নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘনায় অপরিচিত এক আহত বাচ্চাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ভর্তি ও চিকিৎসার সার্বিক সহযোগিতা করে চরম মানবিকতার পরিচয় দিয়েছেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মহিদুল ইসলাম মোস্তফা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ দুপুর দেড়টার দিকে তালাইমারী নর্দানমোড় অটোরিকশা সাথে ধাক্কা লেগে রিয়া (৮) নামের একটি বাচ্চা আহত হয়। পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মহিদুল ইসলাম মোস্তফা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ রাজশাহী জেলা কমিটির জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক আলিফ আনোয়ারুল। তারা বিষয়টি দেখে কালক্ষেপন না আহত বাচ্চাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। সে সময় বাচ্চাটি চিকিৎসা খবরও বহন করেন তারা। ততক্ষনাত মেয়েটি পরিচয় না পাওয়া গেলেও হাসপাতালে ভর্তির পর রিয়ার বাবা মা আসেন।
আহত রিয়ার মা বলেন, আমার বাবার বাড়ি তালাইমারি। আমি আমার বাবার বাসাতে বেড়াতে এসেছি। আমার ভীষন জ্বর, তাই সুয়েই ছিলাম। হঠাৎ বরফ ওয়ালার শব্দ পেয়ে দৌড়ে বের হয়ে যায় আমার মেয়ে। এর আর বলতে পারবো না। পরে জানতে পারি আমার মেয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। তাই আমি ছুটে এসেছি হাসপাতালে। এখানে এসে জানতে পারি মোস্তফা নামের এক লোক আমার বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে এবং নিজের খরচে চিকিৎসা করেছে। এছাড়াও আমার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছে। পরে আমাকে চিকিৎসার জন্য নগদ ৫০০০ টাকাও দিয়েছে। কান্না জড়িত কন্ঠে বাচ্চাটির মা বলেন, আল্লাহ যেন এই মোস্তফা ভাইয়ের ভাল করেন এবং প্রতিটি ঘরে ঘরে এই রকম মোস্তফার মত সন্তান দেন।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধু ডিপ্লোমা প্রকৌশল পরিষদ রাজশাহী জেলা কমিটির জনসংযোগ ও প্রচার সম্পাদক, আলিফ আনোয়ারুল বলেন, বাচ্চাটি রাস্তায় আসার পর রাস্তার এপাশ থেকে ঐ পাশে পার হতে গিয়ে অটোরিক্সার সাথে ধাক্কা লেগে যায়। দেখা যায় বাচ্চাটি অটোরিক্সার তলে পড়ে রয়েছে এবং বাচ্চাটির বাম পাঁ ভেঙ্গে যায় । এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর ক্ষতি সাধিত হয়। ঘটনাটি দেখে থেমে থাকতে পারেননি আমরা। মানবিক সহায়তা প্রদান লক্ষে বাচ্চাটি হাসপাতালে ভর্তি করি। প্রায় এক ঘন্টা পরে বাচ্চাটি মা বাবা আসেন। তখন মেয়েটির নাম পরিচয় নিশ্চিত হই। বাচ্চাটির বাবা কাছে জিজ্ঞাসা বাদ করে জানা যায়, বাচ্চাটির নাম নুসরাত জাহান রিয়া (৮) পিতার নাম সাকিল হোসেন, সাং- বিনোদপুর ( মির্জাপুর)। বাবা কাঠমিস্ত্রী কাজ করেন। বাচ্চাটি মির্জাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ১ম স্থান অধিকারি কৃতীছাত্রী। অবশেষে রামেক হাসপাতালের ১ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন মন্তব্য করেন মহিদুল ইসলাম মোস্তফা। তিনি বলেন, আমি একজন সাধারণ মানুষ। আমার চোখের সামনে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে আর আমি চুপ থাকবো এটা কিভাবে হয়? বাচ্চাটিকে দেখে আমার খুব খারাপ লেগেছে বিধায় আমি ও আমার বন্ধু আলিফ ভাইকে সাথে নিয়ে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করেছি। আমি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি, তাদের সহযোগিতা করে এসেছি। আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রেখেছে ততদিন যেন মানুষের সেবা করতে পারি। তবে সব মানুষের টাকা পয়সা আছে কিন্তু উপকার কয়জন করে আর করতে পারে? তাই বলবো সবাই যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে গরীব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায় তাহলে একদিন সত্যিকারের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সেই কাঙ্খিত সোনার বাংলা ঠিক গড়ে উঠবে ইনশাআল্লাহ।