নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রির ভাতিজিসহ নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাতজন হয়েছে। পৃথক এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত দশজন। তাদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রবিবার সকাল ও বিকেলে উপজেলার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের খালাতো ভাই গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে খাদিজাতুল কোবরা কেয়া (৩০), তার মেয়ে রাইসা খাতুন (৬), ছেলে আহনাফ (৫), মাইক্রোচালক মো. পলক, উপজেলার আচুয়াভাটা কসাইপাড়া গ্রামের মাংস ব্যবসায়ী জসীম উদ্দিন (২২), খরেদপুর গ্রামের ইমদাদ হোসেন চান্দু (৫০) ও সানারুল ইসলামের মেয়ে খুশবু তাজমীন (১৪)।
জানা যায়, আত্মীয়ের জানাযা শেষ করে মাইক্রোবাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছিলেন কেয়া ও তার পরিবার। পথিমধ্যে উপজেলার মাটিকাটা ব্রিজের কাছে পৌঁছালে রাজশাহীগামী ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় ঘটনাস্থলেই কেয়া ও তার মেয়ে রাইসা মারা যান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে মারা যান আহনাফ ও পলক। এ ঘটনায় কেয়ার স্বামী চাঁপাইনবাবগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের সহকারী পরিচালক আলমগীর হোসেন গুরুতর আহত হন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।
গোদাগাড়ী থানার এসআই আমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ঘাতক ট্রাকটি থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে ট্রাক ড্রাইভার পলাতক রয়েছে।
এদিকে, সকাল ১০টায় উপজেলার খরেদপুর এলাকায় ট্রাক-মটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই মটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাজশাহী কারাগারে আটক সানারুলকে দেখতে খুশবু ও ইমদাদুল মটরসাইকেলযোগে রাজশাহীর উদ্দেশে রওনা দেন। পথে উপজেলার ছয়ঘাটি এলাকায় পৌঁছালে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি ট্রাক মটরসাইকেলটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তারা মারা যায়।
এর আগে সকাল ৬টায় উপজেলার রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের রেলগেট মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি দ্রুতগামী ট্রাক মাংসের দোকানে ঢুকে পড়লে তাতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় জসীম। সে আচুয়াভাটা কসাইপাড়া গ্রামের তসলিম উদ্দিনের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দোকানে মাংস বিক্রি করছিলেন জসীম ও রহিম। এ সময় রাজশাহী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী মালবাহী একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ওই দোকানে ঢুকে পড়ায় তারা চাপা পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই জসীমের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে ট্রাকের চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। ঘটনাস্থলেই জসীমের মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রহিমকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা ট্রাকটি জব্দ করেছি। তবে চালক ও হেলপার পলাতক রয়েছে। তাদের আটকের প্রক্রিয়া চলছে।’