শহিদুল ইসলাম, নগর প্রতিনিধিঃ রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ের সিপিও অফিসের চিফ পারসোনাল অফিসারের পিএ ফরাদ মজুমদারের বিরুদ্ধে নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ। পশ্চিম রেলওয়ের SWO(সিনিয়র ওয়েল ফেয়ার অফিসার) (বর্তমানে অবসর প্রাপ্ত) আবু তাহের মজুমদারের ছেলে ফরাদ মজুমদার নিজেকে রাজশাহী কলেজের ছাত্রলীগের ক্যাডার পরিচয় দিয়ে অনিয়ম দুর্নীতি করছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রেলকর্মচারী জানান। বিষয়টি নিয়ে সরজমিনে গেলে দুর্নীতির চাঞ্চল্যকর অনেক না জানা তথ্য বেরিয়ে আসে ফরাদ মজুমদারের বিরুদ্ধে।
ফরাদ মজুমদারের বাবা আবু তাহের মজুমদার ছিল রেলওয়ে জামাত শিবির (BREL)শাখার একজন সদস্য। সেই সুবাদে বিএনপির আমলে জমাতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর দেয়া চাকুরীর সুবাধে রেল অংগনে প্রবেশ ফরাদ মজুমদারের। পরবর্তিতে রেলওয়ে পশ্চিম শ্রমিকলীগ আরবিআর সদর শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়ে নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
সম্প্রতি তার দুর্নীতির সন্ধানে গিয়ে নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও রেকর্ড পাওয়া যায়। পরবর্তীতে একজন রেলকর্মী পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ভিডিও সাক্ষাৎকারে বলেন, কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করে সিপিও, রেল মন্ত্রণালয়ের নামে শত শত মানুষের নিকট টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকের চাকুরী দিয়েছে, তবে চাকুরী পায়নি শত শত চাকুরী প্রত্যাশিত ব্যক্তিরা। চাকুরী পাইনি এমন কয়েকজন অভিযোগ করে বলে, চাকুরী দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়ে এখন তা ফেরত চাইতে গেলে টাকা অফিসারের নিকট আছে বলে তালবাহানা করছে। ভুক্তভোগী অনেকেই এখন হতাশাজনক অবস্থায় জীবন যাপন করছে যে, তাদের টাকা বা চাকুরী আদৌও হবে কি না তারা এনিয়ে সংসয়ে আছে ভুক্তভোগীরা। তারা আরো জানায় ২০১০ সালের ওয়েম্যান পদের জন্য ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা নেন, এই কথিত শ্রমিকলীগ নেতা।
জানা গেছে বর্তমানে চলমান ওয়েম্যানের হাইকোটে মামলা বেনামে চালাচ্ছেন ফরহাদ মজুমদার। রাজশাহী সমগ্র পশ্চিম রেলওয়ে বিভিন্ন জেলা থেকে আগত চাকুরী প্রত্যাশিত ব্যক্তিদের নিকট প্রতারণা করে নিয়েই ক্ষান্ত হয়নি সে, তার ফয়দা হাসিলের জন্য অফিসারকে খুশি রাখতে চাকুরীর লোভ দিয়ে অনেক নারীকেই অশ্লীল অফার দেওয়ার ও অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী এক নারী জানায় তাকে চাকুরী দেওয়ার কথা বলে অফিসারের সাথে রেলওয়ে অফিসাস রেস্ট হাউজে দেখা করতে বলেন। সেখানে গেলে সে আমাকে সরাসরি স্যারকে খুশি করার জন্য কু প্রস্তাব দেয়। ভুক্তভোগী নারী বলে সেখান থেকে সে কৌশলে পালিয়ে যাই।
সিপিও অফিসের সামান্য একজন পিএ হয়ে বীরত্বের সাথে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন দপ্তর থেকে ঠিকাদারী কাজও বাগিয়ে, সেখানেও অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রেলের ঠিকাদারগোষ্ঠির। অভিযোগ আছে, অফিস ঠিকভাবে না করারও।
উক্ত বিষয়ে সরেজমিনে তার বক্তব্য চাইলে তিনি সাংবাদিকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন। সেই সাথে এও বলেন আমি একা নই, আরো অনেক রেল শ্রমিক নেতা আমার সাথে আছে। সেই সময় তার নিজ সংগঠনের দুজন নেতার নামও প্রকাশ করেন এবং নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, আমি এমন ধরনের কাজ করিনি, তবে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে প্রতিবেদক সেই দপ্তর থেকে আসার পর বিভিন্ন মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য হুমকি ধামকি দিচ্ছে প্রতিবেদককে। একজন ফোন করে প্রতিবেদককে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ না করা বা তার দপ্তরে না যাওয়ার জন্য বলেন, এমনকি সেখানে গেলে চাঁদাবাজি মামলা করে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে প্রতিবেদক অন্যান্য সাংবাদিকদের সাথে পরামর্শ করে ভবিষ্যতের জন্য সেই সময়েই থানায় সাধারণ ডাইরী করেন।
বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম রেলওয়ে জেনারেল ম্যানেজারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমার বিষয়টি জানা নেই। তবে তিনি বলেন যদি কেউ এরুপ করে থাকে তার বিরুদ্ধে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।