রাজশাহীতে ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাক দু টুকরো

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ট্রেনের ধাক্কায় রেললাইনের ওপরে আটকে পড়া ট্রাক দুই টুকরা হয়ে বাড়ির ওপরে ছিটকে পড়েছে। গতকাল রোববার রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের কাশিয়াডাঙ্গা এলাকার রেলক্রসিংয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কোনো হতাহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে ট্রাকটি দুমড়েমুচড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রেললাইনের পাশের দুটি বাড়ি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহী আসার পথে বিরতিহীন ‘বনলতা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের সঙ্গে ট্রাকের এই সংঘর্ষ হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী-ঢাকা রুটে চলে বিরতিহীন ট্রেনটি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ১০টা ১১ মিনিটে রেলক্রসিংয়ে উঠে পাথরবোঝাই একটি বড় ট্রাক বিকল হয়ে যায়। ট্রাকচালক ট্রাকটির ইঞ্জিন স্টার্ট দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু হয়নি। এদিকে ট্রেন এসে পড়ে। গেটম্যান সামাউন ইসলাম তখন সিগন্যাল লাইট নিয়ে পশ্চিম দিকে দৌড় দেন। তিনি লাইট জ্বালিয়ে ট্রেনটিকে থামার সংকেত দেন। কিন্তু ট্রেন থামেনি।

ট্রেন আসতে দেখে ট্রাকচালক ট্রাক থেকে লাফ দিয়ে নিরাপদ স্থানে যান। এরপরই ট্রেনের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। ট্রাকটি ঠেলে প্রায় ১৫০ মিটার সামনে নিয়ে যায় ট্রেনটি। ট্রেনের ধাক্কায় ট্রাকটির ইঞ্জিন ও বডি দুই টুকরা হয়ে যায়। বডির অংশটুকু পাশের দুটি বাড়ির ওপরে গিয়ে পড়ে। আর ইঞ্জিনের অংশটুকু দুমড়েমুচড়ে রেললাইনের পাশে পড়ে থাকে। তবে ট্রেনের কোনো বগি লাইনচ্যুত হয়নি। ট্রেনটি ফাঁকা আসার কারণে কোনো হতাহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেনি।

গেটম্যান সামাউন ইসলাম বলেন, রেললাইনের ব্যারিকেড ফেলার সময় হওয়ার আগেই ট্রাকটি লাইনে উঠে বিকল হয়ে যায়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনি পশ্চিম দিকে দৌড় দেন। এ সময় সিগন্যাল লাইট দেখানোর পাশাপাশি চারটি রেলের ফক্স সিগন্যাল পটকাও ফোটান। এলাকার তিনজন যুবক রেলক্রসিং থেকে পশ্চিম দিকে দৌড়ে গিয়ে লাল পতাকা দেখান।

অন্ধকারে চালক যেন লাল পতাকা দেখতে পান সে জন্য পতাকার ওপর মোবাইলের টর্চলাইটের আলোও ফেলা হয়। কিন্তু এসবের কিছুই টের পাননি ট্রেনচালক। ফলে বনলতা ট্রেনটি গিয়ে ট্রাকটিকে ধাক্কা দিয়ে টেনে নিয়ে যায়। ট্রেন যখন ট্রাককে ঠেলে নিয়ে যায় তখন ট্রাকের বডির অংশের আঘাতে আরেক গেটম্যান মো. টুকু ও ভ্যানচালক মো. মজনুর বাড়ির কয়েকটি ঘর চুরমার হয়ে যায়। ট্রাকের বডির ওপরের অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে মজনুর ঘরের সঙ্গে আটকে থাকে। আর নিচের অংশটি ট্রেনের সঙ্গে আরও সামনে যায়।

মজনু বলেন, বাড়িতে তাঁরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। বিকট শব্দে তাঁদের ঘুম ভেঙে যায়। রেললাইনের পাশের ঘরটিতে ঘুমালে তাঁরা সবাই হতাহত হতেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমি গরিব মানুষ। জমিজমা কিছুই নেই। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই আর রেলের মাটিতে বসবাস করি। এই ঘরটাও ভেঙে গেল।’

কাশিয়াডাঙ্গা থানার ওসি এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, দুর্ঘটনার পর কাশিয়াডাঙ্গা-আমচত্বর বাইপাস সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দিবাগত রাত তিনটার দিকে ক্রেন দিয়ে ট্রাকের অংশ সরানো হয়। এরপর রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

Next Post

রাজশাহীতে মার্কেট খোলা রাখতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

সোম এপ্রিল ৫ , ২০২১
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রাজশাহীতে মার্কেট খোলার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ব্যবসায়ী ও কর্মচারিরা। বেলা ১১টার পর সাহেববাজার আরডিএ মার্কেটের সামনে জড়ো হয়ে ব্যবসায়ী ও কর্মচারিরা বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে এবং দোকান খুলে দেয়ার দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দেয়। পরে পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। […]

এই রকম আরও খবর

Chief Editor

Johny Watshon

Lorem ipsum dolor sit amet, consectetur adipiscing elit, sed do eiusmod tempor incididunt ut labore et dolore magna aliqua. Ut enim ad minim veniam, quis nostrud exercitation ullamco laboris nisi ut aliquip ex ea commodo consequat. Duis aute irure dolor in reprehenderit in voluptate velit esse cillum dolore eu fugiat nulla pariatur

Quick Links