রামেক হাসপাতালের নারী চিকিৎসক যৌন হয়রানির শিকার, কর্মকর্তার বদলি

আভা ডেস্কঃ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের এক নারী চিকিৎসককে যৌন হয়রানির ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একইসঙ্গে যৌন হয়রানির ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অভিযুক্ত কর্মকর্তার নাম ডা. রাফিউল হাসান। তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিকল্পনা ও গবেষণা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ছিলেন। যৌন হয়রানির পর তাকে বরগুণায় বদলি করা হয়েছে। আর ভুক্তভোগী ওই নারী চিকিৎসক এখনও রামেক হাসপাতালে কর্মরত।

তিনি জানান, সম্প্রতি কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণে তাকে ২৯ আগস্ট শুনানির জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ডাকা হয়। এ অবস্থায় কী করা যায় সেই পরামর্শ করার জন্য তিনি ডা. রাফিউল হাসানের খোঁজ পান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাকে ২৪ আগস্ট অফিসে দেখা করতে বলেন। সেদিন বিকালে তিনি দেখা করতে গেলে ডা. রাফিউল হাসান তাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান। নিজেকে অধিদপ্তরের প্রভাবশালী কর্মকর্তা উল্লেখ করে ওই নারীকে বলেন, তার এই বিপদ থেকে শুধু তিনিই তাকে উদ্ধার করতে পারেন।

সেদিন সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে ওই নারী চিকিৎসককে ভয় দেখান ডা. রাফিউল। সান্তনা দেওয়ার নামে তিনি ওই নারীর পিঠে ও ঘাড়ে হাত দেন। শেষে কোনরকম পরামর্শ দেওয়া ছাড়াই পরদিন সকাল ৯টায় আবার দেখা করতে বলেন। কিন্তু তার পৌঁছাতে আধাঘণ্টা দেরি হয়। এ কারণে তিনি কথা না বলে আবার বিকাল ৪টায় আসতে বলেন।

কথা অনুযায়ী, সময়মতোই হাজির হন ওই নারী চিকিৎসক। কিন্তু তখনও তাকে এক ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়। এরপর বিকাল ৫টা বাজলে অফিসের সবাই চলে যেতে থাকেন। তখন ডা. রাফিউল ওই নারী চিকিৎসককে তার পাশের চেয়ারে বসতে বলেন। এতে তিনি রাজি না হলে ডা. রাফিউলই উঠে এসে পেছন থেকে ওই নারীকে জড়িয়ে ধরেন। শুধু তাই নয়, ওই নারীর স্পর্শকাতর অংশে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেন। ওই নারী চিৎকার দেওয়ার কথা জানালে ডা. রাফিউল বলেন, বিনিময়ে কিছু না দিলে তাকে কেন তিনি সাহায্য করবেন। তখন জোর করে নিজেকে ছাড়িয়ে ওই কর্মকর্তার কক্ষ থেকে বের হয়ে আসেন ভুক্তভোগী।

তিনি বলেন, ডা. রাফিউলের অফিস কক্ষটি এমনভাবে সাজানো যে, দরজা খোলা থাকলেও ভেতরে তার ডেস্কের কাছে কী হচ্ছে তা কেউ দেখতে পারবে না। সে কারণে তিনি সুযোগটা নিয়েছিলেন। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এতে তিনি তার যথাযথ নিরাপত্তা প্রদান ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানান।

অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে যোগাযোগ করা হলে ডা. রাফিউল হাসান বলেন, এসব বিষয় নিয়ে এখন তিনি কথা বলতে চান না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত মেডিকেল অফিসারকে বরগুণা জেলার একটি মফস্বল এলাকায় বদলি করা হয়েছে। তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ঘটনার তদন্তও করা হচ্ছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন এবং তাদের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Next Post

নিম্নমানের ১০টি ইঞ্জিন যুক্ত হলো বাংলাদেশ রেলওয়ে

শুক্র অক্টো. ৮ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ চুক্তি ভঙ্গ করে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম নামের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ১০টি ইঞ্জিনে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোজন করে সরবরাহ করেছে। ইঞ্জিনে নিম্নমানের যন্ত্রাংশ সংযোজনের অভিযোগ ওঠার পর গত ১৪ মাসেও যন্ত্রাংশ বদল করেনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় ত্রুটিপূর্ণ ইঞ্জিনগুলোই গত ৪ অক্টোবর গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ইঞ্জিনগুলো গ্রহণ […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links