নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহী পশ্চিম রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমান্ডেন্ট ফাত্তাহ ভুইয়ার উপর পাহাড় পরিমান অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ । অভিযোগ ও ঘুষ বানিজ্যের তথ্য নিতে গিয়ে সাংবাদিকেও লাঞ্চিত করেন তার অধিনস্থ সিভিল টিম । লাঞ্চিতকারীদের বিরুদ্ধে চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভুগি সাংবাদিক রেজাউল । তথ্য নিতে যাওয়ার আগে পশ্চিম রেলের জিএম মিহির কান্তি গুহকে অবগত করেন সাংবাদিকরা । ১২ ই ফেব্রুয়ারী বুধবার দুপুর ১ টায় তথ্য নিয়ে ফেরার পথে চীফ কমান্ডেন্টের সিভিল পোশাক পরিধিতরা সাংবাদিককে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্চিত করেন । লাঞ্চিতকারী সিভিল টিম সদস্যরা হলেন, প্রহরী আশরাফুল, হাবিলদার নুরে আলম, প্রহরী হাবিব, প্রধান অফিস সহকারী শরীফ উদ্দিন প্রামানিক, প্রহরী কালাম, সহ আরো অজ্ঞাতনামা অন্যান্য সদস্যরা ।
অভিযোগ আছে পশ্চিম রেলের আর এন বি শাখায় চীফ কমান্ডেন্ট হিসাবে ৩১ শে অক্টবর ২০১৭ সালে যোগদানের পর থেকে ফাত্তাহ ভুইয়া নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন । বর্তমানে তার ঢাকায় দুটি বিশাল বাড়ির তদন্তও করছে দুদক । গত কিছুদিন আগে পদোন্নতির নামে সাড়ে চার কোটি টাকা লোপাট করেন তিনি । এর মধ্যে প্রহরী থেকে নায়েক পদে ৪৫ জন কে পদোন্নতি দেয় প্রতিজনের নিকট ৫ লাখ টাকা করে নিয়ে । নায়েক থেকে হাবিলদার পদে পদোন্নতি দিয়ে ১০ জনের নিকট থেকে নেয় ৬ লাখ টাকা করে । হাবিলদার থেকে এ এস আই পদে পদোন্নতি দেয় ৫ জনকে প্রতিজনের নিকট নেয় ৭ লাখ করে । এ এস আই থেকে এস আই পদে পদোন্নতি দেয় ৫ জনকে যাদের নিকট থেকে নেয় ১০ লাখ করে । উক্ত সাংবাদিক লাঞ্চিতকারী ব্যক্তিরা তার ক্যাশিয়ার হিসাবে রেলওয়ে সংলগ্ন ফুটপাত থেকে প্রায় ৩ হাজার দোকান থেকে প্রতি দোকানে ১ হাজার করে তিন লাখ টাকা প্রতিমাসে মাসোহারা নেন । ভুক্তভুগি অনেকেই নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, বদলী ও ডিউটি বন্টনের নামেও নেওয়া হয় অর্থ । সম্প্রতি একজন এস আই কে এক বছরে চার জায়গায় বদলী করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিয়েছে চীফ । ঠিকাদারী কাজের অনিয়মসহ টিএ বিল ও ভ্রমণ ভাতায় বরাদ্দ টাকাও আত্নসাতের অভিযোগ আছে চীফ ফাত্তাহ ভুইয়ার বিরুদ্ধে । টিএ ও ভ্রমণ ভাতায় বরাদ্দ টাকা যাদের নামে আসে তাদের সই স্বাক্ষর নিয়ে সেই টাকা নিজে আত্নসাত করেন চিফ এমন অভিযোগ আর এন বি শাখার অনেকের ।
বিশ্বাস্থ নির্ভরযোগ্য একটি সুত্র নিশ্চিত করেন, দীঘদিন থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে ঢাকায় দুটি বিশাল বাড়ি বানিয়েছে চীফ, যা বর্তমানে দুদক তদন্ত করছেন । প্রতিমাসে মাসোহারা ও বদলী জনিত ভয় দেখিয়ে প্রহরী, নায়েক, হাবিলদার, এ এস আই, এস আই, ইন্সেপেক্টর সহ সকলের নিকট অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে ।
প্রতিবেদক জানায়, তাকে ম্যানেজ করতে না পেরেই তার উপর চড়াও হয়, চীফের পেটোয়া বাহিনী সদস্য আশরাফুল, নুরে আলম, হাবিব, শরীফ, কালাম, সহ নাম না জানা অনেকেই । এই পেটোয়া বাহিনীর কোন ডিউটি না দিয়ে সিভিলে অফিসে বসে রাখেন চীফ নিজে । তিনি আরো জানান, চীফের নিকট তথ্য চেয়ে তিনি কোন তথ্য দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেয় । তথ্য না পেয়ে প্রতিবেদক ফিরে আসলে তাকে ঘীরে ধরেন তার সেই পেটোয়া বাহিনী । তাদের সাথে প্রতিবেদকের টানাটানি ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে প্রতিবেদকের মোবাইল ও পকেটের টাকা সেখানে খোয়া যায় বলেও জানান তিনি ।
এ বিষয়ে পশ্চিম রেলের জিএম মিহির কান্তি গুহ নিকট ফোন দিলে তিনি জানান বিষয়টি তার জানা নেই, তবে কেউ এমন ঘটনা ঘটালে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
থানায় অভিযোগের বিষয়ে জানতে চন্দ্রিমা থানার ওসিকে ফোন দিলে তিনি বলেন, সাংবাদিক রেজাউল একটি অভিযোগ দিয়ে গেছে, তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
১ম পর্ব, ২য় পর্ব আগামী সোমবার প্রকাশিত হবে আরো তথ্যবহুল ।