নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী অঞ্চলের পশ্চিমা রেল মেডিক্যালের (সি এম ও) এস এ এম ইমতেয়াজের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ করে রেল মেডিক্যালের একাধিক কর্মচারী জানান, ইতি পুর্বে অনেক সিএমও তারা পার করেছে, কিন্তু এরুপ দুর্নীতিবাজ সিএমও তারা দেখেনি। এমনকি তারা এও বলেন, গত অর্থ বাজেটে যেমন তেমনভাবে দুর্নীতি করলেও, চলতি বছরের বাজেটের কথা না হয় নাহি বললাম, যতই হোক সে, (সিএমও) আমাদের অফিসার। সিএমও হিসাবে দ্বায়িত নেন ১০ শে অক্টবর ২০১৭ সালে, এরপর থেকে শুরু করে দুর্নীতি অনিয়ম যেন আকাশ্চুম্মী হয়েছে। গত ‘সোমবার ৬ মে’ সিএমও দপ্তরে ছিল টেন্ডার, সেই টেন্ডারকে কেন্দ্র করে রেল মেডিক্যালের ঠিকাদারদের মধ্যে বিবাদের সৃষ্টি হয়। পরে সেই বিবাদে গিয়ে জড়ায় খোদ সিএমও।
সরেজমিনে গেলে স্থায়ী ঠিকাদাররা অভিযোগ করে বলেন, সবার কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন সিএমও কাজ দেওয়ার কথা বলে, কিন্তু কাজ তো সবাইকে দেওয়া সম্ভব না। আর এই কাজ কে নিবে সেই নিয়েই বাঁধে গন্ডগোল। উপস্থিত ঠিকদাররা সিএমও’ র মুখের উপর তার টাকা নেওয়ার কথা বললেও চুপ ছিলেন সিএমও। এদিকে প্রতিবেদকে সিএমও কে টাকা দেওয়ার ভিডিও করে রাখা চিত্রটি দেখান ঠিকদাররা। অনেকটা বেহায়ার নিলজ্জর মত টাকা নিতে দেখা যায় ভিডিও তে। ক্ষোভ প্রকাশ করে, রেল মেডিক্যালের এক কর্মচারী বলেন, বাজেট অতিক্রম করে অনিয়মের মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্নসাৎ করেছেন সিএমও।
অপরদিকে অফিস না করার অভিযোগ সিএমও ইমতেয়াজের বিরুদ্ধে অনেক পুরাতন। কদাচিত অফিস করলেও তিনি বসেন রেলওয়ে রেস্ট হাউজে, যেখানে বসেই দেনদরবার করেন ঠিকাদার সহ বিভিন্ন ডিভিশনের কর্মচারী কর্মকর্তাদের সাথে, যা প্রতিনিয়ত প্রত্যাক্ষ করেন রেস্ট হাউজ কর্মচারীরা। বর্তমান রাজশাহীস্থ রেল মেডিক্যাল আগের সকল অনিয়মকে ব্রেক করে, পাহাড় পরিমান অর্থ হাতিয়ে নেওয়ায় সিএমও,র উপর ক্ষেপে আছে, তারই অধিনস্থ কর্মচারীরা।
প্রতিবেদক সিএমও,র নিকট বাজেটের সংক্রন্ত প্রশ্ন করলে তিনি কিছু বলতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। কে বলতে পারবে? প্রতিবেদক জানতে চাইলে, তিনি বলেন আমার বড় বাবু বলতে পারবে, আমি কিছুই জানি না। পরে প্রতিবেদক বড় বাবুর কাছে গেলে তিনি বলেন সিএমও,র অনুমতি ছাড়া আমি দেখাতে পারবো না। পরে সিএমও তরিঘরি করে অফিস থেকে পালিয়ে যায়, প্রতিবেদক ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেন না। বাজেটে বড় রকমের দুর্নীতি লুকিয়ে আছে, বলেই বাজেট হিসাব দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন সিএমও। এদিকে প্রতিবেদকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টাও করেন তার অধিনস্থ কর্মচারী। একটি সুত্র নিশ্চিত করেন, সিএমও অফিস করেন মুলত টাকা নেওয়ার জন্য, প্রতি সপ্তাহে তিনি অফিস থেকে প্রায় ৪-৫ লক্ষ টাকা নিয়ে যান, যা প্রত্যাক্ষকারীগন জানিয়েছেন।
ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রেও তিনি কমিশন গ্রহন করে থাকেন। নিম্নমানের ওষুধ ক্রয়ে চাহিদা দিয়ে পছন্দ মত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ওষুধ কম্পানিগুলোর সাথে চুক্তি বদ্ধ হন তিনি। এদিকে অফিস না করে তার প্রাইভেট হাসপাতালে রোগী দেখতেই ব্যস্ত থাকেন সিএমও। তার নিজের একটি, প্রাইভেট ক্লিনিক আছে, যেখানে রেল মেডিক্যালের ওষুধ সরবরাহ করা হয় বলেও জানান রেলওয়ে এক কর্মচারী। রেল মেডিক্যাল উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করে বহাল তবেয়ে আছে এই কর্মকর্তা।
উক্ত বিষয়ে প্রতিবেদক সিএমও ইমতেয়াজের সামন থেকে জিএম পশ্চিমের সাথে যোগাযোগ করে সিএমও এর অনিয়ম ও ঘুষ গ্রহনের কথা জানালে তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। প্রকৃত পক্ষেই জিএম নিজে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেন না, যা ইতি পুর্বের সংবাদ প্রকাশের জের থেকে বুঝা যায়। উল্ল্যেখ, এর আগে সিপিও দপ্তরের পিএ ফরাদ মজুমদারে সংবাদ প্রকাশ করে, সেই সংবাদের প্রমান্য ডকুমেন্টারি তার ই মেইলে দেওয়ার পর তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি।
ভিডিও সংগৃহীত