আভা ডেস্কঃ ফুল সৌন্দয্যর প্রতীক।তবে সেটি যদি হয় পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন একটি পূনাঙ্গ ফুলের বাগান তাহলে তো কোনো কথায় নেই আর এমনি নজর কাড়া ফুলের বাগানের ফলে বদলে গেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের দৃশ্যপট। সেখানে লক্ষ করলে দেখা মিলে নানা রকম বাহারী দেশি-বিদেশি নয়নাভিরাম মনমগ্ধ করা ফুলের সমারোহে। অনেক উৎফুল্ল হয়ে গল্প গুজব করে রোগির লোকেরা বসে,এখানে ও অধির আগ্রহী সাথে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা বসে বসে গল্প গুজবে সময় কাটান। হাসপাতালের রুম থেকে বাইরে বের হয়ে গেটের দিকে তাকাতে চোখ পড়ে ফুলের বাগানে। দেখে মনে হবে ছোট একটা পার্ক। আবার দেখা মিলে অনেক রোগির যারা খানিকটা উঠে দাঁড়াতে পারলে অনেকেই ছুটে যাচ্ছেন ফুলের বাগানে। যেন ফুলের বাগানে এলেই ভালো হয়ে যায় তাদের মন। প্রতিদিনই সকাল আর বিকেলে রোগীদের ভিড় জমাছে বাগানে।সাথে বহিঃরাগত অনেক মানুষ এসে সময় কাটাচ্ছেন সেখানে। কেউ কেউ হেটে হেটে ফুলের সুবাস আর নির্মল বাতাসে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলছেন বাগানে বসেই। দৃশ্য দেখে মনে হবে হাসি কান্নায় ভরা হাসপাতালে রোগীদের মন কেড়েছে দৃষ্টিনন্দন করছে ছোট এই ফুলের বাগান।
চারঘাটের বজলু মিয়া। পেশায় শিক্ষকতা করেন। তার ছেলে শিশির আহম্মেদকে ভর্তি করেছেন রামেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। তিনি প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে অসুস্থ সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালের দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান ঘুরে ঘুরে দেখান। প্রভাষক বজলু মিয়ার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, মেডিকেলের বিছানায় শিশির সব সময় চুপচাপ থাকে। বাগানের কাছে আসলে ওর মুখে হাসি ফুটে।যদি ও ওয়াড থেকে দুরে হয় তবে তারপর ও শিশির খুব খুশি হয়। ফুল দেখে। কথা হয় বাগানে ঘুরতে আসা আরেক রোগী রামেনা বেগমের সঙ্গে। তার স্বামী ১২ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। তিনি সকাল নতুবা বিকেলে সুযোগ হলেই তার স্বামীকে নিয়ে ফুলের বাগানে ঘুরতে আসেন। দৃষ্টিনন্দন এ বাগানের পাশে যতক্ষণ থাকেন তাকে ততক্ষণ তাদের বেশ ভালো লাগে বলে জানান তিনি। হাসপাতালের দৃষ্টিনন্দন এই ফুলের বাগান দেখে বজলু মিয়া আর রামেনা বেগমের মতো আরো অনেক রোগী ও তাদের স্বজন বেশ খুশি। তাদের দাবি, ফুলের বাগানের জন্য (রামেক)মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। আগের তুলনায় এখন মেডিকেলের সর্বত্রই পরিষ্কার ঝকঝকে থাকে প্রাায় সময়।এই বাগানের কারণেই বর্তমানে (রামেক) হাসপাতালটি ফুলের মেডিকেল হিসেবে পরিচিতি পাবে অনেকে বলছেন। এই বাগান ঘুরে দেখতে মেডিকেলের রোগী ও তাদের স্বজনদের পাশাপাশি অনেক ইনটার্ন ডাক্তার কলেজের শিক্ষাথীদেকে ও দেখা যায়।আবার অনেকেই প্রতিদিন ভিড় জমান সেখানে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,এ বাগানে অনেক ধরনের লাল গোলাপ, , চন্দ্রমলিক্কা, সিলসিয়া, ডালিয়া, কচমচ, গাঁদা, সূর্যমুখি, গোলাপ, শিউলি, বেলি, , চামেলী, হাসনাহেনা, দেশি-বিদেশি অর্ধ শতাধিক জাতের ফুলের চারা রয়েছে। দেখে মনে হয় যেন সবুজের বুকে লাল গোলাগের একটুকরো হাসি। রামেক হাসপাতালের সামনে একটি ফুলের বাগানের সিদ্ধান্ত নেন কতৃপক্ষ । ১ বছর আগে প্রথমে দেশি জাতের কিছু ফুলের গাছ রোপণের মধ্য দিয়ে সৌখিন ফুলের বাগান গড়ার স্বপ্ন শুরু করলেও মাত্র কয়েক মাসে সেই স্বপ্ন পূরণে সফল হয়েছে।
এই ফুলের বাগান সম্পর্কে জানতে চাইলে রামেক হাসপাতালে অর্থোপেডিক্সের ডাঃদ্বীন মোহাম্মাদ সোহেল বলেন, রোগীর মনে আনন্দ দেয়ার জন্যই বাগানটি করেছেন কতৃপক্ষ, তবে বাগান করার পর শুধু রোগীর স্বজনরা বা রোগীরাই বেশ খুশি হয় তা নয় এখানে যে আসেন তারাই দেখে মগ্ধ হয়।তিনি বলেন, ফুলের গাছগুলো আমার কাছে সন্তানদের মত তিনি নিয়মিত বাগান ঘুরে ঘুরে ফুলের গাছগুলো দেখেন। এখনো অবসর সময় পেলে দেখতে আসেন। সরেজমিনে গিয়ে খোজ নিয়ে জানা যায়, বাগানটি আরো দৃষ্টিনন্দন করার জন্য অনেক সময় দ্বীন মোহাম্মদ সোহেল ডাক্তার ব্যক্তিগত ভাবে কিছু কিছু কাজ করান ফুলের বাগান সুন্দর রাখার জন্য। হাসপাতালের সূত্রে জানা যায় , রামেক হাসপাতালে প্রতিদিন হাজার হাজার অধিক লোক চিকিৎসা নিতে আসেন। এসব লোকের অনেকেই বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। আর যারা ভর্তি আছেন, তাদের স্বজনরা বাগানে নিয়ে আসেন এসে বসার জন্য। বেশ কয়েকজনকে নিয়মিত ফুল গাছের যত্ন নেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে এখানে।
সিল্কসিটি