নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগরীর দামকুড়া থানার বিরুদ্ধে ফেনসিডিলের বোতল উদ্ধারের করে বিক্রির অভিযোগ ।
সুত্রমতে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ৩০ জুলাই দিবাগত রাত আনুমানিক ২ টা থেকে ২.৩০ মি. সময় রাজশাহী টু চাঁপাইনবাবগঞ্জ হাইওয়ে রাস্তার দামকুড়া থানার মুরারীপুর এলাকায় মাদকবাহী ট্রাক রোধ করে ডিউটিরত লিমা-১২১ এর অফিসার এএসআই নুরুল ও সঙ্গীয় ফোর্স। কিন্তু ট্রাক থামানোর সাথে সাথে ট্রাকের ড্রাইভার পালিয়ে যায়। ঐ ট্রাকটিতে তল্লাসী চালিয়ে ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে এএসআই নুরুলের টিম। কিন্তু ২০০ বোতল উদ্ধার হলেও সেখান থেকে ১৪০ বোতল ফেনসিডিল উধাও হয়ে যায় মুহুর্তেও মধ্যেই। আর সরকারের খাতায় উদ্ধার দেখানো হয় ৬০ বোতল ফেনসিডিল। পরে বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াকর্মীদের মধ্যে জানাজানি হলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম।
বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াকর্মীরা অনুসন্ধানে গেলে ঘটনার সত্যতা বেরিয়ে আসে। ট্রাকটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা থেকে আসছিলো বলে অনুমান করা যায়। তবে এমন আরও অনেক ঘটনা রয়েছে এই অফিসার ইনচার্জ এর বিরুদ্ধে। যা আগামীতে তুলে ধরা হবে। এই ঘটনার বিস্তারিত জানতে দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাজহারুল ইসলাম এর ফোন দিলে তিনি বলেন, ঘটনার সত্যতা রয়েছে তবে ফেনসিডিল ৬০ বোতল উদ্ধার হয়েছে । যা আমাদের দামকুড়া থানার ফেসবুক পেজে তথ্য দেওয়া হয়েছে। মিডিয়াকর্মী সঠিক তথ্যটা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা যেটা বলবো আপনারা সেটাই তুলে ধরবেন। মিডিয়াকর্মী ২০০ বোতলের কথা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন এবং বলেন তাহলে আপনারা বের করে দেন। ২০০ বোতল উদ্ধারের যথাযথ প্রমান রয়েছে বলে জানালে তিনি বলেন আপনি প্রমান দিবেন আর প্রমান দিলে মনে করবো আপনাদের সাথে ঐ মাদক ব্যাবসায়ীর যোগাযোগ রয়েছে। এছাড়াও ঐ অফিসার ইনচার্জ রীতিমত সাংবাদিককে বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করেন ।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে একজন স্থানীয় শিক্ষক জানান, ফেন্সিডিলগুলো বিক্রি করাও হয়েছে একই এলাকার দুই মাদক ব্যবসায়ীর নিকট । যাদের নিকট থেকে মাসোহারার বিনিময়ে এলাকায় মাদক ব্যবসা করতে দেওয়া হয় । থানার প্রতিটি টহল গাড়িতে দেওয়া হয় টাকা । মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিনিধি দিয়ে এই টাকা দেন । তাই থানা এলাকার মাদক ব্যবসায়ীরা ধরাছোয়ার বাহিরে থাকেন ।
প্রত্যাক্ষদোশীরা জানান, ৩০ জুলাই রাতে একটি ট্রাক আটক করেন দামকুড়া থানা পুলিশ । এ এস আই নুরুলের নেতৃত্বে উক্ত ট্রাকটি আটক করা হয় । আটককের পর ট্রাকের ড্রাইভার পালিয়ে যায় ।ট্রাক থেকে ২০০ বোতন ফেন্সিডিল উদ্ধার পুর্বক, ১৪০ বোতল দুই মাদক বিক্রেতার নিকট বিক্রি করে দেন তৎক্ষনাত । এরপর ট্রাকটি পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয় । সেখানে সকলের সামনে ৬০ বোতল ফেন্সিডিল উদ্ধার দেখানো হয় ।
এ বিষয়ের সত্যতা জানতে এ এস আই নুরুলকে ফোন দেওয়া হলে তিনি জানান, ট্রাক থেকে ৬০ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া গেছে । ২০০ পিচের কথা সঠিক নয় । ২০০ পিচ ফেন্সিডিল ছিল এমন খবর সাংবাদিককে দেওয়া হয়েছে, এমন ব্যাক্তির কথা উল্লেখ্য করে জানতে চাইলে তিনি বলেন তাকে ধরিয়ে দিন। সে আরও বলেন, ফেন্সিডিলগুলো তার, না হলে সে এত নিশ্চিত করে বললো কিভাবে। এছাড়াও আমি এর বেশি কিছু বলতে পারবো না, ওসির কাছে জানতে বলে তিনি ফোন কেটে দেন ।
এই ২০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কাশিয়াডাঙ্গা জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আরেফিন জুয়েল এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি সবে মাত্র এই জোনের ডিসি হিসেবে যোগদান করেছি। তবে আমার জানামতে সেই দিন ৬০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়েছে। আপনাদের তথ্য মতে ২০০ বোতল উদ্ধার হলে অবশ্যই তদন্ত করে ঐ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। দামকুড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিডিয়াকর্মীদের সাথে খারাপ আচরন ও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানালে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা অনুসন্ধানের মাধ্যমে সঠিক তথ্য তুলে ধরবে এটাই সাভাবিক। আর এর জন্য কেউ সাংবাদিককে হুমকি দিতে পারে না। যদি আমাদের কোন অফিসার ইনচার্জ খারাপ আচরন বা হুমকি দিয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তদন্ত পুর্বক এর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
এ বিষয়ে আরএমপির মিডিয়া মুখ্যপাত্র অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (সদর) গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমি যতদুর জানি ট্রাক থেকে ৬০ বোতল ফেন্সিডিল পাওয়া গেছে । ট্রাকে ২০০ বোতল ফেন্সিডিল ছিল সাংবাদিকদের এমন তথ্য প্রদানকারী সেই ব্যাক্তির মোবাইল নম্বরটিও মিডিয়া মুখ্যপাত্রকে এসএমএসের মাধ্যমে দেওয়া হয় ।