রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম, মাসিক চাঁদা ১৫-২০ লাখ।

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন : অনিয়ম যখন নিয়ম হয়, তখন পদে পদে হয় বিপদ।নগর সড়ক দুর্ঘটনার অনেক অংশেই দায়ী রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপর বর্তায়,যেখানে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলতে দেওয়া সহ, নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা। নগরীতে প্রতিনিয়তই ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, যা ট্রাফিক পুলিশের অনিয়মকেই দায়ী বলে মনে করছে সুধী সমাজ। পুলিশের এই দপ্তটিতে গুটিকয়েক অসাধু কর্মকর্তার অনিয়মেই ভেংগে গেছে নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থা । রাজশাহী মহানগর ট্রাফিক পুলিশের অনিয়মের কারনেই চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারন মানুষকে। এই দপ্তারের চার কন্সটোবল বেলাল, ওবাইদুল, আসলাম, নজরুল মিলে চালাচ্ছেন সকল অপর্কমের রুপরেখা। নগরীতে চলাচল অবৈধ ও ফিটনেসবিহীন জান অটো, ভুটভুটি, ট্রলি, সিএনজি, ইমা, বাস, ট্রাক মাসিক মাসোয়ারি তালিকা সহ কত টাকায় গাড়ি চলবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়ার কাজ টি করেন তারা। এছাড়াও মামলা খেয়ে যখন ট্রাফিক অফিসে কোনো গাড়ি যায় তখন এই চার রতি দেন- দরবার করে গাড়ি ছেড়ে দেন অর্থের বিনিময়ে।কোন সার্জেন্ট কতটি মামলা দিলো, কার ভাগে কত কমিশন যাবে তা নিয়ন্ত্রণ করতেই ( মামলা প্রতি একপ্রকার কমিশন পেতে) দুইটি রেজিস্টার মেনটেন্টেন্স করেন ওবাইদুল। অপর দিকে ইমা স্ট্যান্ড , সিএনজি স্ট্যান্ড, বাস স্ট্যান্ড , ট্রাক স্ট্যান্ড থেকে প্রতিমাসে মাসিক মাসোয়ারা নেওয়াও অগনিত অভিযোগ বহুদিনের, এরপরও বিভিন্ন কুরিয়ার কম্পানি থেকেও নেওয়া হয় মাসিক চাঁদা। চার ভাগে ভাগ করে মহানগরের ট্রাফিকের চাঁদা তোলার দ্বায়িত্বে আছেন অঘোষিত ক্যাশিয়ার বাক্কার, কন্সটোবল মুর্শেদ, টিএস আই তোহা। নাম প্রকাশে অনৈচ্ছুক এক পুলিশ সদস্য বলেন মাসে প্রায় ১৫-২০ লক্ষ টাকা চাঁদা উঠান ট্রাফিক পুলিশ। এদিকে রাজশাহী, নাটোর, নঁওগা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, থেকে আসা বিভিন্ন যানবাহন যাদের মাসিক চাঁদায় নাম নেই তাদের ভোগান্তি একটু বেশি। মাসিক চাঁদায় রাজশাহীর বাহিরে আছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ইরফান, মোজ্জাম্মেল হক রাইস মিলের ট্রাক মালিক। নঁওগা ট্রাক মালিক সমিতি থেকেও নেওয়া হয় মাসিক চাঁদা। অনুরুপ চাঁদার তালিকায় আছে নাটোর ট্রাক, সিএনজি, বাস মালিকদেরও নাম, বাদ নেই মহানগর রাস্তার দুই পাশের ফুটপাতের তালিকাও।
অনুসন্ধানী এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম দুর্নীতির অভিন্ন চিত্র। প্রতিবেদনে উঠে আসে মাসিক কত টাকা কাকে, কখন, কোথায়, কিভাবে দিতে হয় তার চিত্র।চাপাইনবাবগঞ্জ ঢাকা রুটে দৈনিক ৩৫০ টি নাইট কোচ গাড়ি প্রতিটি গাড়ি ১০০০/- টাকা মাসিক মাসোয়ারা নেয় বেলাল। আন্তঃজেলা ট্রাক সোনা মসজিদ স্থল বন্দর এলাকা হতে বের হলেই পার গাড়ি নেওয়া হয় ৭০০ টাকা। রাজশাহীর বাহিরের মালিকদের টাকা লেনদেন হয় বিকাশের মাধ্যমে।
রেলগেট সিএনজি মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে মাসিক চাঁদা নেওয়া হয় ত্রিশ হাজার টাকা । রাজশাহী শহরের প্রতিটি মাইক্রো স্ট্যান্ড থেকে নেওয়া হয় ৫ হাজার টাকা প্রতিমাসে । নসিমন করিমন নামের অবৈধ এই যান নগরীতে ঢুকলেই তাকে গুনতে হয় নগত টাকা যার পরিমান ট্রাফিক শাখা থেকেই নির্ধারিত।
নগরীর সবচেয়ে বড় গরুর হাট সিটি হাট নাম পরিচিত, সেখান থেকেও প্রতিটি গরুর ট্রাক থেকে নেওয়া হয় ১৫০০-২০০০ হাজার টাকা ।
রাজশাহী লোকাল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়ন কেও দিতে হয় মাসিক মাসোয়ারা অর্ণথায় মামলা দিয়ে হয়রানি করতে থাকে বলে জানান এক বাস মালিক। রাজশাহীতে আগত প্রতিটি বাস তাদের নিজস্ব কাউন্টার থেকে গাড়ি প্রতি ১০০০ টাকা দেন প্রতিমাসে।
রাজশাহী নগরীতে প্রায় ৩০০০-৪০০০ হাজার ব্যাটারি চালিত অটো চলে, যাদের প্রত্যেকেই প্রতিমাসে ৩০০ শত টাকা করে দিতে হয় ট্রাফিকে, যা একটি সিলিপের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত।এছাড়াও নগরীর বাহির থেকে আসা ফিটনেসবিহীন বড় গাড়ি যেমন ট্রাক, বাস, কে সার্জেন্ট মামলা দিলেই গাড়ির মালিকে গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা।
রাজশাহী নগরীর এক ট্রাক মালিক জানান গাড়ির কাগজপত্র ঠিক থাকলেও প্রতিমাসেই তাদের মাসিক ছাড়া দিতেই হয়, আর যাদের কাগজপত্র ঠিক নাই তাদের ভোগান্তি আরো বেশি।
অটো চালক রহিম জানান তার নিজস্ব চারটি অটো আছে, তার এই চারটি অটো গাড়ির জন্য মাসে ১২oo টাকা দিতে হয় ট্রাফিক পুলিশকে অন্যথায় অটো ধরে ট্রাফিক অফিসে নিয়ে গিয়ে মোটা অংকের টাকার মাধ্যমে ছাড়াতে হয়।
রাজশাহী রেলগেট এলাকার ফল দোকানদার জানাই, দিনের বেলায় ইট বালু ভর্তি ট্রাক নগরীর মধ্যে চললেও ট্রাফিক পুলিশ তাদের কিছু বলেন না, কারণ তারা মাসিক টাকা দেয় বলে।
পুলিশের একটি বিশেষ সূত্র জানাই, দীঘদিন একই জায়গায় চাকুরীর সুবাদে মহানগর ট্রাফিকের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এর জন্য দায়ী। তিনি আরো জানান এদের অন্যত্র বদলি না করলে এই চেন ভেঙে ফেলা দুস্কর। আমার মতে যাদের কারণে পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক শাস্তি স্বরূপ বদলি করা দরকার।

নিরাপদ সড়কের অনিশ্চিত দুর্ঘটনারর অনেক অংশে ট্রাফিক পুলিশের অনিয়ম দুর্নীতি দায়ী বলে জানান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রভাষক।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া মুখ্যপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখায়ের আলমের সাথে সর্বোপরি বিষয়ে কথা বললে তিনি, জানান আমার বিষয়টি জানা নেই, যদি কেউ অনিয়মের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলে তাহলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Next Post

বুড়িচংয়ে ড্রেজারের গর্তে পড়ে শিশু নিহত॥ ৫ ঘন্টারপর ডুবরি দলের উদ্ধার,অাটক ৪

রবি সেপ্টে. ২ , ২০১৮
কুমিল্লা প্রতিনিধি।। ১সেপ্টেম্বর শনিবার কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার উত্তর-পূর্ব খোদাইধূলী এলাকায় ড্রেজার দিয়ে মাটি কটার ফলে তৈরী গর্তে পড়ে রাইশা আক্তার (৭) নামে ২য় শ্রেণির এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেল ৫ টায় শিশুটি ঐ গর্তে পরে যায়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার বাকশীমূল ইউনিয়নের উত্তর-পূর্ব খোদাইধূলী […]

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links