আভা ডেস্কঃ গত বছর বাজেরে পাটের দাম ভালো থাকায় ও বর্তমানে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়াতে সরকারিভাবে উদ্যোগ নেয়ায় পাট চাষে আবারো সুদিন ফিরে এসেছে। আর এরি ধারাবাহিকতায় নওগাঁর বদলগাছীতে এবছর রেকর্ড পরিমাণ জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর ও পাট উৎপাদন অফিসের প্রচেষ্টায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও প্রায় ২শত হেক্টর জমিতে বেশি পাট চাষ হয়েছে। আর এই পাট চাষে আগ্রহ বাড়াতে চাষিদের সরকারি ভাবে প্রণোদনাও দেয়া হয়েছে। এতে করে পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর এই উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়ে ছিলো ১৮ শ ২০ হেক্টর । আর অর্জিত হয়েছে প্রায় ২ হাজার হেক্টর।
এদিকে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং পাট সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় চলতি বছরে এই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রায় ২ হাজার ৪০০ জন পাট চাষিকে তিন কেজি টিএসপি, তিন কেজি পটাশ, ছয় কেজি ইউরিয়া এবং প্রতি বিঘায় এক কেজি বীজ প্রদান করা হয়। পাট চাষে চাষিদের আগ্রহ বাড়াতে উপজেলার ১০০ জন পাট চাষিদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
উপজেলার পাটচাষি জিল্লুর জানান, এক যুগ ধরে তিনি ২ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে আসছেন। কয়েক বছর আগে বাজারে পাটের দরপতন হওয়ায় গত দুই বছর পাটের আবাদ করেননি।
গত বছর পাট চাষ করে কৃষকদের লাভবান হতে দেখে এ বছর আবারো তিনি ৩ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন।
পাট অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে প্রণোদনার সার ও বীজ পেয়েছেন। এবছর পাটের ভালো দাম পেলে এবং সরকারিভাবে আবারো প্রণোদনা দিলে প্রতি বছরই পাট চাষ করবেন বলে জানান।
বদলগাছী উপজেলার পারসোমবাড়ী গ্রামের পাটচাষি তারিকুল ইসলাম জানান, গত বছর চার বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করে ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। গত বছর ২ হাজার ৬শত টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেছেন।
বদলগাছী সদর ইউনিয়নের জিধিরপুর গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, বর্তমান বাজারে ধানের পাশাপাশি পাটের দামও বেশি এবং কম খরচে পাট চাষ করা যায়। ফলে কৃষকরা পাট চাষে বেশি আগ্রহী হয়ে পড়ছে।
বদলগাছী পাট অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা জাহিদ বলেন, পাটের সোনালী অতীত ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি।
পাট চাষ বৃদ্ধি করতে কৃষকদের পাট চাষে প্রশিক্ষণসহ প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে সার ও বীজ দেয়া হচ্ছে। দেশে ও বিদেশে আমাদের পাটের চাহিদা বাড়ছে। গত বছরের মতো এ বছরেও কৃষকরা পাটের দাম ভালো পাবে বলে আশা করছি। আগামীতেও আরও বেশি জমিতে পাটের চাষ হবে।
বদলগাছী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হাসান আলী বলেন, পাট চাষাবাদে এলাকার কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এলাকার কৃষকদের পাট চাষে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে সভা ব্যাপক ভাবে করা হয়েছে। ফলে এইবার লক্ষমাত্রা চেয়ে বেশি জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে।