সরকার আলোচনার মাধ্যমে সকল দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষায় বিশ্বাসী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে. আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘জ্ঞানকে সম্মান করতে হবে। শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু করা যাতে তারা জ্ঞান অর্জনে আগ্রহী হয়। আমরা ভাগ্যবান যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো একজন নেতা পেয়েছিলাম। তিনি একটি নির্জীব জাতিকে অনুপ্রাণিত করে ন্যায্য অধিকার আদায়ে সংগ্রাম করে দেশকে স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও পররাষ্ট্রনীতির কারণে মাত্র সাড়ে তিন বছরে ১২৬ দেশের স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশ। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির মূল কথা হলো ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়।’

রবিবার দুপুরে তিনি রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ তাদের প্রতিবেশীর সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত। কিন্তু আমাদের চিহ্নিত কোনো শত্রু নেই। বর্তমান সরকার আলোচনার মাধ্যমে সকল দ্বি-পাক্ষিক বিষয় সমাধানে বিশ্বাসী। প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে স্থল, সমুদ্রসীমা ও গঙ্গার পানি বণ্টন বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হয়েছে।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় উপাধ্যক্ষ প্রফেসর আবদুল খালেক, কলেজ শিক্ষক সমিতির পক্ষে প্রফেসর জোবায়দা আয়েশা সিদ্দিকা বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সমাধিতে এবং রাজশাহী কলেজ চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, নীরবতা পালন ও বিশেষ মোনাজাত করেন। এরপর মন্ত্রী তার মরহুম পিতার স্মৃতিবিজড়িত রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ‘বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিদর্শন করেন। তিনি জাদুঘরের গ্যালারিসমূহ ঘুরে দেখেন ও সেখানে রাখা দর্শনার্থী বইয়ে মন্তব্য করেন এবং মন্ত্রী জাদুঘর গ্রন্থাগার পরিদর্শন করেন। তিনি গ্রন্থাগারের জন্য তার লেখা ও সম্পাদিত কয়েকটি বই উপহার দেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর এম আব্দুস সোবহান, উপ-উপাচার্য প্রফেসর আনন্দ কুমার সাহা, উপ-উপাচার্য প্রফেসর চৌধুরী মো. জাকারিয়া, কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম মোস্তাফিজুর রহমান আল-আরিফ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এম এ বারী, প্রক্টর প্রফেসর মো. লুৎফর রহমান, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক ড. মো. আজিজুর রহমান, জাদুঘরের পরিচালক এ আর এম আব্দুল মজিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিদর্শন শেষে বাইরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ও কিছু এনজিওদের চাপে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর বিলম্বিত হচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তে প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই যেতে ইচ্ছুক। দিনক্ষণ এখনো ঠিক না হলেও শুধুমাত্র এনজিও ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির চাপে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে যে জায়গায় রয়েছে, সেই জায়গাটির পরিমাণ ৬ হাজার ৮০০ একর। পাহাড় ও টিলায় ঘরে হলেও জায়গাটি অনেক কনজাসটেড। কিন্তু সমস্যা হলো অতিবৃষ্টি হলে যেকোনো সময় ধসে রোহিঙ্গারা মারা যেতে পারে। তখন সবাই আমাদের দোষ দিবেন। আর বর্তমানে যেখানে আছে বেশিরভাগ মাদক, মানবপাচারসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত।

মন্ত্রী বলেন, ভাসানচর অনেক সুন্দর জায়গা। আমার তো ইচ্ছা সেখানে রিসোর্ট করা। ভাসানচরে গেলে রোহিঙ্গারা ইকোনমিক অ্যাকটিভিজ করতে পারবে, কৃষি কাজ করতে পারবে, গরু-ছাগল পালন করতেও পারবে। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও আমরা রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করার চেষ্টা করছি।

আমেরিকার নতুন সরকারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরো উন্নত হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমেরিকা আমাদের কাছ থেকে যে জিনিসগুলো নেয় তাতে এক্সাট্রা আরো ১৫. ৬ শতাংশ ট্যারিফ দিতে হয়। গরিব দেশ হওয়া সত্বেও আমরা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্যারিফ দিই। আর আমেরিকা ফ্রান্স থেকে যে জিনিস কিনে তার ট্যারিফ দিতে হয় মাত্র ০.৫ শতাংশ। অর্থাৎ আমাদের ফ্রান্সের চেয়ে ৩৩ গুণ বেশি শুল্ক দিতে হয়।

মন্ত্রী বলেন, আমেরিকায় যে নতুন সরকার আসছেন তারা অত্যন্ত সলিড ও ম্যাচিউরড রাজনীতিবিদ। তাদের সাথে আমরা আগেও কাজ করেছি। তারা হিউম্যান রাইটস ইস্যুতে খুব সোচ্চার। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট হয়েছে। সেক্ষেত্রে মনে করি, আমরা আমেরিকার কাছে শক্তিশালী অবস্থান পাবো।

Next Post

রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপির  প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত

রবি নভে. ১৫ , ২০২০
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ স্বাধীনতার ঘোষক ও গনতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধের সময়ে পশ্চিম পাকিস্তান থেকে এসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। দেশের মানুষ যখন পাকা হানাদার বাহিনীর আক্রমনে দিশেহারা, ঠিক তখনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষনা দেন। শুধু ঘোষনাই নয় সম্মুখভাবে তিনি যুদ্ধ […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links