নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী মহানগরীর সিটি হাট শাহী জামে মসজিদে সুপারি ও ফুলের চারা রোপন করা হয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাদ জুম্মা বৃক্ষ রোপণ করেন মসজিদের সভাপতি ও ১৭ নং ওয়ার্ডের যুব লীগের সেক্রেটারী মোঃ আলাল এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ হানিফ।
বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এদেশের গ্রামে-গঞ্জে, শহরে-বন্দরে, হাটে-বাজারে, রাস্তার ধারে কিংবা মোড়ে সর্বত্র অসংখ্য মসজিদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। কৃষি ও গ্রাম প্রধান বাংলাদেশে মসজিদকেন্দ্রিক বাগান চর্চা খুব একটা দেখা যায় না। এর ফলে বাগানহীন মসজিদগুলো কেমন যেন খাঁ খাঁ, নির্জীব, মরুভূমির মতো মনে হয়। এদেশের আবহাওয়া, জলবায়ু, ভৌগোলিক ও পরিবেশগত কারণে মসজিদ প্রাঙ্গণে পরিকল্পিত উপায়ে আধুনিক পদ্ধতিতে সুদৃশ্য বাগান তৈরি করা যায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মসজিদ অঙ্গনে স্বল্প পরিসরে এবং পরিকল্পিত উপায়ে আদর্শ বাগান তৈরি করা সম্ভব। এই বাগানে মালী বা কৃষকের ভূমিকা পালন করবে মসজিদের খাদেম বা মসজিদ কর্তৃক নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি। মসজিদের বাগানে বিভিন্ন ধরনের ফুল, ফল, শাক-সবজি, ভেষজ, বনজ, বাহারী ও শোভাবর্ধনকারী গাছপালা রোপণ করতে হবে। মসজিদের চারপাশে সীমানা প্রাচীর বরাবর নারিকেল, পান, সুপারি, খেজুর ও বিভিন্ন ধরনের শোভাবর্ধনকারী গাছপালা দ্বারা আচ্ছাদিত করা যায়। এছাড়া যেসব মসজিদে আবাদি জমি (ওয়াক্ফ বা দেবোত্তর সম্পত্তি) আছে সেখানে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করতে হবে। ধান, গম, ডাল, আলু, ভুট্টা, তৈলবীজ, ডালবীজ, পাম, রাবার, মসলা, পাট, চা, ইক্ষু, রেশম, তুলা প্রভৃতি কৃষিজাত শস্য চাষাবাদ করা যায়। মসজিদের যাবতীয় ভূমিসম্পদ, জলমহাল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদকে নিবিড় ও মিশ্র কৃষি চাষের আওতায় আনতে হবে। এর ফলে কৃষি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈপববিক পরিবর্তন সাধিত হবে। দেশ স্বনির্ভর হবে।
বৃক্ষ আমাদের সবুজ বন্ধু। বৃক্ষের শত্রু মানুষের শত্রু, সমাজের শত্রু, দেশের শত্রু। মানুষের জন্য বৃক্ষরাজি স্রষ্টার এক অপূর্ব দান। তিনি মানুষের কল্যাণের জন্য বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করেছেন। আমরা একটু চিন্তা করলেই বুঝতে পারবো মানুষ না থাকলে বৃক্ষের কোন অসুবিধা হত না। কিন্তু বৃক্ষ না থাকলে এ দুনিয়াতে মানব সন্তানের অস্তিত্বই অচল হয়ে পড়তো। গাছ আছে ধরাধামে, জলে-স্থলে সর্বত্র। আমাদের মতই গাছের প্রাণ আছে, তবে এ বিষয়টি বৈজ্ঞানিকভাবে আবিষ্কৃত হয়েছে বেশি দিন হয়নি। গাছের অনুভূতি আছে বলেই আলোর দিকে ধাবিত হয়। এমন সময় আসতে পারে যখন মানুষ গাছের কথা বুঝতে পারবে। গাছ শিশুর চেয়েও নিষ্পাপ। কারো ক্ষতি করে না বরং প্রাণীর পরিবেশের উপকার করে থাকে। গাছের নীরব কর্মকান্ড সর্বত্র সৃষ্ট প্রাণীর কল্যাণে নিবেদিত। গাছ সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা একাধিকবার পবিত্র কোরআন শরীফে কথা বলেছেন। সূরা আর-রাহমানে গাছ সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারকা ও বৃক্ষরাজি সেজদা করে থাকে। অন্যত্র সূরা ইয়াসীনে গাছের উপকারিতা সম্পর্কে উল্লেখ করেন, যিনি তোমাদের জন্য তাজা বৃক্ষ হতে অগ্নি উৎপাদন করে থাকেন, তৎপর তোমরা উহা হতে প্রজ্বলিত করে থাক।