রাজশাহী-৩ আসনে অরাজনৈতিক প্রার্থী ও দূর্নীতিবাজের হাতে দলীয় নৌকা

পবা প্রতিনিধিঃ আগামী ২৮ নভেম্বর সারাদেশে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামীর এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চুড়ান্ত মনোনয়ন শেষ করেছে বর্তমান সরকার দলীয় তথা আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়। এরই মধ্যে দল থেকে মাদকাসক্ত,  একাধিক মামলার আসামী ও রাজনীতির আতুরঘর থেকে বেরিয়ে নৌকার মাঝির দ্বায়িত্ব পাওয়া নিয়ে চরম সমালোচনা মুখে পড়েছে রাজশাহী- ৩ আসনের  (পবা-মোহনপুর) সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন । মাত্র কয়েকদিন আগে তৃনমুলের একজন ত্যাগী নেতা ও সাংসদের কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়েছে। এই নিয়ে তৃনমুল নেতাকর্মীদের মাঝে  চরম অসন্তোস বিরাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমপি ভবিষ্যতে ক্ষমতার রাজনীতির রোডম্যাপ ঠিকঠাক রাখতে বিকল্প নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে চান না। বরং রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রে রূপ দিতে যে যার মতো আস্থাভাজনদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন নিজস্ব শক্তির নিশ্ছিদ্র বলয়। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ ছাড়াও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে বহাল এই নিখুঁত কারুকাজ। ত্যাগীদের ত্যাগ করে বসিয়ে দিচ্ছেন নিজের ধ্বজাধারীদের। (তথ্যসুত্র সংরক্ষিত)

এ সুবাদে বিতর্কিতরাও এমপিদের আশীর্বাদে যেখানে-সেখানে দলের গুরুত্বপূর্ণ পদপদবিতে শক্ত আস্তানা গেড়ে বসছেন। কেউ কেউ মনোনয়ন পেয়ে স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধিও হয়েছেন।

এসব কাজে সঙ্গী হাইব্রিড ও বিতর্কিতরা। যারা এখন এমপি আয়েন উদ্দিনের অতি আস্থাভাজন। নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় তিনি নিজের ভাইকে বানিয়েছেন ঘাসিগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান। ভগ্নীপতি আব্দুস সালাম মোহনপুর আওয়ামী লীগের সভাপতি। একেবারে নিখুঁত পরিবারতন্ত্র।

তবে এমপি আয়েন উদ্দিন সংগঠনের কোনো ধার ধারেন না। সাধারণ লোক তো দূরের কথা, হামলা-মামলার ভয়ে দলের পদধারী কোনো নেতাও আয়েনের অপকর্মের বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নন।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, গত ২১ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ডের সভায় একটি চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হয়। এই প্রার্থীতা ঘোষনার পর থেকে তৃনমুল নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়। কারন অনুসন্ধানে তৃণমূল নেতারা জানায়, স্থায়ী এমপিদের স্বজনপ্রীতি ও অর্থনৈতিক সুবিধায় দলকানারাই পেয়েছে এবারের মনোনয়ন। যেখানে ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার পর রাজাকার আলবদরের এই দেশের মাটিতে বিচারিক কার্য চলমান রেখেছে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। এরপর আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালে সরকার গঠনের পরে দক্ষ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শুধু জনগণকে নিরাপদ রাখেনি, আওয়ামী লীগকেও সুসংগঠিত করেছে। আর জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে  দল গঠনের পর থেকে বংশ পরমপরায় আওয়ামী লীগ করে আসছে বহু ত্যাগী নেতা। এমনকি দলের যেকোন দুর্দিনে নির্ভীক মুজিব সেনার ন্যায় অগ্রনী  ভুমিকা রেখেছে সব সময়। তবুও তাদের দলীয় মুল্যায়নের খাতায় যেন অবমূল্যায়ন। আবার দলীয় আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অনেকেই নিজের মূল্যবোধ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের দাবীদ্বার হিসেবে কেউ চেয়ারম্যান কেউ বা পৌর মেয়র পদ প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু সকল আশা-আকাঙ্ক্ষার গুড়েবালি পড়েছে টাকার কাছে। দলীয় নীতি-নৈতিকতা হারিয়ে টাকার কাছে বিক্রি হয়ে দুর্নীতিবাজ, মাদকাসক্ত, ডাকাতি- ছিনতাই ও অস্ত্র মামলার আসামীদের নৌকার মাঝির দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, দলীয় নৌকা তুলে দেয়া হয়েছে বাবার পরিবর্তে ছেলের হাতে। এই নিয়ে দলের নেতৃত্ব এখন চরমে। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, রাজশাহী-৩ আসনের মোহনপুর উপজেলা ৪নং মৌগাছী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীর দলীয় মনোনয়ন নৌকা পেয়েছেন আল-আমীন বিশ্বাস। মাত্র ১.৫ লক্ষ টাকার সম্পদ নিয়ে বা দেখিয়ে ২০১৬ সালের নির্বাচনে আসেন চেয়ারম্যান আল-আমীন বিশ্বাস।  মাত্র চার বছরের ব্যবধানে সেই সম্পদ বেড়ে হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। এই আল-আমীন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক ছিনতাই ও অস্ত্র মামলা। শুধু তাই নয় তার বিরুদ্ধে রয়েছে মাদকের সম্পৃক্ততা। তার বিরুদ্ধে জমি জবরদখল, প্রকল্পের টাকা দুর্নীতিসহ পাহাড় সমান অভিযোগ রয়েছে। এই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যানের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকার দলের একাধিক ব্যক্তি বলেন, মাত্র কয়েকমাস আগেও একটি প্রকল্পের ২৭ লক্ষ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ উঠেছে। পরে স্থানীয় সরকার রাজশাহী বিভাগের উপ-পরিচালক ড. চিত্রলেখা নাজনীন তদন্ত করে  লক্ষ লক্ষ টাকার হেরফের পান এবং তাকে প্রকল্পের সমস্ত টাকা নিয়ে সেবারের মত মাফ করেন। এরকমভাবে সে ব্যাপক দুর্নীতি করেছে তা নাহলে এত সম্পদ আসলো কোথা থেকে? দুদককে তদন্ত করার জন্য আহব্বান জানাচ্ছি। অপরদিকে ৮ নং বড়গাছী ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী হিসাবে দলীয় নৌকা পেয়েছেন শাহাদাত হোসেন সাগর। পিতা এমদাদুল হকের বদৌলতে তিনি এমপি আর্শিবাদপৃষ্ঠ হয়ে যান নৌকার মাঝি। এ ব্যপারে তৃণমূলে চলছে নানা গুঞ্জন।

তবে এবিষয়ে ৪ নং মৌগাছী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রার্থী আল-আমীন বিশ্বাসের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

কথা বলতে এমপি আয়েনকে ফোন দিলে তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।

Next Post

নন্দীগ্রামে আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

বৃহস্পতি নভে. ১৮ , ২০২১
নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধিঃ বগুড়ার নন্দীগ্রামে গত ১৮ই নভেম্বর বেলা ১১টায় নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিফা নুসরাতের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, পৌর মেয়র আনিছুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ রায়হানুল ইসলাম, নন্দীগ্রাম […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links