রোগীদের জিম্মি করে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন কীভাবে?

আভা ডেস্ক চট্টগ্রামে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে, এটি স্বস্তিদায়ক। চট্টগ্রামে এক সাংবাদিকের শিশুকন্যার মৃত্যুতে অভিযুক্ত ম্যাক্স হাসপাতালকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করার প্রতিবাদে এ ধর্মঘট ডাকা হয়েছিল।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিনিধি এবং ওষুধ প্রশাসনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ম্যাক্স হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে অনিয়ম ও জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই অর্থ জরিমানা করেন।

র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের বক্তব্য উদ্ধৃত করে সোমবার যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অখ্যাত ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নমুনা পরীক্ষা করিয়ে সেগুলো ম্যাক্স হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্যাডে প্রিন্ট করিয়ে রোগীদের দেয়া হতো এবং এর জন্য বাড়তি অর্থ নেয়া হতো। র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান পারিচালনাকালে ম্যাক্স হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে অনুমোদনহীন ওষুধ পেয়েছেন।

এছাড়া অস্ত্রোপচারের কাজে ব্যবহৃত মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু সার্জিক্যাল আইটেমও পেয়েছেন। মেয়াদোত্তীর্ণ উপাদান দিয়ে অস্ত্রোপচার করা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ তা সহজেই অনুমান করা যায়। প্রশ্ন হল, মেয়াদোত্তীর্ণ উপাদান দিয়ে অস্ত্রোপচারের সময় চিকিৎসকরা প্রতিবাদ করেননি কেন? এতে এটাই স্পষ্ট, এর সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক উভয়েই জড়িত।

দুঃখজনক হল, র‌্যাবের অভিযানের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে ‘বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান সমিতি’ ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। যেখানে এ ঘটনার জন্য চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের লজ্জা পাওয়া উচিত, সেখানে তারা রোগীদের জিম্মি করে ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন কীভাবে? এতে চট্টগ্রামের রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। টানা ২০ ঘণ্টা রোগীদের ভুগিয়ে ধর্মঘট স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল ও চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রের মালিকরা।

আমরা মনে করি, দেশের অন্যান্য চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানেও রোগীদের পরীক্ষার নামে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয় কিনা, তা জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখা দরকার। তা না হলে চিকিৎসাসেবা নিতে গিয়ে রোগীদের বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে। দেশের চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা মানসম্মত সেবা প্রদান করছে, তা যাচাই করার জন্য বছরব্যাপী নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা দরকার।

সেবার কথা বলে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান প্রতারণার আশ্রয় নেয় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া উচিত। মনে রাখা দরকার, কোনো চিকিৎসক সামান্য অমনোযোগী হলে কিংবা সেবামূলক কোনো প্রতিষ্ঠানে সামান্য ত্র“টি থাকলে রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে।

চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কোনো অজুহাতেই কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি পালন করা উচিত নয়। সেবার প্রতিশ্র“তি দিয়েই প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ও প্রত্যেক ব্যক্তি চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। কাজেই কথায় কথায় কর্মবিরতির মতো কর্মসূচি ঘোষণার আগে তাদের ভাবা উচিত এতে কত মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হতে পারেন।
যুগান্তর

Next Post

মৃত্যুপুরীতে সাক্ষাৎ যমের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকে জয় করেই ফিরছে থাই কিশোররা

মঙ্গল জুলাই ১০ , ২০১৮
আভা ডেস্ক :মৃত্যুপুরীতে সাক্ষাৎ যমের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত মৃত্যুকে জয় করেই ফিরছে থাই কিশোররা। গুহায় আবদ্ধ টানা ১৬ দিনের গুমোট পরিবেশ থেকে সোনালি আলোয় বেরিয়ে আসছে তারা। ঘুটঘুটে অন্ধকার থেকে বেরিয়ে পৃথিবীর আলো-বাতাসে মুক্তির নিঃশ্বাস ফেলছে কিশোর ফুটবলাররা। গত দু’দিনে একে একে মৃত্যুঞ্জয়ী ৮ কিশোর মুক্ত দুনিয়ার মুখ […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links