রাজশাহী রক্ষা বাঁধে নেমেছে ধস, সংরক্ষণের নাম অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ।

আভা ডেস্ক : পানির উচ্চতা প্রত্যাশার চেয়েও বেশি কমেছে রাজশাহীর পদ্মায়। কিন্তু হঠাৎ করেই ধস নেমেছে শহর রক্ষা বাঁধে। বর্তমানে জিও ব্যাগ ফেলে ধস ঠেকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

কিন্তু বছর না ঘুরতেই দেখা দিচ্ছে ভেঙে তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। কখনো কখনো পুরো বাঁধই তলিয়ে যাচ্ছে নদীগর্ভে। এমন ধস নামায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন নদী পাড়ের মানুষ। বছরের পর বছর ধরে শহর রক্ষার নামে বাঁধ সংরক্ষণের নামে কোটি কোটি টাকা লোপাট চলছে। এখন তা যেন ডাল-ভাতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু লুটপাট থামছেই না। এখনো জিও ব্যাগ ফেলার নামে চলছে লুটাপট। গত শুক্রবার ধরে এই অপকর্মে নেমেছেন রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা। অথচ গত বছরই রাজশাহী নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার মাত্র ১৫১ দশমিক ৭৭ মিটার বাঁধ সংরক্ষণের জন্য ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করেছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু বছর না ঘুরতেই সেই বাধ এখন ভেঙে নদীগর্ভে যেতে শুরু করেছে।

সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রাজশাহীর পদ্মা নদীর শ্রীরামপুর এলাকায় রাজশাহী পুলিশ লাইনসের সামনে টি-গ্রোয়েন এবং শহররক্ষা বাঁধে একের পর এক ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। পানি নামতে থাকায় সবেচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে শহররক্ষা বাঁধের। গত বছর যেখানে ১ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যয় করে কংক্রিটের ব্লক ফেলানো হয়েছিল, এখন সেই ব্লকগুলো নদীগর্ভে বিলিন হতে শুরু করেছে। বাঁধ ভেঙে ব্লক চলে যাচ্ছে নদীগর্ভে। এ নিয়ে পুরো শহররক্ষা বাঁধই পড়েছে হুমকিরমুখে। পাউবো এই বাঙনকবলিত এলাকায় লাল নিশান টাঙ্গিয়ে দিয়ে রেখেছে। সেখানে জনসাধরণকেও চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। আর ভাঙনরোধে শ্রমিকরা জিও ব্যাগ কাঁধে করে নিয়ে গিয়ে সেখানে ফেলছেন। কিন্তু সেই ব্যাগগুলোও গিয়ে পড়ছে নদীগর্ভে।

স্থানীয় নজরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, গত সপ্তাহ থেকে পদ্মায় পানি কমতে শুরু করার পর থেকেই রাজশাহী শহরররক্ষা বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিতে থাকে। এখন পানি যত নামছে, বাঁধের বিভিন্ন অংশে ভাঙনের পরিমাণও ততই বেশি দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে শ্রীরামপুর এলাকায় যে স্থানে গতবার প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে ব্লক বসিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড, এবার সেখানেই সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। ব্লকগুলো গত শুক্রবার থেকে নদীর মধ্যে চলে যাচ্ছে। আর দেখা দিয়েছে বড় আকারের কয়েকটি ফাটল।

শ্রীরামপুরের স্থানীয় বাসিন্দা মাজেদুর রহমান বলেন, ‘শুনেছি কংক্রিকেট ব্লক বসানোর কথা ছিল। কিন্তু আমরা দেখেছি কোনো মতে বালু আর সিমেন্টের মিশ্রণ দিয়ে ব্লক করে নদীতে ফেলা হয়েছে। ফলে অনেক ব্লকই ফেটে ভেঙে গেছে। এ কারণে ব্লক মজবুত হয়নি। আবার যে পরিমাণ ফেলার কথা ছিল, সে পরিমাণ ব্লকও না ফেলে টাকা হরিলুট করা হযেছে। এখন আবার নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলা হচ্ছে। এই বালুর বস্তা ফেলানোর নামেও লাখ লাখ টাকা হরিলুট করবে পাউবো। এভাবেই তারা প্রকল্পের নামে সরকারের কোটি কোটি টাকা নষ্ট করছে। আর গোটা শহর পড়ছে হুমকিরমুখে।’

এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত ৫ বছরে পাউবো রাজশাহী শহররক্ষা বাঁধ সংরক্ষণের নামে অন্তত ১০০ কোটি টাকা খরচ করেছেন। কিন্তু রাজশাহীর বুলনপুর থেকে নগরীর তালাইমারী পর্যন্ত শররক্ষা বাঁধের বিভিন্ন অংশে প্রতি বছরই ফাটল দেখা দিচ্ছে। গত বছর নগরীর পঞ্চবটি এলাকায় প্রায় পাকা রাস্তাসহ ৫০ মিটার বাঁধ সম্পূর্ণ নদীগর্ভে তলিয়ে যায়। অথচ সেখানেও বাঁধ সংরক্ষণ প্রকল্পের নামে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এছাড়াও নগরীর বুলনপুর ও শ্রীরামপুরে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই হাজার হাজার বস্তা জিও ব্যাগ ফেলানো হয় নদীতে। কিন্তু বর্ষা শেষে পানি কমতে শুরু করলেই দেখা দেয় ভাঙন। আবার তখন নতুন প্রকল্প করে ফেলতে শুরু করা হয় জিও ব্যাগ। কখনো জরুরী প্রকল্প করেও জিও ব্যাগ ফেলানো হয়।

জানতে চাইলে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোকলেসুর রহমান বলেন, কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো সুযোগ নেই। কারণ প্রকল্প অনুমোদনের পর টাস্কফোর্সের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন করা হয়। ঠিকাদার কাজ করলেও টাস্কফোর্স সেই কাজের তদারকি করে। তাদের সুপারিশের ভিত্তিতেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে টাকা পরিশোধ করা হয়। তাই এখানে কাজের মানের কোনো হেরফের হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। এখন যেটা হয়েছে সেটা দুর্ঘটনাই বলা যায়।

রাজশাহী পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মাহাবুব রাশেল বলেন, গত বছর কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা বলতে পারবো না। তবে এখন বাঁধে বাঙন দেখা দেওয়ায় জরুরী ভিত্তিতে জিও ব্রাগ ফেলানো হচ্ছে। তবে গতবার যখন মেরামত করা হয়, তখন সবচেষ্টাই করা হয়েছে। কিন্তু বাঁধের বাঙন রোধ করা যাচ্ছে না।’

জানতে চাইলে রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মুখলেছুর রহমান বলেন, এ নিয়ে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
সিল্কসিটিনিউজ

Next Post

মুখ খুললেন এক সময়ের সাড়া জাগানো বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত।

বুধ সেপ্টে. ২৬ , ২০১৮
আভা ডেস্ক : গত বছরের শেষের দিকে হলিউডের অস্কারজয়ী প্রযোজক হার্ভে ওয়েনস্টেইনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী যৌন হেনস্তার অভিযোগ তোলেন। তাদের মুখে হেনস্তার কথা শুনে সাহসী হয়ে ওঠেন আরো অনেকে। এরপর ‘মি টু’ হ্যাশট্যাগে দুনিয়াজুড়ে নারীরা তাদের যৌন হেনস্তার কথা জানাতে শুরু করেন। বিশ্ব শোবিজ অঙ্গনের অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে ভারতের অনেক […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links