আভা ডেস্কঃ শুরুটা ছিল ‘ম্যাড়মেড়ে’। মঞ্চের সামনে ছিল না প্রত্যাশিত দর্শকও। এবার বিপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে বলে মাতামাতি কম হয়নি। কিন্তু শুরুটা তেমন হয়নি।
রোববার সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের প্রেসিডেন্ট বক্সে প্রবেশ করে একটু পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-২০১৯-এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’
এরপরই আতশবাজির আলোয় রঙিন হয়ে ওঠে মিরপুরের রাতের আকাশ। আতশবাজির ঝলকেই যেন প্রাণ ফিরে পায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। কনসার্টের আসল আকর্ষণ লুকিয়ে ছিল শেষভাগে। বলিউডের দুই তারকা সালমান খান ও ক্যাটরিনা কাইফের পারফর্মে পূর্ণতা পায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ বিপিএলের বর্ণিল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
মাঝে ভারতের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী সনু নিগম নিজের গানের পাশাপাশি দুটি বাংলা গান গেয়ে অনুষ্ঠানে যোগ করেন ভিন্ন মাত্রা।
বাংলাদেশের মানুষের প্রতি সম্মান জানিয়ে সনু গাইলেন, ‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা’ ও ‘শোনো একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের …’ গান দুটি। টুর্নামেন্টের মাঠের খেলা শুরু হবে বুধবার।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী সামনে রেখে এবার বিশেষ বিপিএল আয়োজন করছে বিসিবি। জন্মশতবার্ষিকীর সরকারি আয়োজন শুরু হল বিপিএলের উদ্বোধন দিয়েই।
এই উপলক্ষে আগামী মার্চে ঢাকায় বিশ্ব একাদশ ও এশিয়া একাদশের দুটি টি ২০ ম্যাচও আয়োজন করবে বিসিবি। এছাড়া ঘরোয়া পর্যায়ে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট হবে।
উদ্বোধনী কনসার্টের জন্য বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল মাঠের পূর্বপ্রান্তে। পাশেই শিল্পীদের জন্য কয়েকটি সাজসজ্জার রুম। মঞ্চের সামনে কয়েক ধাপে দর্শকের বসার ব্যবস্থা। সাজানো হয়েছিল মাঠও। গ্যালারির নানা জায়গায় বসানো ছিল অস্থায়ী বড় পর্দাও।
কিন্তু দর্শক চাহিদার প্রতিফলন ছিল না অনুষ্ঠানে।
এমনিতেই বেশি টিকিট ছাড়তে না পাড়ায় হতাশ ছিলেন বিসিবি সভাপতি। কিন্তু সেই টিকিটগুলোও যখন বিক্রি হয় না, তখন তো হতাশা বাড়ারই কথা। সব গ্যালারিই ফাঁকা পড়ে রইল। সালমান খান-ক্যাটরিনা কাইফকে দেখতেও প্রত্যাশিত দর্শক পাওয়া গেল না।
তবুও বিপিএলে এটাই সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
‘ডাক দিয়েছেন দয়াল আমারে…’ ডিরকস্টার শুভর গান দিয়ে কনসার্ট শুরু। অনুষ্ঠান ৫টা ২৫ মিনিটে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সেটা শুরু হতে ৬টা বেজে যায়। শুভর পরই মঞ্চে ফোকগান নিয়ে হাজির হন রেশমি মির্জা। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান নিয়ে উন্মাদনার কমতি ছিল না।
কিন্তু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খুব বেশি গোছানো অনুষ্ঠান মনে হয়নি কখনই। রেশমির পরই মঞ্চে এসে জেমস শুরু করেন ‘সুলতানা-বিবিয়ানা’ দিয়ে। গান শেষ হতেই প্রেসিডেন্ট বক্সে উপস্থিত হন প্রধানমন্ত্রী। পরপরই উদ্বোধনের ঘোষণা দেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই মিরপুরের দর্শকরা যৌবন গর্জনে সারা দেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বিপিএলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যারা উপস্থিত আছেন, সবাইকে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আগামী দিনে এই অনুষ্ঠান সার্থক হোক, সফল হোক এবং আজকের (রোববার) অনুষ্ঠান আপনারা সবাই ভালোভাবে উপভোগ করুন, সেই কামনা করে আমি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার টি ২০ লিগ-২০১৯ এর শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি।’
এরপর মঞ্চে আসেন ভারতের সনু নিগম। পরে মঞ্চ মাতালেন ভারতের আরেক জনপ্রিয় শিল্পী কৈলাস খের। কাল সকালেই ঢাকায় পৌঁছান অনুষ্ঠানের সবচেয়ে বড় দুই আকর্ষণ সালমান ও ক্যাটরিনা। তাদের পারফর্ম দিয়েই শেষ হল বিপিএলের জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। মঞ্চে ওঠার আগে সালমান ও ক্যাটরিনা প্রেসবক্সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
অনুষ্ঠানের সফলতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও বিসিবি এটাকেই এখন পর্যন্ত বিপিএলের সবচেয়ে বড় অনুষ্ঠান মনে করছে।
যুগান্তর