আভা ডেস্কঃ রাজশাহীতে পৃথক দুটি ঘটনায় হাত-পা ও মুখ বাঁধা অবস্থায় দুজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাতে রাজশাহী মহানগরীর নওদাপাড়া এবং গোদাগাড়ী উপজেলার লালাদীঘি এলাকায় এ দুটি খুনের ঘটনা ঘটে। পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
গোদাগাড়ীতে নিহত ব্যক্তির নাম মাসুদ রানা (৪৫)। তিনি উপজেলার চাপাল গ্রামের আবদুল খালেক মিয়ার ছেলে।
রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা এলাকার নওদাপাড়ায় নিহত ব্যক্তির নাম আনিসুর রহমান ওরফে নারা (৭০)। তিনি নওদাপাড়া এলাকায় মৃত ইয়াসিন আলীর ছেলে। গোদাগাড়ী ও শাহমখদুম থানা-পুলিশ নিহত দুজনের এ পরিচয় নিশ্চিত করেছে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম জানান, মাসুদ রানা এবং তাঁর এলাকার মো. লিটন নামের আরেক ব্যক্তি একসঙ্গে একটি সরকারি পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করেন। সোমবার ভোররাতে পুকুরে মাছ ধরার কথা ছিল। এ কারণে রোববার দিবাগত মধ্যরাতে তাঁরা দুজন পুকুরে যান। তাঁরা পুকুরপাড়ে টং ঘরে ছিলেন।
রাত ৩টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত ওই পুকুরে মাছ চুরি করতে যায়। তাঁরা লিটন ও মাসুদের হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলে রাখে। এরপর তাঁরা পুকুরে জাল ফেলে মাছ ধরতে থাকে। এরই মধ্যে লিটন ও মাসুদের ঠিক করা জেলেরা মাছ ধরতে চলে আসেন। তাঁদের দেখে চোরেরা জাল ও মাছ ফেলে পালিয়ে যায়। এরপর জেলেরা টংঘরে গিয়ে লিটনের হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেন। তখন দেখা যায় মাসুদ মারা গেছেন।
ওসি বলেন, ‘গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে রাখার কারণে মাসুদ মারা গেছেন। পুকুরপাড় থেকে কয়েক বস্তা মাছ ও বড় একটা জাল জব্দ করা হয়েছে। এত বড় জাল টানতে ১০ জনের বেশি লোক লাগবে। তাই আমরা ধারণা করছি ১০ জনের বেশিই ছিল। তাঁদের শনাক্ত করার কাজ চলছে।’
ওসি জানান, আহত লিটন সুস্থ আছেন। আর গামছায় শ্বাসরোধ হয়ে মাসুদ মারা গেছেন। তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা হবে বলেও জানান ওসি।
এ দিকে শাহমখদুম থানার ওসি সাইফুল ইসলাম খান জানান, নওদাপাড়া বাজারে সিফাত নামে এক ব্যক্তির অটোরিকশার গ্যারেজের নৈশপ্রহরী ছিলেন আনিসুর রহমান। সোমবার সকালে গ্যারেজের ভেতর তাঁর হাত, পা ও মুখ বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন।
এরপর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রামেকের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওসি আরও জানান, গ্যারেজ থেকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা খোয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, আনিসুরকে শ্বাসরোধ করে অটোরিকশাটি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা হবে বলেও জানান ওসি।