রাজশাহীতে ৪০ লক্ষ টাকার জেবরা ক্রসিং ৪০ দিনে শেষ।

আভা ডেস্ক : রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় নজমুল হক বলিকা বিদ্যালয়টি ছুটি হয় গতকাল দুপুর ১টার দিকে। ছুটি পরে কয়েক শ শিক্ষার্থী স্কুলের দরজা দিয়ে বের হওয়ার পরেই রাস্তার দক্ষিণ পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় তাদের অভিভাবকদের নিকট ছুটে যেতে থাকে। শিক্ষার্থীরা ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে যে যার মতো করে রাস্তা পার হতে থাকে।

ওদিকে নগরীর সাহেববাজার এবং নগর ভবন মোড়ের দিক থেকে অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারগুলোও ছুটে আসতে থাকে। এই অবস্থায় দৌড়ে রাস্তা পার হওয়া শিক্ষার্থীরা অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই যে যার মতো করে যেদিক-সেদিক দিয়ে রাস্তা পার হতে থাকে। অথচ কয়েকদিন আগে এই স্কুলের সামনে যখন একটি জেব্রাক্রসিং করা হয়েছিল, তখন শিক্ষার্থীরা ওইদিক দিয়েই রাস্তা পার হচ্ছিল।

কিন্তু কয়েকদিন যেতেই সেই জ্রেবাক্রসিংয়েরই এখন বেহাল দশা। জেব্রাক্রসিংয়ের সাদা রং রাস্তায় মিশে গিয়ে একাকার। ফলে শিক্ষার্থীরা এখন যে যার মতো করেই রাস্তা পার হচ্ছেন। আবার দূর থেকে জেব্রাক্রসিং দেখতে না পাওয়ায় যানবাহনগুলোও থামার চেষ্টা করছে না। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা ঝুঁকি।

সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু এই কাদিরগঞ্জেই নয়, দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর গত প্রায় এক মাস ধরে রাজশাহী নগরীর যেখানে যেখানে জেব্রাক্রসিং করা হয়েছে, তার অধিকাংশ স্থানেই জেব্রাক্রসিংয়ের রং কালো পিচের রাস্তায় মিশে গেছে। এমনকি কোথাও কোথায় রাস্তার কালো পিচ পর্যন্তও উঠে গেছে। এ নিয়ে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নগরবাসীর মাঝে।

অভিযোগ উঠেছে, জেব্রাক্রসিংয়ের নামে আরেক দফা লুটপাটে নেমেছেন রাসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ফলে ৪০ লাখ টাকার জেব্রাক্রসিং ৪০ দিন না যেতেই রাস্তার সঙ্গে মিশে যেতে শুরু করেছে। কোথাও কোথাও একেবারেই মিশে গেছে রাস্তার সঙ্গে। ফলে জেব্রাক্রসিং আছে-কিনা তা বলা মুশকিল। ফলে অধিকাংশ জেব্রাক্রসিং ব্যবহার না করেই পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার নগরীর লক্ষীপুরে গিয়ে দেখা যায়, ইসলামী ব্যাংকের সামনেকার জেব্রাক্রসিংটি একেবারেই মিশে গেছে রাস্তায়। সামান্য কিছু সাদা দাগ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর ফলে জেব্রাক্রসিং ব্যবহার না করে পথচারীদের ইচ্ছেমতো ঝুঁকি নিয়ে পারপার হতে দেখা যায়।

এভাবে রাস্তা পার হতে দেখে জানতে চাইলে রাকিবুল নামের এক তরুণ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘দেখেন তো এখানে জেব্রাক্রসিং আছে কেউ বলবে? জেব্রাক্রসিং না দেখতে পেলে মানুষ সেইদিক দিয়ে রাস্তা পার হবে কিভাবে? এমনকি যানবাহনগুলোও দাঁড়াবে কেন? তাই যে যারমতো রাস্তা পার হচ্ছে। আর যানবাহনগুলোও এসে কখনো কখনো ধাক্কা দিয়ে চলে যাচ্ছে।’

লক্ষীপুর এলাকার ফাতেমা ড্রাগ হাউসের ওষুধের দোকানের মালিক সুমন বলেন, ‘কয়েকদিন আগেই দেখলাম জেব্রাক্রসিং করতে। আবার ৪-৫ দিনের মধ্যেই দেখলাম সেই জেব্রাক্রসিং উঠে যেতে শুরু করেছে।’
নগরীর সিএন্ডবি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে দুই পাশে দুটি জেব্রাক্রসিং আছে। দুটিই কয়েকদিন আগে উঠে যাওয়ায় আবার সেখানে নতুন করে প্লাস্টিক পেইন্ট করা হয়েছে।
জানতে চাইলে স্থানীয় ব্যবসায়ী হযরত আলী বলেন, ‘জেব্রাক্রসিং একদিন রাতে করে গেলো। কিন্তু দুইদিন না যেতেই দেখি উঠে যেতে শুরু করেছে। আবার তিন-চার দিন আগে এসে করে গেছে। কিসের কাজ করছে আল্লাহ ভালো জানে।’
এদিকে রাজশাহী সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, নগরীর ২৩৮টি পয়েন্টে জেব্রাক্রসিং প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এর জন্য ব্যয় ধরা হয় ৪০ লাখ টাকা। তবে নরমাল প্লাস্টিক পেইন্টের কারণে সেই জেব্রাক্রসিংগুলো কয়দিন যেতে না যেতেই উঠে যাচ্ছে বলেও স্বীকার করেছেন নগর সংস্থার প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম।
তিনি বলেন, কাজটি মীর আক্তার নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান করছে। তবে এরই মধ্যে কিছু কিছু জায়গাই জেব্রাক্রসিং উঠে যেতে দেখা যাচ্ছে। সেগুলোতে আবার নতুন করে রিপায়ারিং করা হচ্ছে। ফাইবার প্লাস্টি পেইন্ট না করে নরমাল প্লাস্টিক পেইন্ট দিয়ে জেব্রাক্রসিং করার অনুমতি দিয়েছি আমরা। এ কারণে দ্রুত উঠে যাচ্ছে সেগুলো।
সূত্র সিল্কসিটি

Next Post

‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জ্ঞান চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখতে হবে

শনি সেপ্টে. ২৯ , ২০১৮
নিজস্ব প্রতিনিধি : শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ (এমপি) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দশম সমাবর্তনে বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে জ্ঞান চর্চা বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতে শিক্ষার্থীদের ভূমিকা রাখতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকর্মকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আমরা এখনও দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল বংলাদেশ গড়তে কাজ করছেন।’ শনিবার বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links