সালহে চোটের জন্য দোষ দিচ্ছেন না রামোস কে।

মিসরে মামলা হতে পারে তার নামে৷ লিভারপুল ও মিসরের সমর্থদের চোখে খলনায়ক হতে পারেন সার্জিও রামোস৷ রিয়ালের সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের শাস্তি চেয়ে উয়েফা ও ফিফায় তিন লাখের বেশি সাক্ষর-সংবলিত পিটিশন জমা পড়তে পারে৷ তবে মোহাম্মদ সালাহ কোনোভাবেই কাঠগড়ায় তুলতে রাজি নন স্প্যানিশ তারকাকে৷ বরং খেলোয়াড়সুলভ মনোভাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে নিজের চোট পাওয়াকে নিছক দূর্ঘটনা বলেই মনে করছেন প্রিমিয়র লিগ জায়ান্টদের মিসরীয় স্ট্রাইকার৷

কিয়েভে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের প্রথমার্ধেই রিয়াল অধিনায়ক রামোসের সঙ্গে ধাক্কায় কাঁধে চোট পান সালাহ৷ যার ফলে মিসরের হয়ে তার বিশ্বকাপ খেলা বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়৷ সালাহ নিজে আশাবাদী বিশ্বকাপ খেলার বিষয়ে৷ শেষ পর্যন্ত রাশিয়ায় মাঠে নামা সম্ভব হবে কি না, তা এখনও নিশ্চিত না হলেও চোটের জন্য সালাহ দোষ দিচ্ছেন না রামোসকে৷

মিসরীয় তারকা নিজের চোট নিয়ে এখনো প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও লিভারপুলের ফিজিও রুবেন পন্স জানান, রামোসকে নিয়ে তার কাছে একবারের জন্যও অভিযোগ করেননি সালাহ৷ রুবেনের নজরদারিতেই চোট সারিয়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছেন সালাহ৷

রুবেন জানান, ‘সালাহ একবারের জন্যও রামোসকে নিয়ে কোনে কথা বলেনি৷ আমার মনে হয় না রামোসের উপর সালাহর কোনো রাগ রয়েছে৷ এটাকে নিছক দুর্ঘটনা হিসাবেই গ্রহণ করেছে ও৷’

পন্স আরো বলেন, ‘সালাহর মাঠে পড়ে যাওয়া দেখেই বুঝেছিলাম গুরুতর চোট পেয়েছে ও৷ আমরা ভয় পেয়েছিলাম তখনই৷ ও কষ্ট পেলেও কোনো দোষারোপের রাস্তায় হাঁটেনি৷ আমি শুধু ওকে শান্ত থাকার কথা বলেছিলাম৷ যেটা হয়ে গেছে, তা নিয়ে না ভেবে সমস্যা সমাধানের উপায় খোঁজার দিকে নজর দিতে বলেছিলাম৷ এমনিতে ওর সেরে উঠতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগার কথা৷ আমরা চেষ্টা করছি তার আগেই যত দ্রুত সম্ভব ওকে ম্যাচ ফিট করে তোলার৷’

চিকিৎসার জন্য ভ্যালেন্সিয়া উড়ে যাওয়া সালাহকে দেখে অবশ্য মিসরীয় সমর্থকরা বাড়তি অক্সিজেন পেতে পারেন৷ কেননা বিমান বন্দরে স্লিং ছাড়াই দেখা গিয়েছে তাকে৷ শরীরি ভাষায় কোনো জড়তা ছিল না৷ সুতরাং ১৫ জুন উরুগুয়ের বিরুদ্ধে মিসরের প্রথম ম্যাচে সালাহর খেলার ক্ষীণ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে৷

মিসর কি নক আউটে পৌঁছাতে পারবে?

রাশিয়া বিশ্বকাপ শুরু হতে আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। এরই মধ্যে ফুটবল ভক্তদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে আসর শুরুর গ্রুপ পর্ব। কোন দল কোন গ্রুপে পড়েছে এবং কোন গ্রুপ থেকে কোন দলটি নক আউট পর্বে উঠে আসবে ইত্যাদি নিয়ে আগ্রহের শেষ নেই। রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের দল এবং ম্যাচ পর্যালোচনা।

গ্রুপ এ : রাশিয়া, সৌদি আরব, মিসর ও উরুগুয়ে

রাশিয়া : ঐতিহাসিকভাবে বিশ্বকাপে স্বাগতিক দল ভাল খেললেও, এবার পারফর্মেন্সের দিক থেকে রাশিয়া দলের আত্মবিশ্বাস খুবই সীমিত। ২০০৮ সালের ইউরোর সেমি-ফাইনালে খেলা দলটিতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। বর্তমান দলটি ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে নেমে গেছে ৬৬তম অবস্থানে। যেটি তাদের জন্য এ পর্যন্ত সর্বনিন্ম অবস্থান। ১০ বছর আগের ইউরো আসরের পর এ পর্যন্ত আর কোন আন্তর্জাতিক আসরে তারা গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করতে পারেনি।

ইউরো ২০১৬ এর পর কোচ স্তানিস্লাভ চেরচেসভের অধীনে থাকা দলটির ফলাফলকে কোনভাবেই ইতিবাচক বলা যাবেনা। তার অধীনে দলটি ৫ ম্যাচে জয় ও ৫টিতে ড্রয়ের বিপরীতে হেরেছে আট ম্যাচে। মাঠের বাইরেও দলটিতে অনেক সমস্যা বিরাজ করছে। খেলোয়াড় ও কোচের মধ্যে বিভেদ রয়েছে বলেও প্রচার আছে। আর দুই বছর আগে ফ্রান্স ইউরোতে রুশ দাঙ্গাবাজদের কার্যক্রম সম্পর্কে সবাই নিশ্চিয় অবগত।

এবারের আসরের ড্রয়ে রাশিয়া যে গ্রুপে পড়েছে সেটিকে খুব বেশি কঠিন বলার সুযোগ নেই। অতীতে স্বাগতিক দলকে আরো বেশি শক্তিশালী গ্রুপে থেকে লড়াই শুরু করতে হয়েছে। এই গ্রুপ থেকে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা তাদের জন্য খুব একটা কঠিন হবে না। গ্রুপ পর্বে দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে রুশদের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠার সম্ভাবনা বেশি।

সৌদি আরব : বাছাইপর্বে বেশ কঠিন গ্রুপের বাঁধা অতিক্রম করে এসেছে সৌদি আরব। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন জাপানের চেয়ে এক পয়েন্ট কম নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সাথে সমান পয়েন্ট পাওয়া দলটি গোল ব্যবধানে এগিয়ে থেকে গ্রুপের দ্বিতীয় অবস্থান নিশ্চিত করে।

১৯৯৪ বিশ্বকাপে বিশ্বব্যাপী বেশি পরিচিতি পায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। ওই আসরে দ্বিতীয় পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেয় সৌদি আরব। গ্রুপ পর্বে হল্যান্ড ও বেলজিয়ামের সাথে ড্র করে তারা। সাঈদ আল ওয়াইরিয়ানের দেয়া গোলটি আসরের সেরা গোলের তালিকায় জায়গা করে নেয়।

এরপর ১৯৯৮, ২০০২ ও ২০০৬ সালে আরো তিনটি বিশ্বকাপ খেলেছে সৌদি আরব। তবে পার হতে পারেনি গ্রুপ পর্ব। দক্ষিণ আফ্রিকা ও ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত পরবর্তী দুই বিশ্বকাপে অবশ্য অংশগ্রহণই করতে পারেনি তারা। এবারের আসরেও তারা গ্রুপ পর্ব অতিক্রম করতে না পারার সম্ভাবনা বেশি। বড় জোর একটি ম্যাচে ড্র করতে পারে। সে হিসেবে গ্রুপের তলানীতেই স্থান হতে পারে সৌদি আরবের।

মিসর : বিশ্বকাপে ফেরার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে মিসরকে। রেকর্ড সংখ্যক সাতবার আফ্রিকা অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন এই দলকে ১৯৯০ সালের পর আর দেখা যায়নি। বিশ্বকাপের বাকি আসর তাদের দেখতে হয়েছে সাইডলাইনে থেকে। ২০১২ ও ২০১৫ সালের আফ্রিকা নেশন্স কাপেও ব্যর্থ হয়েছে ফারাওরা। অবশ্য গত আসরের ফাইনালে খেলেছে মিসর। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ফুটবলের সর্ববৃহৎ আসরে পৌঁছে গেছে নীল নদের দেশটি। ভবিষ্যতের ব্যালন ডিঅঁর খেতাব জয়ের সম্ভাবনায় থাকা লিভারপুলের স্ট্রাইকার মোহাম্মদ সালাহ দলকে বিশ্বমঞ্চে পৌঁছে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তবে সদ্য শেষ হওয়া উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে ফাইনালে ঘাড়ের ইনজুরিতে পড়েছেন দলের আশা ভরসার প্রতীক সালাহ। গোটা দেশ তথা বিশ্ব চেয়ে আছে তার সুস্থতা ফিরে পাওয়ার দিকে।

তবে এই দলটি তাদের গ্রুপ প্রতিপক্ষ উরুগুয়ের বিপক্ষে খুব একটা সুবিধা করতে পারবে বলে মনে হয় না। স্বাগতিক রাশিয়ার সাথে তাদের হতে পারে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ওই লড়াইয়েও স্বাগতিকদের এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তাই নক আউটে তাদের পৌঁছানো কঠিন হবে। তবে সালাহ মাঠে নামতে পারলে চিত্র ভিন্নও হতে।

উরুগুয়ে : দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বে শুধুমাত্র ব্রাজিল ছিল পারফর্মেন্সের দিক থেকে উরুগুয়ের চেয়ে এগিয়ে। দলে থাকা বেশ কিছু বিশ্বমানের তারকা নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ অবস্থানটি অর্জন করতে চায় উরুগুয়ে।

দিয়াগো গুডিনের বয়স ৩১ এবং এডিনসন কাভানি ও লুইস সুয়ারেজের বয়স ৩০ বছর হলেও তারা এখনো বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের আসনে রয়েছেন। দুটি বিশ্বকাপ শিরোপা জয়ের পর আর এর ধারে কাছে যেতে পারেনি উরুগুয়ে। সর্বশেষ ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সেমি-ফাইনাল খেলেছিল তারা। এর পুনরাবৃত্তিও আর ঘটাতে পারেনি উরুগুয়ে।

দলটির আরো কিছু তরুণ মেধাবী খেলোয়াড় বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে আসছে। এদের মধ্যে আছেন টিনএজ ফেড্রিকো ভালভার্দে এবং ২১ বছর বয়সি নাহিতান ন্যান্ডেজ। এই নিয়ে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপগামী উরুগুয়ের কোচের দায়িত্ব পালন করছেন অস্কার তাবারেজ। সব মিলিয়ে চারটি বিশ্বকাপ দলের কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

গ্রুপ পর্বে প্রথম স্থান অর্জনের জন্য যতটুকু দরকার এর বেশি যোগ্যতা রয়েছে উরুগুয়ের। গ্রুপভুক্ত সৌদি আরব ও মিসরের তুলনায় তারা অনেক বেশি এগিয়ে। স্বাগতিক দর্শকদের স্রোতের বিপরীতে গিয়ে তারা বড়জোর ড্র করতে পারে রাশিয়ার সাথে।

Next Post

শান্তির বাঘমারায় অশান্তি সৃষ্টি করবেন না-এমপি এনামুল

বুধ মে ৩০ , ২০১৮
বাগমারা প্রতিনিধি: রাজশাহীর-৪(বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেছেন, শান্তির বাগমারায় অস্ত্রবাজি করে অশান্ত করার চেষ্টা করবেন না। অস্ত্রবাজি করে জনগণের মন জয় করা যায় না। এক সময়ের রক্তাক্ত জনপদে এখন শান্তির সুবাতাস বইয়ে। তিনি আরো বলেন, জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। জনগণকে বাদ দিয়ে নিজের হাতে কেউ ক্ষমতা রাখতে […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links