আভা ডেস্কঃ সুপার সাইক্লোন আম্পানে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় কাঁচা ঘরবাড়ি, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ, ফসলি জমি ও মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে হাতিয়ার ৪ টি ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি ঢুকে ২ শতাধিক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। উপজেলার নিঝুমদ্বীপ, চরঈশ্বর, নলচিরা ও শুখচর ইউনিয়নে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানি ঢুকে অন্তত ৪০টি মাছের ঘের তলিয়ে গেছে, ভেসে গেছে মাছ। ৫ একর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে এ উপজেলায় কোন প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। তাৎক্ষণিকভাবে প্রায় ৩০ হাজার পরিবার নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যাওয়ায় প্রাণহানি এড়ানো গেছে।
চরঈশ্বর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রাশেদ উদ্দীন জানান, বেড়ির বাইরে ও ভেতরে ৫ শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
নলচিরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বাবলু জানান, তার ইউনিয়নের ৩ কিমি. বেড়িবাঁধ ভাঙা রয়েছে। বুধবার দুপুরে অস্বাভাবিক জোয়ারের তোড়ে তিনটি গ্রাম তলিয়ে গেছে।
নিঝুম দ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান মেহরাজ উদ্দীন জানান, তার ইউনিয়নে ৮-১০ ফুট উঁচু হয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে সাতটি গ্রাম তলিয়ে গেছে। অনেক কাঁচা-পাকা রাস্তা ভেঙে গেছে।
বুধবার রাতে জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম জানান, সুপার সাইক্লোন আম্পানের প্রভাবে মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে। যার কারণে সব প্রকার নৌ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
৯ নম্বর সতর্কসংকেত বহাল থাকায় উপজেলার ২৪০টি সাইক্লোন শেল্টারে লোকজন আসতে শুরু করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলা প্রস্তুতি কমিটির ১৮৮টি ইউনিট প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দুপুরের পর থেকে উপজেলার নদীর তীরবর্তী সুখচর, নলচিরা, চরঈশ্বর ও নিঝুম দ্বীপের নদীর তীরে বেড়িবাঁধ ভেঙে ২০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বেলা ১টার পর থেকে এসব এলাকা জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। গত বছর বর্ষার মৌসুমে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় খুব সহজেই জোয়ারের পানিতে এসব এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। প্লাবিত গ্রামগুলোর ২০ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া হয়েছে।
হাতিয়া থানার ওসি মো. আবুল খায়ের বলেন, আম্পানের প্রভাবে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় জোয়ারের পানি ঢুকেছে। উপজেলার কোথাও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি।