নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে বিভিন্ন আয়েজনে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে পালিত হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজা৷ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের রীতি অনুসারে, সরস্বতী বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চেপে দেবী সরস্বতী জগতে আসেন।
বাড়ির পাশাপাশি নগরীর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বইছে উৎসবের আমেজ। সকাল থেকেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী কলেজসহ শিক্ষানগরীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা পূজা অর্চনা করেন।
এ উপলক্ষে সবাই সাজেন বাহারী সাজে। কেউ পড়ে আসে শাড়ি, আবার কেউ আসে পাঞ্জাবী পরে দেবীর আশির্বাদ নিতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি নগরীর বিভিন্ন পূজা মণ্ডপেও পালিত হচ্ছে এই পূজা। সেখানেও দেবীর আশির্বাদ নিতে ছুটে যান অনেকে।
আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজের পূজা মণ্ডপে শুরু হয় সরস্বতী পূজা উদযাপন কার্যক্রম৷পূজা শেষ করার পর সবাই দেবীর উদ্দেশ্যে অঞ্জলি প্রদান করেন৷ হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, সরস্বতী খুশি হলে বিদ্যা ও বুদ্ধি অর্জিত হবে। প্রাচীন কালে তান্ত্রিক সাধকেরা সরস্বতী-সদৃশ দেবী বাগেশ্বরীর পূজা করতেন৷ মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী পূজা হয়। এই তিথিকে শ্রীপঞ্চমী বলা হয়। বসন্তপঞ্চমীও বলা হয়। সাধারণত বিদ্যার্থীরা বিদ্যা লাভের জন্য সরস্বতী পূজা করে। এ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ পূজার ব্যাপকতা দেখা যায়। পারিবারিকভাবেও এ পূজা হয়। এই দিন সকাল বেলা স্নান করে পরিষ্কার পোশাক পরে সবাই পূজার মণ্ডপে আসে।
তারপর পূজা শুরু হয়, পূজার পর সবাই অঞ্জলি দেয়। অঞ্জলি দিতে হয় উপবাস থেকে। পূজা শেষে প্রসাদ নেয়ার মাধ্যমে উপবাস ভাঙে। পূজাতে বিভিন্ন ধরনের উপকরণ লাগে, যার মধ্যে প্রধান হলো কুল যা সরস্বতী মাকে দেয়া হয়। সরস্বতী পূজার আগে কুল খাওয়া যায় না। সরস্বতী বিদ্যার দেবী। এদিন সবাই বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা মায়ের কাছে জ্ঞান প্রার্থনা করে থাকে। ছোট বাচ্চারা হাতেখড়ি দেয় সরস্বতী পূজার দিন। পূজা শেষে মাকে বিসর্জন দেয়া হয়।
সকাল থেকেই রামেক হাসপাতালের শিক্ষাথীরা হিন্দু ধর্মাবলম্বীসহ অন্যান্ন ধর্মাবলম্বীরা পূজা উদযাপন উপলক্ষ্যে মণ্ডপে আসতে শুরু করে৷বেলা বাড়ার সাথে সাথে সকল শ্রেণীর মানুষের আগমন বাড়তে থাকে৷ সরস্বতী পূজা উদযাপন সম্পর্কে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, রামেক হাসপাতালের সরস্বতী পূজা পালনে অন্য সকল স্থান থেকে একটু ভিন্নতা রয়েছে।কেননা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকে সাথে অন্যনা শিক্ষাথীরা ও অসাম্প্রদায়িক পরিবেশ বিরাজ করে আনন্দ করে।
সরস্বতী পূজা উদযাপনে অংশ নিতে আগত একাধিক দর্শনার্থী জানান, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ এ নীতিতে বিশ্বাস করেই আমরা সরস্বতী পূজা উদযাপনে এসেছি৷পূজায় অংশগ্রহণ না করলেও এর উৎসবে আমরা অংশগ্রহণ করেছি৷আমরা এর মধ্য দিয়ে একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি৷ ফলে এই হলে অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সরস্বতী পূজা হয়।