রাবি’র নিয়োগ নিয়ে দরকষাকষি, অডিও ফাঁস

আভা ডেস্কঃ ১১ ঘণ্টা আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের শেষ কর্মদিবসে গণনিয়োগের বিতর্ক কাটতে না কাটতে এবার নিয়োগ দিয়ে দরকষাকষির অডিও ফাঁস হয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে পরিবহন দপ্তরে সাবেক প্রশাসক ও উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আলী হায়দারের সঙ্গে দুই চাকরিপ্রার্থীর কথোপকথনের দুটি অডিও। ফাঁস হওয়া অডিওর একটিতে একজন চাকরিপ্রার্থীকে বলতে শোনা যায়- ‘কত দিতে সামর্থ্য আছে।’

অন্যটিতে এক নারীকে তিনি কুপ্রস্তাব দিচ্ছেন। তবে এই কথোপকথনের অডিও তার নয় বলে দাবি করেছেন আলী হায়দার। তাকে ফাঁসাতে কেউ কারসাজির মাধ্যমে এটি করেছে বলেও দাবি তার। কথোপকথনের দুটি অডিওই সমকালের হাতে এসেছে। বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানের বাড়ি নাটোর জেলায়। আলী হায়দারের বাড়িও একই জেলায় হওয়ায় তাদের মধ্যে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল।

এম আবদুস সোবহান প্রথম মেয়াদে উপাচার্য হওয়ার পর আলী হায়দারকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এরপর ২০১৭ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পেয়ে অধ্যাপক আবদুস সোবহান তাকে পরিবহন দপ্তরের প্রশাসক করেন। কয়েক মাস আগে তিনি পরিবহন দপ্তর প্রশাসকের দায়িত্ব শেষ করেছেন। তিনি বেশির ভাগ সময় উপাচার্যের সঙ্গেই থাকতেন। উপাচার্যের কার্যালয় ও বাসভবনে তার অবাধ যাতায়াত ছিল।

ফাঁস হওয়া দু’জনের কথোপকথনটি তুলে ধরা হলো- আলী হায়দার :এখন ঘটনা হচ্ছে কী শোনো, আমি বলি। আসলে সেখানে লোকজন আছে তো; সিনিয়র লোকজন। ওরা আবার বিভিন্ন ধান্দায় থাকে; বোঝো না? চাকরিপ্রার্থী : স্যার, যা থাকে আপনি ম্যানেজ করেন। আপনি শুধু ওগুলা আমাকে বলবেন। আলী হায়দার :ওরা আবার খুব ভয় পায়। বোঝো না? চাকরিপ্রার্থী :কোনো সমস্যা নেই স্যার। বললাম, শুধু এটা আপনি আর আমার মধ্যে। আলী হায়দার :তোমার সামর্থ্য কতটুকু? চাকরিপ্রার্থী :স্যার, এটা আপনি বললে তারপর সামর্থ্য অনুযায়ী আমি চেষ্টা করব। আলী হায়দার :আমি এই কাজ করব না যে, তুমি একটা জিনিস বিক্রি করে এনে দাও। এটা করা যাবে না। চাকরিপ্রার্থী :এখন আমার বাবা হয়তো বা আমি খোলাখুলি বলি স্যার, তিনি এখন যে অবস্থায় আছেন; ৮-১০ পর্যন্ত উঠতে পারবেন। আলী হায়দার :ওইটুকুই ওইটুকুই? আমি তোমাকে বলি, আমি বলব না- ওইটুকুতেই হবে। তোমার যা আছে তা বিক্রি করার দরকার নেই। চাকরিপ্রার্থী :বুঝেছি স্যার। আলী হায়দার :তোমার অ্যাকাউন্ট আছে না? চাকরিপ্রার্থী :জি স্যার। আলী হায়দার :তোমার ওই অ্যাকাউন্ট থেকে পার করে দিবা। চাকরিপ্রার্থী :জি স্যার, আমি নতুন অ্যাকাউন্ট খুলেছি। এই বিষয়ে স্যার আপনি নিশ্চিত থাকেন- কেউ জানবে না। আমি তামিমা এবং সুমাইয়া থেকে আপনি এবং আপনার পরিবার সম্পর্কে জেনেছি। আলী হায়দার :(একজনের নাম অস্পষ্ট) দু’লাখ প্রথমে দিয়েছে তারপর আবার দিয়েছে। তুমি নিশ্চিত থাকো, যাও। চাকরিপ্রার্থী :ইনশাআল্লাহ স্যার। তবে আলী হায়দারের সঙ্গে কথোপকথনকারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ ছাড়াও তাদের আলোচনার মধ্যে থাকা তামিমা ও সুমাইয়ার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অন্যদিকে এক নারীর সঙ্গে আলী হায়দারের কথোপকথনের অডিওতে অন্তরঙ্গ আলাপ করতে শোনা যায়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে ওই নারীকে বলতে শোনা যায়- ‘স্যার, চাকরিটা আমার খুব দরকার, আমার পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনের সবার আর্থিক অবস্থা ভালো। শুধুই আমার আর্থিক অবস্থা খারাপ। কথোপকথনকারী এই নারীর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলী হায়দার বলেন, ‘আমাকে এর আগে ২০১৭ সালে এক সাংবাদিক ফোন রেকর্ডিংয়ের কথা বলেছিল। এগুলো আমার কথা না। আমি কারও সঙ্গে টাকার লেনদেন করিনি। কাউকে ক্যাম্পাসে চাকরিও দেইনি। অধ্যাপক সোবহান যাওয়ার আগে যে নিয়োগগুলো দিয়েছে সেখানে খোঁজ নেন, দেখবেন আমার কেউ চাকরি পায়নি।

অনেকে বলে, আমি চাকরি দিয়ে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছি। আসলে এসব ভুয়া। ভিসি স্যারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো ছিল, তাই কেউ ষড়যন্ত্র করে এগুলো করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সাংবাদিকরা বলেছেন এগুলো নাকি আমার কথা। কার কী রেকর্ড আমার নামে চালিয়ে দিয়েছে। আমি এখনও কথোপকথনের অডিও নিজ কানে শুনিনি। আমি অনিয়ম বা দুর্নীতি করিনি। পরিবহন দপ্তরের দায়িত্বে ছিলাম দুর্নীতি করেছি কেউ বলতে পারবে না।’

এ বিষয়ে জানতে রাবির সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহানকে মোবাইলে একাধিকবার কল করা হয়, কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

সূত্র সমকাল

Next Post

রিমান্ড শেষে কারাগারে মামুনুল

সোম মে ১০ , ২০২১
আভা ডেস্কঃ হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সোমবার (১০ মে) রিমান্ড শেষে মামুনুল হককে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসী তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত ১৮ এপ্রিল দুপুরে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links