‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭’ শীর্ষক জরিপের ফল প্রকাশ করেছে।

আভা ডেস্ক : ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বৃহস্পতিবার সংস্থাটির কার্যালয়ে ‘সেবা খাতে দুর্নীতি : জাতীয় খানা জরিপ ২০১৭’ শীর্ষক জরিপের ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৭ সালে সেবা খাতগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থায়। এ খাতে সেবা নিতে গিয়ে ৭২.৫ শতাংশ খানা অর্থাৎ পরিবার বা ছোট গোষ্ঠী কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতির শিকার হয়েছে।

টিআইবির জরিপে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে নাম উঠে এসেছে যথাক্রমে পাসপোর্ট অধিদফতর ও বিআরটিএ অর্থাৎ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের। উল্লেখ করা যেতে পারে, টিআইবির আলোচ্য জরিপে ১৫ হাজার ৫৮১টি খানা অংশ নিয়েছিল। জরিপের ফলাফল প্রকাশের সময় সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সেবা খাতের কিছু ক্ষেত্রে দুর্নীতির ইতিবাচক পরিবর্তন হলেও সার্বিক তথ্য উদ্বেগজনক।

সেবা খাতের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবি যে জরিপ প্রকাশ করেছে, তা বিশ্বাসযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে ব্যর্থতার পাশাপাশি এমন অভিযোগও রয়েছে যে, তাদের একটি অংশের সঙ্গে যোগসাজশ করে অপরাধীরা অপরাধ সংঘটন করে থাকে। নিরপরাধ, নিরীহদের ফাঁদে ফেলে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগও পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে। এমনকি এমন অভিযোগও রয়েছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার পর ভুক্তভোগীরা মামলা করতে গেলে অপরাধ সংঘটনকারীর পক্ষ নিয়ে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা রেকর্ড করতে চায় না।

এককথায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশের বিরুদ্ধে জনগণকে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া যায়। বলাবাহুল্য, এসব হয়রানির পেছনে অর্থ আদায়ের স্বার্থই মুখ্য। পাসপোর্ট অধিদফতর ও বিআরটিএ’র বিরুদ্ধেও অভিযোগের অন্ত নেই। পাসপোর্ট অফিসের দালাল চক্রের সঙ্গে কর্তৃপক্ষের আঁতাত সর্বজনবিদিত আর বিআরটিএ’র দুর্নীতির সবচেয়ে বড় প্রমাণ পাওয়া যায় ফিটনেসবিহীন গাড়ি ও লাইসেন্সবিহীন চালকের সংখ্যাধিক্যে।

বস্তুত দুর্নীতি এখন বলতে গেলে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে। উপরের তিন খাত ছাড়াও এমন কোনো সেবা খাত নেই, যেখানে কোনো না কোনোভাবে দুর্নীতি হচ্ছে না। টিআইবি অবশ্য দুর্নীতি নির্মূলে অথবা এর মাত্রা কমিয়ে আনার লক্ষ্যে কিছু সুপারিশও করেছে। সেগুলোর একটি হল বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদ্যমান আইনের আওতায় নিয়ে আসা।

দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভাগীয় পদক্ষেপের পাশাপাশি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে সুপারিশে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান অবস্থায় দুদকের দায়িত্বশীলতা ও দক্ষতাই সবচেয়ে জরুরি দুর্নীতি দমনে। টিআইবির অন্যান্য সুপারিশও সুচিন্তিত ও সময়োপযোগী বলতে হবে। আমরা আশা করব, টিআইবি কর্তৃক পরিচালিত জরিপের ফলাফলকে সরকার হেলাফেলার চোখে দেখবে না, বরং সংস্থাটির ১২ দফা সুপারিশমালা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হবে।যুগান্তর

Next Post

প্রস্তাবিত সরকারি চাকরি আইনে দুর্নীতিবাজদের ধরা পড়ার চেয়ে রক্ষার দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে।

শনি সেপ্টে. ১ , ২০১৮
Ava Desk : সৎ ও অসৎ সরকারি চাকরিজীবীদের নিয়ে ‘কারাগারের রোজনামচা’য় স্মৃতিচারণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাংলাদেশের স্থপতি জেলজীবনের রোজনামচায় লিখেছেন, ‘এক থানায় একজন কর্মচারী খুব সৎ ছিলেন। ঘুষ তিনি খেতেন না। কেহ ঘুষ নিক তিনি তাহাও চাইতেন না, সকলে তাকে বোকা বলতে শুরু করে- ছোট থেকে বড় পর্যন্ত। […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links