি। আমরা ইতিমধ্যে আপনারা জানেন রংপুর মেডিক্যাল কলেজের সিট বাড়ানো হয়েছে। ওপেন হার্ট সার্জারির ব্যবস্থা করা হয়েছে, বার্ন ইউনিট করা হয়েছে। কিডনি এবং হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য আমরা ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছি।’

দেশে নির্মিতব্য একশ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আঞ্চলিক পণ্য উৎপাদনের তাগিদ দেন সরকার প্রধান। তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলে তরি-তরকারি ভালো উৎপাদন হয়, সেগুলো প্রক্রিয়াজাত যেন করা যায়। প্রক্রিয়াজাত করে সেগুলো বিদেশে রপ্তানি যাতে করতে পারি সেদিকে আমরা লক্ষ্য দিচ্ছি।

‘সারা বাংলাদেশে যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে শিল্প কলকারখানা গড়ে উঠবে, যত্রতত্র না। আমার কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে কারণ এ অঞ্চলের জমি খুব উর্বর। কৃষি জমি আমরা রক্ষা করব। এই এক শ অঞ্চলে যে শিল্প গড়ে উঠবে সেটি গড়ে ওঠার সময় যারা বিনিয়োগ করবেন তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, ওই অঞ্চল ভিত্তিক যে সব পণ্য উৎপাদন হয় সেগুলো প্রক্রিয়াজাত করা এবং সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া।’

তিনি বলেন, ‘আর খাদ্য উৎপাদনে আমরা এমনভাবে সাইলো নির্মাণ করে দিচ্ছি যেন খাদ্য আমরা দুই তিন বছর যাতে রাখতে পারি, নষ্ট না হয়। একবার, দুবার যদি ফসল নষ্টও হয় আমাদের যাতে কারো কাছে হাত পাততে না হয়। পরমুখাপেক্ষি না হয়ে আমরা যাতে নিজেদের খাদ্য দিয়েই আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা এ পদক্ষেপটা গ্রহণ করেছি।

‘খামার এখন সবচেয়ে লাভজনক। আমরা বিদেশে রপ্তানিরও ব্যবস্থা করছি। রপ্তানি করতে গেলে যে টেস্টিং ল্যাবরেটরি সেটিও আমরা প্রত্যেক বিভাগে করে দেব, যাতে সেই পণ্যগুলো সরাসরি যেতে পারে। রেল যোগাযোগে উন্নত করছি, সব অঞ্চলেই দ্রুত রেল করা হয়েছে। বিভাগীয় আঞ্চলিক সড়কগুলো আমরা চার লেনে করে দিচ্ছি, আর হাইওয়ে ছয় লেন করে দিচ্ছি।’

Next Post

গৃহহীনদের খুঁজে বের করুন: প্রধানমন্ত্রী

রবি জানু. ১৬ , ২০২২
আভা ডেস্কঃ এলাকায় কোনো গৃহহীন মানুষ আছে কি না তা খুঁজে বের করতে প্রশাসন ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নবনির্মিত রংপুর বিভাগীয় কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন সরকারপ্রধান। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশে একটি মানুষও […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links